তাজরীন ফ্যাশনসের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান


প্রকাশিত: ০৪:০৬ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

এক অমিত সম্ভাবনা হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাকখাত। আমাদের অর্থনীতির গতিপ্রবাহ অনেকটাই ঠিক থাকে পোশাকখাত থেকে আসা রেমিটেন্সে। পোশাককর্মীরা এক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখে চলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে একালের জীবনযোদ্ধা তারা। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে পোশাকখাতের উন্নতি হলেও এ খাতের শ্রমিকদের জীবন-মানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বিশেষ করে রানা প্লাজা, তাজরীন ফ্যাশনসের মত কারখানায় মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির পরও এখানকার শ্রমিকদের সেই তুলনায় ক্ষতিপূরণ  দেয়া হয়নি। ফলে অনেকেই মানবেতর জীবন-যাপন করছেন, সরকার, ক্রেতা এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ নানা রকম আশ্বাস দিলেও তার সামান্যই পেয়েছে তারা। অথচ এটি তাদের ন্যায্য পাওনা। নিয়ম অনুযায়ী একজন ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক তার সারাজীবনের আয়ের (৪৮ লাখ টাকা) সমান ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা।

তাজরীন ফ্যাশনসের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের তিনবছর পূর্তি হল গতকাল মঙ্গলবার। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে নয়তলা ওই কারখানায় আগুন লাগে। সরকারি হিসাবে এতে ১১২ জন শ্রমিক মর্মান্তিকভাবে নিহত হন। আহত হন কয়েক শ শ্রমিক। তাদের মধ্যে অনেক শ্রমিক কর্ম-অক্ষম হয়েছেন।  দীর্ঘ চিকিৎসায়ও সুস্থ না হওয়ায় অনেকে ঠিকমত হাঁটতে-বসতেও পারেন না। শারীরিক-মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। আয়-রোজগার হারিয়ে বেকার জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তাজরীনের বিদেশি নামকরা অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু এক/দুইটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেনি। অথচ গার্মেন্টস  সেক্টর নিয়ে তারা কতই তা উপদেশ দেন, নসিহত করেন। কিন্তু পোশাক শ্রমিকদের ঘামে-শ্রমে এসব নামী-দামী ব্র্যান্ডের বিপুল অর্থ আয় হলেও তার কানাকড়িও এরা খরচ করেননি দুর্ঘটনায় পতিত শ্রমিকদের জন্য। এটা খুবই দুঃখজনক। নীতিনৈতিকতা তো বটেই মানসিক দৈন্যেরও প্রকাশ এটি। এ ব্যাপারে বিদেশি ক্রেতাদের অবশ্যই এগিয়ে আসা উচিত। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও যে সাহায্য দেয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। মালিক পক্ষও এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো ভূমিকা নেয়নি। তিন বছর ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে অনেকের সংসারের চাকা ঘুরছে না। কে রাখে এসবের হতভাগ্যদের খবর?

পোশাক খাত শুধু আমাদের রপ্তানি আয় বাড়াতেই ভূমিকা রাখছে না, ‘মেড ইন বাংলাদেশ` ব্র্যান্ডিং- এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করছে বহির্বিশ্বে। তাই শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করে পোশাক খাতের একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।