আত্মঘাতী জঙ্গিবাদ


প্রকাশিত: ০৪:২২ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫

বাংলা ভাইয়ের চারণ ভূমিতে এবার আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ঘটনা নতুন করে শঙ্কার জন্ম দিল। দিনে দিনে জঙ্গিবাদিরা তাদের উন্মত্ত জিঘাংসার ভয়াল পরিচয় দিচ্ছে। যাদের সর্বশেষ টার্গেট ছিল রাজশাহীর বাগমারায় মচমইল সৈয়দপুর এলাকার আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদ। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ চলাকালে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে হামলাকারী নিজেই নিহত হয়েছেন। হামলাকারীর আনুমানিক বয়স ২৫ বছর। শুক্রবার দুপুরের দিকে জুমার নামাজ চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণীতে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে তাতে বলা হয়েছে- জুমার নামাজ শুরুর পর প্রথম রাকাত আদায় হয়। দ্বিতীয় রাকাতে যাওয়ার সময় বোমা বহনকারী ওই যুবক তার পেটে বেঁধে রাখা বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটান। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় আহত হন শিশুসহ অন্তত ১০ জন। আত্মঘাতী যুবক এলাকায় ছিল আগন্তুক। নামাজ পড়ার আগে হামলাকারীর পরিচয় জানতে চাইলে সে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী এবং তার বাড়ি জেলার মোহনপুরে বলে মুসল্লিদের জানায়।

এটা খুবই দুঃখজনক যে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স দেখালেও তাদের হিংস্র মিশন তারা সফল করছেই। একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। লেখক, ব্লগার, বিদেশি থেকে শুরু করে মসজিদের মুয়াজ্জিন পর্যন্ত কেউ বাদ যাচ্ছে না এদের হামলা থেকে।  এবার তারা টার্গেট করেছে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদকে। সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির একটি অপতৎপরতা থেকে যে এই হামলা সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এই হামলার সবচেয়ে শঙ্কার দিকটি হচ্ছে এতোদিন নানা আত্মঘাতী জঙ্গি স্কোয়াডের কথা শোনা গেলেও এবার একজন আত্মঘাতী হামলাকারী নিহত হল নিজের কোমরে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণে। এটা যে একটি সুপরিকল্পিত হামলা সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। হামলাকারীর বয়স মাত্র ২৫। এই বয়সী একটি তরুণের কী পরিমাণ মগজ ধোলাই হলে আত্মীয়-স্বজন পরিবার পরিজন সর্বোপরি নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আত্মঘাতী হতে পারে সেটি ভাবা যায়! আর এদের মগজ ধোলাইয়ের কাজটিই বা হয় কোথায়? রাজধানীর মিরপুরের একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করেছে বিপুল সংখ্যক গ্রেনেড ও গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম।

জঙ্গিবাদের পেছনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্র কাজ করছে। বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগেও আরেকজন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। বুঝা যাচ্ছে জঙ্গিবাদের ইন্ধন কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাংলার মাটিতে ধর্মীয় উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক জঙ্গি চাষাবাদ হতে পারে না।  এ জন্য সকল পর্যায় থেকেই জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সচেষ্ট হবে হবে। বাগমারায় আত্মঘাতী হামলাকারীর পরিচয়ের সূত্রসন্ধানই অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।