বিশ্ব জনসংখ্যার বৈচিত্র্যতা

ড. হাসিনুর রহমান খান
ড. হাসিনুর রহমান খান ড. হাসিনুর রহমান খান , অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান, পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ১৭ জুলাই ২০২৩

লক্ষ, হাজার বছর ধরে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার জাতিগত, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় এবং আর্থ-সামাজিক পটভূমি রচিত হয়েছে এবং বৈচিত্র্যতা পেয়েছে। সময়ের সাথে বিশ্ব জনসংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক শতাব্দী আগের সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার একেবারেই কম ছিল| এর কারণ ছিল উচ্চ মৃত্যুর হার, সীমিত স্বাস্থ্যসেবা এবং নিম্নমানের জীবনযাপনের পদ্ধতি। কিন্তু চিকিৎসা, জীবনযাপনের মানের ব্যাপক উন্নতি এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে বিশ্ব জনসংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।

শিল্পের বিপ্লব, উন্নত কৃষি পদ্ধতি এবং শিক্ষার চর্চা ও অধিকার বেড়ে যাওয়ার ফলে গত কয়েক শতাব্দীতে বিশ্ব জনসংখ্যা অবকাঠামোগত ভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০০ শতাব্দীতে| মৃত্যুর হার কমে যায়, স্বাস্থ্যসেবা উন্নত হয় এবং আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী এখনো অনেক এলাকায় জনসংখ্যা অনেক দ্রুত বাড়ছে|

২১০০ শতাব্দীর শুরুতেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৭ বিলিয়নের অধিক হয়েছে। সম্প্রতি তা ৮ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে| এভাবে বাড়তে বাড়তে ২২০০ শতাব্দীর শুরুতেই জনসংখ্যা দাঁড়াতে পারে ১০.৫ বিলিয়নেরও বেশি| তবে, কিছু অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে গেছে কারণ জন্ম হার কমেছে, পরিবার পরিকল্পনা সুবিধা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং নগরায়ণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব জনসংখ্যার আকার পরিবর্তনের ইতিহাস এমন হলেও বৈচিত্র্যময়ী বিশ্ব জনসংখ্যার বর্তমান রূপ দেশ এবং অঞ্চলভিত্তিক কেমন তা অনেকেরই অজানা|

২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি, যার প্রায় ৬৮ শতাংশ গ্রামে এবং অবশিষ্ট ৩২ শতাংশ শহরে বসবাস করে| সবচেয়ে বেশি বসবাস করে ঢাকা বিভাগে, যা মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৭ শতাংশ| অন্যদিকে সবচেয়ে কম মানুষ বসবাস করে বরিশাল বিভাগে, যা প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ| মোট জনসংখ্যায় নারীরা এক শতাংশ বেশি পুরুষের চেয়ে| প্রায় ৯১ শতাংশ মুসলিম, ৯ শতাংশ অন্যান্য ধর্মের মানুষ| প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ মানুষের বয়স ৬০ বছরের উপরে| ১০ বছরের নিচে শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ শতাংশ| ১৫ থেকে ৫৯ বয়সের মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২ শতাংশ| প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ১১৪৪ জন মানুষ করে|

এসভিআরএস ২০২১ অনুযায়ী, বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭, মোট প্রজনন হার (প্রতি ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলা তার জীবদ্দশায় গড়ে কয়টি সন্তান জন্ম দেয়) ২.০৫ যেটা গ্রামে ২.১৮ এবং শহরে ১.৬৬| এক বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে প্রতি এক হাজারে মারা যায় ২২ জন (ছেলে শিশুদের মধ্যে ২৩ জন, মেয়ে শিশুদের মধ্যে ২১ জন)| প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম শিশুর মধ্যে মারা যায় ১৬ জন|

