রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী ঈদ ভাবনা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের যোগ্য উত্তরসূরি বলেই বাংলা আর বাঙালির, দেশ আর দেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণভাবনা সব সময় ঘিরে থাকে তাঁর চিন্তা ও চেতনায়।
গত বুধবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের যৌথ সভায় গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভিডিও কলে এমন এক নির্দেশনা গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে তার মানবিক মূল্যবোধ ও দেশের সাধারণ জনগণের প্রতি ভালোবাসার টানকে।
একমাস সিয়াম সাধনা শেষে প্রিয়জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মী ছুটিতে নাড়ির টানে চলে যাচ্ছেন বাড়িতে। এসময় নিজ এলাকায় অবস্থানকালে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে জনসংযোগ করার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের উপকারভোগীদের খোঁজখবর নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায় দুঃস্থ গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলকে আরও গতিশীল করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা ও বোরো মৌসুমে কৃষকদের ধান কাটতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করাসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। আগামী নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ঈদুল ফিতর। আর এ কারণেই নেতাকর্মীদের কাছে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। জনগণের মনের ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নির্বাচনকে সামনে রেখে জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
একই সাথে সরকারের অসংখ্য জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি বিশেষ করে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নারী-পুরুষ,শিশু-বৃদ্ধসহ সব পর্যায়ের জনগণকে নানা ধরনের ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এই ভাতাগুলো উপকারভোগীদের কাছে সরাসরি যাচ্ছে কীনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সুবিধাভোগীদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে কীনা সে বিষয়েও সরেজমিনে গিয়ে খোঁজখবর নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি কূটনৈতিক পাড়া ও রাজধানীর বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে ইফতার অনুষ্ঠানের নামে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিল। অথচ তার বিপরীতে ক্ষমতা ধরে রাখা কিংবা আবারও ক্ষমতায় আসার বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে রমজানে সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোকেই গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাঁর নির্দেশনায় এবার রমজানে আওয়ামী লীগ ও তার কোনো সহযোগী সংগঠনের কোনো ইফতার পার্টির আয়োজন ছিল না। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইফতারের ব্যয় সংকোচন করে সেই অর্থ দিয়ে ঈদ সামগ্রী কিনে সাধারণ জনগণের মাঝে উপহার হিসাবে প্রদান করেছে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকন্যার এমন মানবিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের লাখো লাখো নেতাকর্মী ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঈদ সামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন সাধারণ জনগণ ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে।
জনগণের জন্য শেখ হাসিনার সকল ভাবনার সফল বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত দলটির কোটি কোটি নেতাকর্মীরা। এদিকে বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ঈদের কথা চিন্তা করে ৯ কোটি টাকা ঈদ উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টাকা পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে এমপি, মেয়র জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে হতদরিদ্র জনগণের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ঈদের উপহার পৌঁছে গেছে। এমনকি মন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনও ব্যস্ত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ঈদসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কাজে।
প্রসঙ্গক্রমে বলাই যায় কার কথা ভাবেন না শেখ হাসিনা? কৃষকদের ধানকাটা থেকে শুরু করে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের, সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, নারী, শিশু, বৃদ্ধ এক কথায় সকল শ্রেণি পেশার সাধারণ জনগণের সবার খোঁজ-খবর রাখেন তিনি। আর এ কারণেই দেশবাসী মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন জনগণের কথা সব সময় ভাবেন বলেই শেখ হাসিনা আজ জননেত্রী। আর জননেত্রী থেকে বিশ্ব মানবতার জননী। তিনিই বাঙালির আশা, ভালোবাসা আর আস্থার শেষ ঠিকানা।
লেখক: ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য।
এইচআর/জিকেএস