শিক্ষাকে পণ্য করার অপচেষ্টা রুখতে হবে
পে-স্কেলের অজুহাত তুলে অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও বেতন আদায় করা হচ্ছিল নামীদামী স্কুলগুলোতে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিভাবকরা প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেছেন। অবশেষে টনক নড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরফলে স্বস্তি ফিরে এসেছে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কোনো অজুহাতেই যেন অতিরিক্ত বেতন ভাতাদি নেওয়া না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার, ভিকারুননিসা, মতিঝিল আইডিয়ালসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ে পে-স্কেলের অজুহাতে প্রায় দ্বিগুণ বেতন ও ভর্তি ফি বাড়ানো হয়। এ নিয়ে বিপাকে পড়েন অভিভাবকেরা। তারা এর প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদ হওয়াটাই সঙ্গত। কারণ যে হারে বেতন বেড়েছে তার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই। পে-স্কেলে বেতন বাড়লে সে দায় শিক্ষার্থীদের ওপর কেন চাপবে এটা বোধগম্য নয়। তাছাড়া যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ফি বাড়িয়েছে সেগুলোর অধিকাংশেরই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় সরকার থেকে। সুতরাং ফি বাড়ানোর কোনো কারণ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে শিক্ষাকে পণ্য করার একটি অসুস্থ মানসিকতা আমাদের সমাজে বিদ্যমান। বিশেষ করে নামী-দামী স্কুলগুলো তাদের ব্রান্ড ইমেজের কারণে এই সুযোগ নিয়ে থাকে। এটা খুবই অন্যায়। এটা চলতে পারে না। একদিকে সরকার কোটি কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করছে অন্যদিকে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ করছে এই বৈপরীত্য চলতে পারে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ফি নেওয়া বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে অনেক স্কুলে অতিরিক্ত ফি আদায় হয়েছে। সেগুলোর কী হবে? অবশ্যই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিতে হবে। তদন্ত করে অতিরিক্ত ফি আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের প্রবণতা বন্ধ হবে না। শিক্ষাকে পণ্য করার যে কোনো অপচেষ্টা রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
এইচআর/এমএস