সুন্দরবন আমাদের ভালোবাসার ধন


প্রকাশিত: ০৪:০১ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন আমাদের জন্য প্রকৃতির এক অপরূপ দান। ঝড়-ঝাপ্টা থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক অনেক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে সুন্দরবন। এখানকার জীববৈচিত্র্য এই বনকে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। সুন্দরবনে রয়েছে ৫ হাজার প্রজাতির সম্পূরক উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণি, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণ। এই বনকে ঘিরেই বহু মানুষের জীবন-জীবিকা চলছে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পেও সুন্দরবন এক অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সুন্দরবন আজ নানা কারণেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। অথচ এই বনকে রক্ষা করতে না পারলে জলবায়ুর পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে আরও দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে। এজন্য সুন্দরবন রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

আজ বেসরকারিভাবে সুন্দরবন দিবস পালন করা হচ্ছে। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সুন্দরবন দিবস পালন করা হচ্ছে। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’। সত্যি বলতে কি আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই সুন্দরবনকে ভালোবাসার কোনো বিকল্প নেই।

সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো আপত্তি জানিয়ে আসছে। তারা বলছেন, এরফলে সুন্দরবন সমূহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সুন্দরবনের ক্ষতি হয় এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র লাগবে। প্রাকৃতিক সম্পদ কয়লার ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এজন্য সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়াই হবে সমীচীন।

পাশাপাশি তেল-গ্যাস আবিষ্কারের জন্য অনুসন্ধানী উদ্যোগ বন্ধ, আইনানুগ সম্পদ আহরণকারীদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত, বন ও বন্যপ্রাণী আইনকে আরও যুগোপযোগী এবং প্রয়োজনে পৃথক বন আইন, বনের ভেতর ও পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর সংস্কার, বিশেষ করে গোরাই নদীশাসনের ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, সুন্দরবন এলাকায় চিংড়ি পোনা ধরার কারণে মাছসহ জলজ সম্পদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার যে দাবি জানানো হচ্ছে পরিবশেবাদী সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে সেগুলোও আমলে নিতে হবে। সুন্দরবন আমাদের ভালোবাসার ধন। আমরা কোনোভাবেই তা হারাতে চাই না।

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।