জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সুভাষ সিংহ রায়
সুভাষ সিংহ রায় সুভাষ সিংহ রায়
প্রকাশিত: ১১:৪৮ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

“আজ থেকে ২২ বছর আগে ১৯৭৪ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে এ মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাধারণ পরিষদের এক মহান অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, জাতির জনকের কন্যা হিসেবে এই অনন্য বিশ্ব ফোরামে বক্তব্য রাখার বিরল সম্মান ও সুযোগ আমাকে আবেগাপ্লুত করে তুলেছে।”

১৯৯৬ সালের ২৪ অক্টোবর, জাতিসংঘের ৫১তম সাধারণ অধিবেশনে প্রথমবারের মতো বক্তৃতা প্রদানকালে এভাবেই শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন যেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব ফিরিয়ে এনেছিলেন কন্যা শেখ হাসিনা। এরপর সেই যাত্রা চলছেই। দীর্ঘ ২২ বছর পর আওয়ামী লীগের হাত ধরে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী সেদিন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখাও জানান বিশ্বের সর্বোচ্চ এ আসরে। উদ্ধৃত করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন-

“চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
‘জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
আপন প্রাঙ্গণ তলে দিবস শর্বরী
বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি’
যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে
উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যা নির্বারিত স্রোতে
দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়
অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়-”

শান্তি, মানবতা ও উন্নয়ন। শেখ হাসিনার এই তিন গুণ চার দশক ধরে বাঙালি জাতির অগ্রসরতায় নানাভাবে ভূমিকা রেখে এসেছে। সেটা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় যেমন হয়েছে, তেমনি হয়েছে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালীনও। তিনি বিশ্বাস করেন, মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে মৌলিক উপাদান হলো এই তিনটি। তাই মানব জাতির উচিত- সমাজের কল্যাণে মানবতার পক্ষে সংগ্রাম অব্যাহত রাখা। জনগণকে সেবা প্রদান এবং তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই যেন সবার মূল লক্ষ্য হয়। তার দর্শন- সম্মিলিত স্বার্থ, সমন্বিত দায়িত্ব ও অংশীদারত্বই সমস্যা-সংকুল এই পৃথিবীর মানব সভ্যতাকে রক্ষা করতে পারে। এই ফর্মুলা তিনি জাতিসংঘে ভাষণের মাধ্যমেও দিয়েছেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা বললেন, “আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্ন দেখি।... বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শান্তি। ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবনার প্রধান প্রবক্তা হিসেবে আমরা শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের করাল থাবায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই আমরা সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বজায় রেখেছি। শীর্ষস্থানীয় শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বৈশ্বিক শান্তিরক্ষায় অবদানের জন্য আজ আমরা গর্ববোধ করি।”

এদিন জরুরিভিত্তিতে ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার ভাষায়, “কোভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।... আমরা ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকা বৈষম্য বাড়তে দেখেছি। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, এ যাবৎ উৎপাদিত টিকার ৮৪ শতাংশ উচ্চ ও উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মানুষের কাছে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশেরও কম টিকা পেয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান, জরুরিভিত্তিতে টিকা বৈষম্য দূর করতে হবে। কারণ, লক্ষ লক্ষ মানুষকে টিকা থেকে দূরে রেখে কখনই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা পুরোপুরি নিরাপদও থাকতে পারব না। বক্তৃতায় ন্যায়সংগত ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

এ-কথা সর্বজনবিদিত যে, জাতিসংঘের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের প্রতি অকুণ্ঠ অঙ্গীকার রেখে ১৯৭৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের সর্বসম্মত অনুমোদনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ কূটনৈতিক তৎপরতায় বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ ছিল বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার উদ্ভব হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু ও তার সরকার অসাধারণ দক্ষতায় তা মোকাবিলা করেছিলেন। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য চীন বাংলাদেশকে প্রথমত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনানুষ্ঠানিকভাবে সেই দেশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সরকার সম্প্রীতিমূলক সম্পর্ক স্থাপন করতে পেরেছিলেন, যার জন্য চীনের ‘ভেটো’ প্রত্যাহার করিয়ে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেছিল। জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, “যে মহান আদর্শ জাতিসংঘের সনদে রক্ষিত আছে, আমাদের লাখ লাখ মানুষ সেই আদর্শের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করিয়াছে। শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সকল মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের উপযোগী একটি বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য বাঙালি জাতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

৪৬ বছর আগের সেই ভাষণে বিশ্বকে মানবিক ঐক্যবোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধের পুনর্জাগরণে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার স্বীকৃতি প্রদান করে মানব সভ্যতাকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার যুক্তিপূর্ণ সমাধান ও জরুরি কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতির পিতা। তার ভাষায়, “শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হব।” আজ বোঝা যায়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আজ অবধি বাংলাদেশের লাখো সদস্য অংশ নিয়েছেন; তার বীজ বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের বক্তৃতার মধ্যেই রোপন করেছিলেন।

