সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে উঠুক শিশুরা


প্রকাশিত: ০৪:৩৩ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বলা হয়ে থাকে আজকের শিশুই আগামী। সেজন্য শিশুরা যাতে একটি সাংস্কৃতিক আবহের মধ্যে বেড়ে উঠতে পারে সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। শিশুর পরিবেশ যদি সুষ্ঠু সুন্দর না হয় তাহলে তারা সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে না। এরফলে যোগ্য নাগরিক হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনেও তারা তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। এ কারণেই শিশুর পরিচর্যার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়টির প্রতিই জোর দিয়েছেন। দেশের প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলের পুরস্কার বিতরণ করতে এসে প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন।  এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে স্টেডিয়াম নির্মাণ হবে সেই স্টেডিয়ামগুলোতে স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েরাই বেশি খেলাধুলা অনুশীলন করতে পারবে। খুদে ফুটবলারদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলার পরিবেশ রাখতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি খুদে ফুটবলারদের খেলায় মুগ্ধ হয়ে বলেছেন ‘এই ছোট ছোট শিশুরা এতো চমৎত্কার নৈপুণ্য দেখিয়েছে, মাঝে মাঝে মনে হয় বড়দেরও হার মানিয়ে দিয়েছে।’  

যে জাতি শিশুদের পরিচর্যা করেছে, তাদের বেড়ে উঠার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করেছে তারাই উন্নত সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের দেশে শিশুদের বেড়ে উঠার স্বাভাবিক পরিবেশ অনেকটাই অনুপস্থিত। বিশেষ করে খেলার জন্য মাঠ নেই, সাঁতারের জন্য পুকুর নেই, পড়ার জন্য পাঠাগার নেই। সবচেয়ে বড় কথা এসব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার মতো সময়ও তাদের নেই। কেবল পাঠ্যবইয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে তারা। পড়া পড়া আর পড়া করে তাদের জীবন থেকে শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শৈশবের নির্মল আনন্দে বঞ্চিত হয়ে যারা বেড়ে উঠছে তাদের স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে না।

আজকের শিশুরাই ভবিষ্যতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নেতৃত্ব দিবে। কাজেই তাদের বিকাশের পথটি হতে হবে সুষ্ঠু সুন্দর। বিশেষ করে শহরকেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থায় শিশুরা একেবারেই খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মাঠ দখল হয়ে উঠছে মার্কেট, বসত বাড়ি। বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অধিকার থেকে। খুপরি ঘরের মধ্যে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাঠ তো দূরের কথা এসব প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো আলোবাতাসই ঢুকে না।

আর গ্রামের স্কুল-কলেজেও খেলাধুলার দিকে নজর কম। মাঠ থাকলেও খেলাধুলা হয় কম। অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই ক্রীড়া শিক্ষক। ওঠে গেছে ক্লাব কালচারও। প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে মানুষ অনেকটা স্বেচ্ছাবন্দী ও আত্মকেন্দ্রিক। শিশুরাও এর বাইরে নয়। এই অচলায়তন ভাঙতে হবে। শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিতে হবে প্রয়োজনীয়ও সব ব্যবস্থা।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।