প্রতি এক লাখ জীবিত জন্ম শিশুর মায়ের মধ্যে মারা যান ১৬৮ জন (গ্রামে ১৭৬, শহরে ১৪০ জন)| নতুন জন্ম নেওয়া শিশুর জীবনী প্রত্যাশা গড়ে ৭২.৩ (পুরুষ ৭০.৬, নারী ৭৪.১)| ১০ বছরের ঊর্ধ্বে মানুষদের মধ্যে বর্তমানে বিবাহিত মানুষের হার পুরুষের ক্ষেত্রে ৬০.৮ শতাংশ, নারীর ক্ষেত্রে ৬৪.২ শতাংশ, বিবাহের গড় বয়স ২৫.৩| তথ্যের উৎসের ভিন্নতা, তথ্য সংগ্রহের সময়ের ভিন্নতা থাকায় এই পরিসংখ্যানগুলো বর্তমান সময়কালের জন্য প্রযোজ্য এমনটি ঠিক নয়|

পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী হলো হান চাইনিজ, যা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশ। এর পরে রয়েছে ভারতীয় অঞ্চলের ইন্দো-আর্য জাতিগোষ্ঠী (১৩-১৪ শতাংশ), দ্রাবিড় (৫ শতাংশ) এবং মঙ্গোলিও। জাতিগতভাবে আফ্রিকা মহাদেশ হলো সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় মহাদেশ যেখানে দুই হাজারেরও বেশি স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এদের মধ্যে হাউসা, ইওরুবা, জুলু এবং আমহারা উল্লেখযোগ্য| পৃথিবীতে ৯০টির বেশি দেশে আদিবাসী লোকসংখ্যা রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার ৬.২ শতাংশ|

ইউনেস্কো বিশ্বব্যাপী ১১৮৩টি সাংস্কৃতিক চর্চাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বজুড়ে সাত হাজারেরও বেশি ভাষা রয়েছে, যার মধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি ভাষা বিলুপ্তপ্রায়| বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি লোক মাত্র ২৩টি ভাষায় কথা বলে| প্রধান প্রধান ভাষাগুলো হলো ম্যান্ডারিন চাইনিজ (১২.৩ শতাংশ), স্প্যানিশ (৬ শতাংশ), ইংরেজি (৫.১ শতাংশ), আরবি (৫.১ শতাংশ), হিন্দি (৩.৫ শতাংশ), বাংলা (৩.৩ শতাংশ)। পৃথিবীতে সবচেয়ে খ্রিস্টান ধর্মের লোকের সংখ্যা বেশি (৩১ শতাংশ), এরপরে ইসলাম (২৫ শতাংশ), হিন্দু (১৫.২ শতাংশ), এবং বৌদ্ধ (৫ শতাংশ)|

জনসংখ্যা যত বাড়বে, এর বৈচিত্র্যতাও তত বাড়বে| কিছু অঞ্চল বা দেশের জন্য সীমাবদ্ধ সম্পদের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যেমন কঠিন হয়ে পড়বে, ঠিক তেমনি পর্যাপ্ত সম্পদ থাকলেও কিছু কিছু দেশ এবং অঞ্চলের জন্য জনসংখ্যা হ্রাস রোধ করার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করাও কঠিন হবে| কিন্তু অঞ্চল বা দেশগুলোর মধ্যকার চাহিদাভিত্তিক সম্পদের সরবরাহের ঘাটতি থাকলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধরিত্রির সম্পদের সীমাবদ্ধতা তৈরি হবে, জলবায়ুর ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে|

বিশ্বব্যাংকের মতে, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৯.২ শতাংশ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে (প্রতিদিন $ ১.৯-এর কম খরচে বেঁচে থাকে)। বিশ্ব জনসংখ্যার সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ বিশ্বব্যাপী সম্পদের ৪৪ শতাংশ-এরও বেশি মালিক। বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ হলো অভিবাসী| বৈশ্বিক লিঙ্গ অনুপাত (প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা) প্রায় ১০১.৭, যা সামগ্রিক জনসংখ্যায় পুরুষদের সামান্য বেশি অনুপাত নির্দেশ করে। এই ভারসাম্যহীনতার কারণ বৃহৎ দুটি দেশ চীন এবং ভারত, যেখানে পুরুষের অনুপাত নারীদের তুলনায় বেশি।

