কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দিন


প্রকাশিত: ০৪:৪৭ এএম, ২৪ মার্চ ২০১৬

দেশে এখন ইস্যুর কোনো অভাব নেই। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থচুরি, ক্রিকেট নিয়ে উত্তেজনা এর মধ্যে আবারো ঘটলো ভিন্নধর্মাবলম্বীকে হত্যার ঘটনা।  নানা ঘটনা দুর্ঘটনার ভিড়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি আড়ালে পড়ে যাচ্ছে। অথচ এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে না পারলে সমাজে এর ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। আমরা চাই বর্বরোচিত হত্যা বন্ধে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।   

মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে এক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে। এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে আইএস। এ ধরনের দায় স্বীকারের ঘটনা আমরা ইতোপূর্বেও দেখেছি। দুঃখজনক হচ্ছে, কোনো হত্যাকাণ্ডেরই কূলকিনারা হচ্ছে না। গুলশানে দুই বিদেশি হত্যা, রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যা, পঞ্চগড়ে পুরোহিত হত্যা, হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা, লেখক-প্রকাশক ব্লগার হত্যা থেমে নেই। বলা যায়, রুটিন মাফিক দৃর্বৃত্ত চক্র তাদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু সে অনুযায়ী আইনানুগ পদক্ষেপ তেমন জোরালো ও সন্তোষজনক নয়। সরকার জঙ্গিবাদসহ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা বার বার বলে আসছে। কিন্তু এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের পর অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষ করে অপরাধী শনাক্তে সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারছে না। যে কারণে ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় কথায় নয় কাজে প্রমাণ দিতে হবে যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে বর্তমানে বিশ্বের কোনো অঞ্চলই মুক্ত নয়। কখনো ফ্রান্স, কখনো কানাডা, এবং সর্বশেষ বেলজিয়ামে জঙ্গিহামলার ঘটনা ঘটলো। কিন্তু এসব দেশের সাথে সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে আমাদের পার্থক্য হলো তারা ঘটনা ঘটার পর পরই অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু আমরা সেটা পারছি না। অনেক সময় লেগে যাচ্ছে ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপরাধীকে খুঁজে পাওয়াই যাচ্ছে না। এছাড়া তদন্তে ধীরগতি, মামলা পরিচালনায় শৈথিল্য, গাফিলতির বিষয়গুলো তো রয়েছেই।

এভাবে চলতে থাকলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে রাজনৈতিক মোড়কে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সেটির বিচার করা দুরূহ হয়ে ওঠে। অনেকক্ষেত্রে অপরাধীরা পায় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। এটি নিশ্চিতভাবেই আত্মঘাতী একটি প্রবণতা।

ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপতৎপরতাও রয়েছে। রয়েছে সন্ত্রাসীদের অর্থায়নের বিষয়টিও। এসব বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে নির্মোহভাবে কাজ করে এবং করতে পারে সেটি নিশ্চিত করা গেলেই একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসা সম্ভব। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত জরুরি। সামাজিক প্রতিরোধও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।