পুঁজিবাজার হতে পারে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাময় খাত


প্রকাশিত: ০২:১৬ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশের পুঁজিবাজার হতে পারে কর্মসংস্থানের জন্য সম্ভাবনাময় খাত। প্রতিবছর যেসকল শিক্ষার্থী স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে চাকরির চেষ্টা করছে তাদের অনেকেই হয়তো জানেন না, পুঁজিবাজারকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠতে পারে স্বপ্নের আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার। ব্যবসা ও চাকরি- দুই দিকেই সুযোগ রয়েছে শেয়ারবাজারে। স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগ করে হয়ে উঠতে পারেন বড় বিনিয়োগকারী। আবার এই পেশায় নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে চাইলে বিভিন্ন হাউজে রয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। তবে দক্ষতা আর জ্ঞান এই দুই-ই পুঁজিবাজারে কাজ করতে প্রয়োজন।

এছাড়াও বিনিয়োগের পাশাপাশি অন্যান্য হাউজগুলোতে রয়েছে খণ্ডকালীন ও ফুলটাইম চাকরির সম্ভাবনা। স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেই পেতে পারেন চাকরির সুযোগ। তবে চাকরির জন্য অবশ্যই কিছু বিশেষ যোগ্যতা কর্মক্ষেত্রে আরো বেশি পারদর্শী করে তুলবে। বাংলাদেশে বর্তমান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ব্রোকার হাউজের সংখ্যা ২৫০টি। এর মধ্যে চলমান ব্রোকার হাউজ রয়েছে ২৩৫টি। এছাড়াও ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি সিকিউরিটিজ হাউজ রয়েছে প্রায় ৩০টি।

এসব হাউজগুলোতে রয়েছে চাকরির সুযোগ। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সরাসরি চাকরির জন্য বাণিজ্য বিভাগের ছাত্ররা বেশি প্রাধান্য পেলেও অন্যান্য বিভাগের ছাত্রদেরও সুযোগ রয়েছে। তবে সিকিউরিটিজ হাউজের রিসার্চ ডিভিশন এবং পোর্টফোলিও এনালাইসিস  নিয়ে যারা কাজ করছে তাদেরকে পুঁজিবাজারের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে নিজস্ব ট্রেনিং একাডেমি পরিচালনা করা হয়। যেখানে প্রতিবছর ছেলেমেয়েরা পড়াশুনার পাশাপাশি এসব ট্রেনিং গ্রহণ করে নিজেদেরকে তৈরি করে নিতে পারে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের www.dsebd.org ওয়েবসাইটের মাধ্যমে Dse Training Academy Press করলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়া যাবে। যারা পড়াশুনার পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিতে চান তারা সকল ধরনের তথ্য জানতে পারবেন এখান থেকে। এছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে একইভাবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে প্রশিক্ষণের জন্য cse.com.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রশিক্ষণের বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন ।

বর্তমানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মেয়েদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে। বিএসইসির এ ধরনের কার্যক্রমে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে যে কোনো বয়সের জন্য আলাদা আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। যারা চাকরি করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য প্রায়ই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ থেকেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতি সপ্তাহের শনিবার ফ্রি ট্রেনিং দিয়ে থাকে। বর্তমানে বিআইসিএম পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা PGDCM দেড়বছরব্যাপী ডিপ্লোমা কোর্স চালু করেছে। এছাড়াও মাস্টার্স কোর্স চালুর পরিকল্পনা চলছে।

বিআইসিএম বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে। www.Bicm.ac.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পুঁজিবাজারের বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। এ ধরনের প্রশিক্ষণ স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রীর পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও এমবিএ ডিগ্রি যারা সম্পন্ন করেছেন তাদের চাহিদাও অনেক বেশি । ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিবি, ব্যাংক সাবসিডিয়ারি, ব্রোকারেজ হাউজ, লিজিং, মার্চেন্ট ব্যাংক, সিডিবিএল, ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও তালিকাভুক্ত ৫৬২টি কোম্পানির শেয়ার ডিপার্টমেন্টে আলাদা আলাদা কাজের সুযোগ রয়েছে। পুঁজিবাজারে ২২টি খাতের মধ্যে যারা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করেছেন তারা তাদের চাহিদামত পোস্টে আবেদন করতে পারবেন। শুধু দরকার পুঁজিবাজারে কাজ করতে চাওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা।

কর্মসংস্থানের সুযোগ পুঁজিবাজারে অনেক বেশি। কিন্তু অনেকের কাছে বিষয়টি জটিল হওয়ার কারণে পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করতে ভয় পান। আসলে ভয়ের কিছু নেই। চোখ-কান খোলা রাখলেই পুঁজিবাজার সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। শুধু প্রয়োজন নিজের যোগ্যতার সাথে মিলিয়ে কাজের সন্ধান। আর এ জন্য যাদের পুঁজিবাজার সম্পর্ক তেমন কোনো ধারণা নেই তারা বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদেরকে অভিজ্ঞ করতে পারেন।

লেখক : বিজনেস এডিটর, এটিএন বাংলা

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।