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে সার্বিক অর্থে শান্তি ও ন্যায়ের সংগ্রাম হিসেবে অবহিত করেছিলেন। জাতির পিতা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সবার প্রতি বন্ধুত্ব- এ নীতিমালার ওপর ভিত্তি করেই জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। তৃতীয় বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বশান্তি আন্দোলনে অসাধারণ ভূমিকার জন্য ‘জুলিও কুরি’ পদকে ভ‚ষিত হয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই কষ্টলব্ধ জাতীয় স্বাধীনতার সুফল ভোগ করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর মতো তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ক‚টনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন। ৭৪তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেছেন, “সর্বজনীন বিষয়গুলোতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নতুন নতুন অংশীদারিত্ব ও সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিভিন্ন অঞ্চলের সদস্য দেশগুলো এই জাতিসংঘের মঞ্চ থেকেই তা শুরু করতে পারে। তবেই আমরা সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উত্তরণের লক্ষ্যে একটি অর্থবহ সহযোগিতা অর্জন করতে পারব। এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিসংঘই হোক আমাদের ভরসার সর্বোত্তম কেন্দ্রস্থল। আসুন, সেই ভরসাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়ে আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে একযোগে কাজ করি।”

জাতিসংঘে যতবারই প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিয়েছেন, ততবারই বাবার বক্তব্য উদ্ধৃত করতে দেখা গেছে শেখ হাসিনাকে। আপ্লুত হয়েছেন ১৫ আগস্ট ১৯৭১-এ হারিয়ে ফেলা বাবা-মা, ভাই-ভাবি, চাচা-ফুপার নৃশংস হত্যার গল্প শোনাতে গিয়ে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের প্রতিবাদের কথাও বলেছেন অবলীলায়। ১৯৯৯, ৫৪তম অধিবেশনে বলছেন, “স্বৈরাচারী সরকার আমার ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করেছে, আমি বারবার কারাবরণ করেছি এবং বেশ কয়েকবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমার লক্ষ্য থেকে কোনো কিছুই আমাকে বিরত করতে পারেনি।” আর গত ২৪ সেপ্টেম্বর বললেন, “সারাবিশ্বে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এই মহান সংস্থার সামনে বিগত প্রায় ৪৬ বছর আগে আমার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে চাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোরে একদল বিপথগামী ঘাতক আমার পিতা, বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমার স্নেহময়ী মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লে. শেখ জামাল, ১০ বছরের শেখ রাসেল, চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্য ও নিকটাত্মীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে।”

শেখ হাসিনা তার ভাষণে বাংলাদেশের উন্নয়নের কয়েকটি দিক উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল ৫টি অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম। জিডিপি’তে আমরা বিশ্বের ৪১তম। গত এক দশকে আমরা দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। এ সময়ে আমাদের মাথাপিছু আয় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছি।”

ভাষণের শেষ দিকে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট ৬-দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এগুলো হলো-

প্রথমত; কোভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত; এ মহামারি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে অধিকমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাই তিনি ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, নিঃসরণের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং টেকসই অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের আহ্বান জানান।

তৃতীয়ত; মহামারির প্রকোপে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি পূরণের জন্য তিনি ডিজিটাল সরঞ্জামাদি ও সেবা, ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধার সহজলভ্যতা ও শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করার জন্য জাতিসংঘকে অংশীদারিত্ব ও প্রয়োজনীয় সম্পদ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

চতুর্থত; কোভিড-১৯ অতিমারির নজিরবিহীন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের টেকসই উত্তরণ ত্বরান্বিত করার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রণোদনাভিত্তিক উত্তরণ কাঠামো প্রণয়নে আরও সহায়তা আশা করেন।

পঞ্চমত; তিনি মহামারিকাল অভিবাসীগ্রহণকারী দেশগুলোকে অভিবাসীদের সঙ্গে ন্যায়সংগত আচরণ করার এবং তাদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং কল্যাণকে নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানান।

ষষ্ঠত; তিনি আবার রোহিঙ্গা সংকটের দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভ‚মিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই কেবল এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

আমাদের তথা সব উন্নয়নশীল দেশের সমস্যা হলো, আমরা কীভাবে এ স্বপ্ন বাস্তবায়িত করব। এক্ষেত্রে আমাদের সদিচ্ছার অভাব নেই, আমরা এর পরিধি ও বিশালতা সম্পর্কেও সম্পূর্ণ সচেতন। তবে যে বিশ্বাস, স্থিরতা ও দৃঢ়তা নিয়ে এক্ষেত্রে আমাদের এগিয়ে যাওয়া, ঈপ্সিত সেভাবে এখনও এগোতে পারিনি। আমরা সব সময়ই শুরু করি; কিন্তু কখনোই তা অব্যাহত রাখি না, কখনোই সম্মুখে এগোই না, কখনোই পূর্ণ করি না এবং কখনোই সমাপ্তি টানি না। প্রায়শ আমরা সঠিক পথে প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট থাকি, কদাচিৎ দ্বিতীয় পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হই এবং প্রায় সবক্ষেত্রেই তৃতীয় পদক্ষেপ কখনোই গ্রহণ করি না। শুরুর দিকের কয়েকটি পদক্ষেপ, যা প্রকৃতপক্ষে শুরু নয় এবং যা কোনো গন্তব্যেও নিয়ে যায় না, তা দিয়ে অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। যে শুরুটা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন, বর্তমানে তা অক্ষরে অক্ষরে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানেই স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল বাংলাদেশ।

নিউইয়র্ক
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

এইচআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।