আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রসঙ্গে

সম্পাদকীয় ডেস্ক
সম্পাদকীয় ডেস্ক সম্পাদকীয় ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০২২

মূলত দেশে একটি বিদেশি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা চালুকরণে সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (আভাই) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ও গৃহীত বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা কমিশন প্রতিবেদন (ছায়া শিক্ষানীতি) বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আভাই প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আভাই প্রতিষ্ঠার পর কয়েক দশক ধরে এটিই ছিল দেশের একমাত্র বিদেশি ভাষা শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দীর্ঘ কয়েক দশক বিরতির পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আভাই প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ চলছে এবং বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আভাই প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠিত আভাইসমূহে একটি এজমালি উপসর্গ দৃশ্যমান হয়েছে। সেটি হলো আভাইতে ইংরেজি ভাষায় স্বল্পমেয়াদি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা। আভাইসমূহে উদ্ভূত এই উপসর্গই বারবার বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বিদেশি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা তার নিজস্ব ধারায় বিকশিত হওয়ার পক্ষে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে।

কিন্তু ইংরেজি কোনো বিদেশি ভাষা নয়। দুই দশক ধরে শিক্ষানীতিতে পরিমার্জন ও দেশের নানাক্ষেত্রে ইংরেজি শিক্ষার বিস্তৃতি ইত্যাদি নানাবিধ কারণে দেশে ইংরেজি এখন দেশি ভাষায় পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও আভাইসমূহে ইংরেজি ভাষা চালু ও তা বিস্তৃতকরণের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। কারণ আভাইসমূহের কর্তৃত্বে যারা রয়েছেন, তারা মূলত ইংরেজি শিক্ষক। তাদের এই প্রয়াসের ফলে আভাইসমূহে বিদেশি ভাষার চেয়ে ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রমের বিস্তৃতিই চোখে পড়ছে। কিন্তু আভাইসমূহে যেসব যুক্তিতে ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে তার কয়েকটি যুক্তিও গ্রহণ করা হলো। নিম্নে আভাইসমূহে ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার পক্ষে যুক্তি ও তা খণ্ডনে প্রতিযুক্তিসমূহ তুলে ধরা হলো:
যুক্তি-১: আভাইসমূহের সংবিধিকে (উদাহরণস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সংবিধি) ইংরেজি ভাষার কথা উল্লেখ রয়েছে, কাজেই আভাইতে ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম চালুকরণ ও তা বিস্তৃতকরণে কোনো বাধা নেই।

প্রতিযুক্তি-১: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইয়ের সংবিধিতে সর্বপ্রথম যেকালে ইংরেজি ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সেকালে ইংরেজি ভাষার প্রায়োগিকতার বিস্তৃতি বর্তমান কালের মতো ছিল না। সে জন্য সেকালে আভাইতে ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার যৌক্তিকতা ছিল। কিন্তু বর্তমানকালে দুই দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইয়ের অনুকরণে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের ভাষা-পরিস্থিতিতে বর্তমানে ইংরেজি ভাষার মর্যাদা ও প্রায়োগিকতার ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, সেজন্য আভাইসমূহে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

যুক্তি-২: স্কুল-কলেজে ইংরেজি শিক্ষালাভের পরও অনেকেই ইংরেজিতে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে পারে না বিধায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে পেশাজীবীদের মধ্যেও ইংরেজি শিক্ষার চাহিদা রয়েছে।
প্রতিযুক্তি-২: স্কুল-কলেজের কারিক্যুলাম, শিক্ষক, শিক্ষা প্রশাসন এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের দোষে এসএসসি ও এইচএসসি সনদপ্রাপ্তদের ইংরেজিতে যথেষ্ট দক্ষতা জন্মায় না। এই দায় ও দায়িত্ব কী আভাইসমূহের? অবশ্যই নয়। বিষয়টি খোলাসা করার জন্য নিম্নে কয়েক প্রস্থ বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো:

ক. আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ এমনকি শাস্ত্রকারদের মধ্যে সার্টিফিকেট কোর্সসমূহ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। বিদেশে স্কুল-কলেজ সমাপনীর পর যে বিষয়ের ওপর সার্টিফিকেট প্রাপ্তি ঘটে, সে বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স করার সুযোগ থাকে না। আমাদের দেশের এসএসসি ও এইচএসসি সনদপ্রাপ্তদের প্রত্যেকেরই ইংরেজিতে সার্টিফিকেট সনদ থাকে। কারণ এসএসসি ও এইচএসসি মানে হলো সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট ও হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট। এই সার্টিফিকেট সনদ দ্বারা বোঝায় এ সনদধারী অন্যান্য কিছু বিষয়ের সাথে ইংরেজিতে সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট ও হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। সে অর্থে যাদের সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট ও হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট সনদ রয়েছে, তাদের প্রত্যেকেরই মূলত ইংরেজি ভাষায় সার্টিফিকেট সনদ রয়েছে। সে বিবেচনায় যাদের এসএসসি ও এইচএসসি সনদ রয়েছে তাদের আভাইতে পরিচালিত জুনিয়র সার্টিফিকেট ও সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্সের ইংরেজি শিক্ষা প্রদানের বিষয়টি বিধি সম্মত নয়।