বিশ্বব্যাপী মধ্যক বয়স (যে বয়সের ওপরে এবং নিচে ৫০ শতাংশ জনসংখ্যা রয়েছে) প্রায় ৩১.৯ বছর। আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে তরুণ লোকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি (মধ্যক বয়স ২০ বছর), অন্যদিকে ইউরোপে সবচেয়ে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশি (মধ্যক বয়স ৪৩ বছর)। সবচেয়ে বেশি মধ্যক বয়স রয়েছে মোনাকো দেশে (৫৩.১ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম রয়েছে নাইজারে (১৫.৪ শতাংশ)|

২০২০ সালের হিসাবে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮২.৪ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে ২৬.৪ মিলিয়ন শরণার্থী রয়েছে। কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলো ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিবাসীদের স্বাগত জানিয়েছে, যার ফলে সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে আন্তর্জাতিক এবং বহুসাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সবচেয়ে বেশি দেখা মিলে|

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায় দেশগুলো| নাইজারের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক (৩.৮ শতাংশ)। উচ্চ বৃদ্ধির অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা (৩.২ শতাংশ), বুর্কিনা ফাসো (২.৭ শতাংশ), এবং মালাউই (২.৬ শতাংশ)। অন্যদিকে, বেশ কয়েকটি দেশ নিম্ন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার রয়েছে জাপান (-০.৬ শতাংশ), ইতালি (-০.৫ শতাংশ) এবং জার্মানি (০.১ শতাংশ)। সর্বাধিক জনসংখ্যার ঘনত্ব ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে মোনাকো (২৬৩৩৭ প্রতি বর্গকিলোমিটার), সিঙ্গাপুর (৮৩৫৮ প্রতি বর্গকিলোমিটার) এবং হংকং (৬৭৫০ প্রতি বর্গকিলোমিটার)। বিপরীতে, সর্বনিম্ন জনসংখ্যার ঘনত্বের দেশগুলোতে বিশাল ভূমি এলাকা এবং ছোট জনসংখ্যার প্রবণতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মঙ্গোলিয়া (২ প্রতি বর্গকিলোমিটার), নামিবিয়া (৩ প্রতি বর্গকিলোমিটার), অস্ট্রেলিয়া (৩.৩৫ প্রতি বর্গকিলোমিটার) এবং কানাডা (৪ প্রতি বর্গকিলোমিটার)।

ইউনেস্কোর মতে, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি। আন্ডোরা, ইউরোপের একটি ছোট রাজ্য, বিশ্বের সর্বোচ্চ সাক্ষরতার হারগুলোর মধ্যে একটি, যার আনুমানিক সাক্ষরতার হার ১০০ শতাংশ| কিউবায় তা ৯৯ শতাংশ। সবচেয়ে কম শিক্ষিতের হার সাউথ সুদানে (২৭ শতাংশ)|

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলো হলো চীন এবং ভারত, বর্তমানে উভয়েরই প্রায় সমান জনসংখ্যা রয়েছে, যা প্রায় ১৪৩ কোটি । তাদের পরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৩৩.৬ কোটি), ইন্দোনেশিয়া (২৮.২ কোটি), পাকিস্তান (২৩.৩ কোটি), নাইজেরিয়া (২২.১), ব্রাজিল (২১.৭ কোটি), বাংলাদেশ (১৭ কোটি), রাশিয়া (১৪.৬ কোটি) এবং মেক্সিকো (১৩.৩ কোটি)।

