সম্ভাবনার বাংলাদেশ

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:১৭ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর চলছে। গতকালই সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানালো শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। আগামীকাল মহান বিজয় দিবস। ঠিক এই সময়ে অর্থনীতির জন্য সুখবর দিলেন বাংলাদেশ সফররত বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. কৌশিক বসু। এ সংক্রান্ত বৈঠক-সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি শোনালেন অনেক আশার বাণী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসাও করলেন গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসে।

সোমবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে কৌশিক বসু বলেন, বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  এর আগেও তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন চীনের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেন।  প্রথিতযশা এই অর্থনীতিবিদের মতে, চীনের উন্নতির নিয়ামক হচ্ছে উৎপাদনশীল খাত; বাংলাদেশও সস্তা শ্রম কাজে লাগিয়ে দ্রুত উন্নতি করতে পারে। পাশাপাশি তিনি সতর্কামূলক পরামর্শ দিয়ে বলেছেন- শুধু ভালো নীতি অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারে না; এর জন্য নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি তদারকি ব্যবস্থারও উন্নয়ন করা জরুরি। একই সঙ্গে সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটালেই অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের  প্রধান অর্থনীতিবিদের এই আশাবাদ অবশ্যই ইতিবাচক। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও যে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এর স্বীকৃতি আসছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা পর্যায় থেকেই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মত বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। অথচ এই পদ্মাসেতু প্রকল্পেই অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। সেই বিশ্ব ব্যাংকই এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রশংসা করছে। এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক ঘটনা। গার্মেন্টস সেক্টরেও অমিত সম্ভাবনা আমাদের। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি করেও বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। সঠিক অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করা সম্ভব হলে বিনিয়োগ খাতেও অগ্রগতি সম্ভব। বিদেশি বিনেযোগকারীদের তালিকায় বাংলাদেশ অগ্রগণ্য।

পাশাপাশি কিছু নেতিবাচক বিষয়ও আমাদের অর্থনীতির জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা দেশেরে অর্থনীতির জন্য এক বিরাট অশনি সংকেত। ব্যাংকিং সেক্টরসহ সব ধরনের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির মত ঘটনা আর যেন ঘটতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ-বিরোধও উন্নয়ন অগ্রগতির অন্যতম বাধা। এসব উজিয়ে উন্নয়নের সিঁড়িতে পা রাখতে হবে।  নির্বাচন ব্যবস্থায়ও নিয়ে আসতে হবে আমূল পরিবর্তন। রাজনৈতিক সংঘাতের মূলে রয়েছে নির্বাচন সংক্রান্ত জটিলতা। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। স্থিতিশীলতা ছাড়া উন্নয়ন অগ্রগতি যেমন সম্ভব নয় তেমনি তা ধরে রাখাও অসম্ভব। যেমনটি ড. কৌশিক বসুও বলেছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগ বান্ধব একটি পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।