খ. আভাইতে পরিচালিত জুনিয়র সার্টিফিকেট ও সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্সসমূহ বিদেশি ভাষায় ০ (শূন্য) দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত। কিন্তু ইংরেজিতে এসএসসি ও এইচএসসি সনদ রয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের ১২ বছর ইংরেজি ভাষা শেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে বিধায় তাদের ইংরেজিতে ভাষাগত দক্ষতা ০ (শূন্য) নয়। সে বিবেচনায় ইংরেজিতে জুনিয়র সার্টিফিকেট ও সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্স আভাইয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হওয়া অনুচিত।

গ. বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এসএসসি ও এইচএসসি সনদপ্রাপ্তদের ইংরেজিসহ অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞানে অপরিপূর্ণতা বা অদক্ষতা রয়েছে। এর দায় ও দায়িত্ব কোনোটিই আভাইয়ের ওপর বর্তায় না। এসএসসি ও এইচএসসি সনদপ্রাপ্তদের ইংরেজিতে অদক্ষতার প্রথম দায় স্কুল-কলেজ তথা বিভাগভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের। ইংরেজিতে অদক্ষদের ইংরেজিতে দক্ষ করে তোলার প্রথম দায়িত্বও ওই শিক্ষাবোর্ডের।

কাজেই ইংরেজিতে অদক্ষতা পরিপূরণের এই দায়িত্ব পালনে শিক্ষাবোর্ডগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কলেজে ইংরেজি ভাষা সেন্টার চালু করতে পারে। যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এই দায়িত্ব বর্তায়ও, তাহলেও এই ইংরেজি দক্ষতাসূচক শিক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্ব বর্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগগুলোর ওপর। আভাইসমূহ যেহেতু বিদেশি ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেহেতু এই শিক্ষা কার্যক্রম আভাইতে পরিচালনা অবাঞ্ছনীয়।

তা সত্ত্বেও ইংরেজি শিক্ষকরা তারা তাদের ইংরেজি বিভাগে এই ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম চালু না করে, আভাইগুলোর ওপর কর্তৃত্ব খাটিয়ে কোচিং মানের ইংরেজি শিক্ষা চাপিয়ে দিয়েছে। ফলে বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমগুলো পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইসমূহ বিদেশি ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠার পরিবর্তে, ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম বাহুল্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যেহেতু ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে, আভাইসমূহে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ফলে বিদেশি ভাষা শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, সেজন্য আভাইসমূহ থেকে ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

এ পর্যন্ত উপস্থাপিত আলোচনায় সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে উদ্ভূত এজমালি ইংরেজি উপসর্গের ওপর আলোকপাত করা হলো। এ পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইয়ের নিজস্ব কিছু ইংরেজি উপসর্গের ওপর আলোকপাত করা হবে। দেশে প্রতিষ্ঠিত আভাইসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত আভাই হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আভাইতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে ইংরেজিতে এই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পক্ষে যুক্তি ও খণ্ডনে প্রতিযুক্তিসমূহ তুলে ধরা হলো:

যুক্তি-৩: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইসমূহের সংবিধিতে ইংরেজি ভাষার কথা উল্লেখ রয়েছে। কাজেই আভাইতে ইংরেজিতে স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালুকরণে কোনো বাধা নেই।
প্রতিযুক্তি-৩: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইসমূহের সংবিধিতে ইংরেজি ভাষার কথা উল্লেখ রয়েছে- এ যুক্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে যে ইংরেজি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু তার নাম হলো English for Speakers of Other Languages (ESOL)। ইংরেজি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমের এই নাম একই সময়ে প্রতিষ্ঠিত চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি এবং জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি-এই তিন বিষয়ে স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্নতর।

উল্লেখ্য, এই তিন বিদেশি ভাষায় স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমগুলোর আনুষ্ঠানিক নাম হলো যথাক্রমে BA in Chinese Language and Culture, BA in French Language and Culture & BA in Japanese Language and Culture।

