গৃহকর্মীদের স্বীকৃতি


প্রকাশিত: ০৩:৫৯ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

এটা খুবই আশাব্যঞ্জক যে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে একটি নীতিমালা অনুমোদন করেছে সরকার। এর মাধ্যমে বাসার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের কাজ শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। আর নারী কর্মীরা চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন।

সোমবার প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে নীতিমালাটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এই নীতিমালা অনুমোদন পাওয়ায় শ্রম আইন অনুযায়ী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। নীতিমালায় বলা হয়েছে সর্বনিম্ন ১৪ বছরের কাউকে গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে না। গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গৃহকর্মী ও নিয়োগ দাতা চূড়ান্ত করবে এমন বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়। এছাড়া নীতিমালায় গৃহকর্মীদের বিশ্রাম ও বিনোদনের সময় দেওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই গৃহকর্মীদের শ্রমকে স্বীকৃতি দেয়ার জোর দাবি ছিল। নীতিমালা প্রণয়নের ফলে এখন সেটি বাস্তবে রূপ নিল। বর্তমান বাস্তবতায় গৃহকর্মীদের ওপর নির্ভর করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগোষ্ঠী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এদের সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। কিন্তু এদের শ্রমের কোনো স্বীকৃতি ছিল না। ঠিকমত বেতন ভাতা তো দূরের কথা অনেক সময় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় এদের। নারী গৃহকর্মীরা যৌন নিপীড়নেরও শিকার হন। দুঃখজনক হচ্ছে, সমাজের সচেতন অংশ দ্বারাও কখনো কখনো এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মীদের নির্যাতন করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেবে- নীতিমালায় এমন কথাও বলা হয়েছে।   

গৃহকর্মীরা দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করেন। তাদের কর্মপরিধিরও কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। এ অবস্থায় তারা আসলে পরিবারেই অংশ হয়ে যান। কিন্তু তাদের কি সে চোখে দেখা হয়? দেখলে তো আর এত সমস্যা হত না। নীতিমালা প্রণয়নের পর এখন গৃহকর্মীদের ব্যাপারে একটি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে আমরা আশা করছি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মানবিকতার উন্মেষ ঘটিয়ে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় স্বয়ং নিয়োগকর্তাকেই বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।