শীতের হাওয়ায় লাগল কাঁপন

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৫:২৭ এএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

ঋতু পরিক্রমায় প্রকৃতিতে এখন শীতকাল। কবির ভাষায়- ‘শীতের হাওয়ায় লাগল কাঁপন আমলকীর ওই ডালে ডালে।` ষড়ঋতুর এই দেশে একেকটি ঋতু একেক রূপ রঙ নিজে হাজির হয়। অভ্যস্ত মানুষজন প্রকৃতির এই পালাবদলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন খুব সহজেই। শীত এলে অনিবার্যভাবেই প্রকৃতিতে ঘটে কিছু পরিবর্তন। হেমন্তের ফসল কাটা শেষ হয়। নবান্নের সঙ্গে পিঠাপায়েসের আয়োজন চলে গ্রামাঞ্চলে। এই নগরেও এখন মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। শীত একদিকে যেমন উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। অন্যদিকে তীব্র শীত জীবনযাত্রা বিপন্ন করে তোলে মানুষজনের। বিশেষ করে দরিদ্ররা  শীতের কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। এই সময় শীতজনিত নানা রোগব্যাধিও দেখা দেয়। এজন্য শীতের জন্য আলাদা একটি প্রস্তুতি রাখা প্রয়োজন।

শীত মৌসুমে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত নানা রকম রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।  ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় শিশুরা। জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে- শিশু হাসপাতালের আউটডোরে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ রোগী আসছে। তাদের মধ্যে ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশি, ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যাই বেশি। মূলত শীত পড়তে শুরু করায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

শীতের শুরুতেই হাল্কা বৃষ্টি হয়ে গেল। এ কারণে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে বেশি। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারদিক। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসায় ফেরিচলাচলেও সমস্যা হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। এ জন্য সতর্কবার্তা জারি করা উচিত। আবহাওয়া অধিদফতর  দীর্ঘমেয়াদি এক পূর্বাভাসে বলছে, চলতি মাসে রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। এ মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১-২টি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১-২টি মাঝারি বা তীব্র এবং অন্যত্র ১-২টি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঋতুর পরিবর্তন হবে। এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য প্রতিটি ঋতুই যেন উপভোগ করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। শীতজনিত রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষার করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।  শুধু সরকার নয় সমাজের বিত্তবানরা এ জন্য এগিয়ে আসতে পারেন।  কবি সুকান্ত যেমন করে সূর্যের কাছে উত্তাপ চেয়েছিলেন ‘রাস্তার ধারের উলঙ্গ ছেলেটির জন্য’ তেমনিভাবে আমাদের মধ্যে এই শীতে মানবিকতার উন্মেষ ঘটাতে হবে। আর তখনই শীত কষ্টের ঋতু না হয়ে উৎসবের ঋতু হয়ে উঠবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।