একই সময়ে এই স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলেও, ইংরেজিতে এই শিক্ষা কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে ভিন্ন। কিন্তু English for Speakers of Other Languages (ESOL) হিসেবে আরোপিত নাম কোনো ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রমের নাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ English for Speakers of Other Languages (ESOL) বলতে কোনো স্নাতক শিক্ষাকার্যক্রমে অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে প্রস্তুতি পর্বকে বোঝায়। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য কোনো ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রমের প্রস্তুতি পর্বের শিক্ষাকার্যক্রমগুলোর নাম এরূপ হয়ে থাকে। কাজেই English for Speakers of Other Languages (ESOL) নামক শিক্ষা কার্যক্রমটি ডিগ্রির নাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কেবল ইংরেজি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমের নাম ও তার অর্থ বিবেচনায় নিলেও, আভাইতে এই শিক্ষা কার্যক্রম চালু ও পরিচালনার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না।

যুক্তি-৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইসমূহের সংবিধিতে ইংরেজি ভাষার কথা উল্লেখ রয়েছে। কাজেই আভাইতে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালুকরণে কোনো বাধা নেই।
প্রতিযুক্তি-৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইসমূহের সংবিধিতে ইংরেজি ভাষার কথা উল্লেখ রয়েছে- এ যুক্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে যে ইংরেজি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু তার নাম হলো Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL)। ইংরেজি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমের এই নাম একই সময়ে প্রতিষ্ঠিত চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি এবং জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি-এই তিন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্নতর।

উল্লেখ্য, এই তিন বিদেশি ভাষায় স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমগুলোর আনুষ্ঠানিক নাম হলো যথাক্রমে MA in Chinese Language and Culture, MA in French Language and Culture & MA in Japanese Language and Culture। একই সময়ে এই স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলেও, ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে ভিন্ন। অধিকন্তু Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL) শিক্ষা কার্যক্রমটির নাম থেকেই স্পষ্ট যে, এটি শিক্ষাশাস্ত্রীয় অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একটি বিষয়। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে এরূপ শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষাশাস্ত্রীয় অনুষদের অন্তর্ভুক্ত হয়। সে অর্থে ওই Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL) শীর্ষক শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে পরিচালনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে পরিচালিত নন-ডিগ্রি ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ ইংরেজি ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রম চালুকরণ ও তা পরিচালনার পক্ষে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে, সে সব যুক্তি খণ্ডনে যেসব প্রতিযুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে ইংরেজি নন-ডিগ্রি ও ডিগ্রি-এই উভয় প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম চালুকরণ ও পরিচালনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

বর্তমানে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি এবং জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি-এই তিন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে, যার আনুষ্ঠানিক শিরোনাম হলো যথাক্রমে BA in Chinese Language and Culture, BA in French Language and Culture & BA in Japanese Language and Culture এবং MA in Chinese Language and Culture, MA in French Language and Culture & MA in Japanese Language and Culture। একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষাকার্যক্রম চালু করা হয়েছে। কিন্তু ইংরেজি যে বিদেশি ভাষার চেয়ে ভিন্ন তা তার নামকরণে স্পষ্ট হয়েছে। ইংরেজি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রমের নাম আরোপ করতে গিয়ে, বিদেশি ভাষায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্নতর নাম আরোপ করা হয়েছে।

এগুলো হলো English for Speakers of Other Languages (ESOL) এবং Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL)। লক্ষণীয় যে, ইংরেজি ভাষায় ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রমগুলোর নাম বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমগুলো থেকে ভিন্নতর। এখানে উল্লেখ্য, English for Speakers of Other Languages (ESOL) কোনো ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রমের নাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য কোনো ডিগ্রি শিক্ষা কার্যক্রমের প্রস্তুতি পর্বের শিক্ষা কার্যক্রমের নাম এরূপ হয়ে থাকে। কাজেই English for Speakers of Other Languages (ESOL) নামক শিক্ষা কার্যক্রমটি ডিগ্রির নাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। অন্যদিকে Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL) শিক্ষা কার্যক্রমটির নাম থেকেই স্পষ্ট যে, এটি শিক্ষাশাস্ত্রীয় অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একটি বিষয়। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে এরূপ শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষাশাস্ত্রীয় অনুষদের অন্তর্ভুক্ত হয়। সে অর্থে ওই English for Speakers of Other Languages (ESOL) এবং Teaching English to Speakers of Other Languages (TESOL) শীর্ষক শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভাইতে পরিচালনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

লেখক: অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি। পরিচালক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এইচআর/ফারুক/জিকেএস

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে পরিচালিত নন-ডিগ্রি ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিগ্রি শিক্ষাকার্যক্রম চালুকরণ ও তা পরিচালনার পক্ষে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে, সে সব যুক্তি খণ্ডনে যেসব প্রতিযুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে ইংরেজি নন-ডিগ্রি ও ডিগ্রি-এই উভয় প্রকার শিক্ষাকার্যক্রম চালুকরণ ও পরিচালনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।