টিকিট নিয়ে নয়ছয় বন্ধ হোক


প্রকাশিত: ০৪:৫৬ এএম, ০৬ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশের ক্রিকেটের আজ যে অভাবনীয় উন্নতি এর পেছনে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে খেলাঅন্তপ্রাণ দর্শকের ভূমিকাকে বড় করে দেখা হয়। কিন্তু সেই দর্শকই যখন টিকিট কিনতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পায় না, উল্টো জুটে পুলিশের লাঠি, টিয়ারশেল এরচেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। আজ সন্ধ্যায় মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত ফাইনালের দ্বৈরথ দেখার জন্য খুব স্বাভাবিকভাবেই ক্রীড়ামোদিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উন্মাদনা। তারা চাইছেন মাঠে গিয়ে সরাসরি টাইগার বাহিনীকে সমর্থন জানাতে। কিন্তু টিকিট যেন সোনার হরিণ। এ অবস্থায় মিরপুর ইউসিবি ব্যাংকের সামনে গতকাল পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায় টিকিট প্রত্যাশীদের মধ্যে। মিরপুর পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।   

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার। টিকিটও করা হয় সমপরিমাণ। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে টিকিট মেলে না সাধারণ মানুষের। টিকিট নিয়ে নয়ছয় যেন প্রতি ম্যাচের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বড় ধরনের ম্যাচ হলে তো কথাই নেই। অধিকাংশ টিকিট চলে যায় সৌজন্য। ফলে সাধারণ দর্শক বঞ্চিত হয়।

অভিযোগ রয়েছে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের  টিকিট বিক্রির দায়িত্ব থাকলেও তাদেরকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে পরিমাণ টিকিট দেয় তা খুবই অপ্রতুল। ফলে টিকিট বিক্রি নিয়ে দেখা দেয় বিড়ম্বনা। টিকিট বেশি চেয়ে বিসিবিকে চিঠি দেয়া হলেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। একদিকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে কালোবাজারিতে ১৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। আবার ৩ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি দামে। অনেকে সৌজন্য টিকিট নিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও গুরুতর অভিযোগ আছে। এ অবস্থার উত্তরণ জরুরি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ৩ হাজারের মতো টিকিট দেয় ইউসিবি ব্যাংকে। এর মধ্যে ৫শ থেকে হাজার খানেক বিতরণ হয়ে যায় ব্যাংকের ভেতরেই। বাকি ২ থেকে আড়াই হাজার টিকিট যায় সাধারণ ক্রেতাদের কাছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। একদিকে হাজার হাজার মানুষ টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবে অন্যদিকে বেশিরভাগ টিকিটই সৌজন্য চলে যাবে- এটা হতে পারে না। যারা প্রকৃত দর্শক, যাদের কারণে আজ ক্রিকেটের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি তাদের এভাবে বঞ্চিত করা মোটেও সমীচীন নয়।

বর্তমান সরকার  ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সাফল্যও এসেছে। তাহলে টিকিট বিক্রি কেন এখনো মান্ধাতা আমলের স্টাইলে হবে। টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হলে অনলাইনে টিকিট বিক্রিই হচ্ছে সমাধান। শুধু অনলাইনে বিক্রি করলেই হবে না পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকিটও রাখতে হবে দর্শকদের জন্য। টিকিট নিয়ে দর্শক ভোগান্তি দূর করতে হবে যে কোনো মূল্যে। এক্ষেত্রে বিসিবিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।