বিপরীতে, সর্বনিম্ন জনবহুল দেশ হলো ভ্যাটিকান সিটি (৪৫৩ জন), যা একটি স্বাধীন শহর-রাষ্ট্র, জনসংখ্যা এবং ভূমি উভয় ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ক্ষুদ্রতম স্বাধীন রাষ্ট্র। ক্ষুদ্র জনসংখ্যার অন্য দেশের মধ্যে রয়েছে নাউরু (১১ হাজারের উপরে), টুভালু (প্রায় ১২ হাজার), পালাউ (১৮ হাজারের উপরে), সান মারিনো (প্রায় ৩৪ হাজার) এবং মোনাকো (প্রায় চল্লিশ হাজার)।

বিশ্ব জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ শহরে বাস করে| সবচেয়ে নগরায়িত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপ। সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, উত্তর আমেরিকার জনসংখ্যার প্রায় ৮২ শতাংশ শহরাঞ্চলে বাস করে, তারপরে লাতিন আমেরিকা ৮১ শতাংশ এবং ইউরোপ মহাদেশে ৭৪ শতাংশ।

বিপরীতে, আফ্রিকা এবং এশিয়ার মতো অঞ্চলে নগরায়ণের হার কম। কুয়েতের জনসংখ্যার প্রায় ১০০ শতাংশ শহুরে এলাকায় বসবাস করে এবং এখানে বিশ্বের সর্বোচ্চ নগরায়ণের হার রয়েছে। কাতার, মধ্যপ্রাচ্যের একটি ছোট দেশ, এরও উচ্চ নগরায়ণের হার রয়েছে, এর জনসংখ্যার প্রায় ৯৯ শতাংশ নগর এলাকায় বসবাস করে। অন্যদিকে বরুন্ডি দেশে রয়েছে সবচেয়ে কম নগরায়ন (মাত্র ১৩ শতাংশ জনগণ)|

জাপানে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক জনসংখ্যা রয়েছে, এর জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী। উল্লেখযোগ্য বয়স্ক জনসংখ্যাসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইতালি (২৩ শতাংশ), পর্তুগাল (২২.৬ শতাংশ), গ্রিস (২২.৫ শতাংশ), এবং জার্মানি (২২ শতাংশ)। জীবনী প্রত্যাশা বা গড় আয়ু জাপানে সবচেয়ে বেশি, যা ৮৫ বছর| অন্যদিকে সবচেয়ে কম ৫৪ বছর হলো সিয়েরা লিওন দেশে|

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের ১৬ শতাংশ লোক কোনো না কোনো ডিসএবিলিটি নিয়ে বসবাস করছে| স্প্যানিশ ফ্লু এর পর অল্প সময়ের ব্যবধানে সংক্রামক রোগ হিসেবে কোভিড-১৯ একমাত্র রোগ, যা সবচেয়ে বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে (অফিসিয়ালি ৬৯ কোটি, যা আনঅফিসিয়ালি এর কয়েকগুণ বেশি)| বিশ্বে প্রতিবছর ২০ কোটি লোক ম্যালেরিয়ায়, এক কোটি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়| প্রায় ৪ কোটি লোক এইডস নিয়ে বসবাস করছে| বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে| প্রতিবছর ১.৮ কোটি লোক কার্ডিওভাসকুলার রোগে মারা যায়|

জনসংখ্যা যত বাড়বে, এর বৈচিত্র্যতাও তত বাড়বে| কিছু অঞ্চল বা দেশের জন্য সীমাবদ্ধ সম্পদের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যেমন কঠিন হয়ে পড়বে, ঠিক তেমনি পর্যাপ্ত সম্পদ থাকলেও কিছু কিছু দেশ এবং অঞ্চলের জন্য জনসংখ্যা হ্রাস রোধ করার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করাও কঠিন হবে| কিন্তু অঞ্চল বা দেশগুলোর মধ্যেকার চাহিদাভিত্তিক সম্পদের সরবরাহের ঘাটতি থাকলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধরিত্রির সম্পদের সীমাবদ্ধতা তৈরি হবে, জলবায়ুর ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে| তাই বিশ্বকে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে জনসংখ্যার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য একযোগে কাজ করতে হবে|

অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান
পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এইচআর/ফারুক/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।