সিজার হত্যার বিচার


প্রকাশিত: ০৪:৪১ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারকে হত্যার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার তাদের সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত করে দাবি করা হয় এরাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে নম্বরবিহীন সেই মোটরসাইকেলও প্রদর্শন করা হয়। পুলিশের ভাষ্যমতে, গ্রেফতারকৃত মো. রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল ওরফে বিদ্যুত রাসেল, মিনহাজুল আরিফিন রাসেল ওরফে ভাগিনা রাসেল ওরফে কালা রাসেল, তামজিদ আহমেদ রুবেল ওরফে মোবাইল ওরফে শুটার রুবেল এবং শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরীফ এই হত্যার সাথে জড়িত।ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে অভিযুক্তরা হত্যাকাণ্ড চালায়। তবে এর পেছনে কথিত ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশ রয়েছে।

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পর দেশে-বিদেশে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। দাবি উঠতে থাকে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার। ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এটা আশার দিক। তাদেরকে রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। এখন জনপ্রত্যাশা হচ্ছে হত্যার মূল ক্রীড়নকরা বেরিয়ে আসুক। সেটা ‘বড় ভাই’ কিংবা আর যেই-ই হোক না কেন।

সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া  গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান-২ এর কূটনীতিক পাড়ায়  খুন হওয়া ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যার বিশদ বিবরণ তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে। পুলিশের ভাষ্যমতে তাবেলাকেই হত্যা করা হবে এমন টার্গেট ছিল না। টার্গেট ছিল যেকেনো সাদা চামড়ার বিদেশি নাগরিক হত্যা। এই হত্যার উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। আইএসের দায় স্বীকারও মূল হত্যাকারীদের অপরাধকে আড়াল করার অপপ্রয়াস বলেও দাবি করছে পুলিশ।

দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে আমাদের দেশে আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়ার নজির খুব একটা নেই। রাজনৈতিক ডামাডোলে আসল অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। জজ মিয়াদের সামনে নিয়ে আসা হয়। এ কারণেই মানুষজন সন্দিহান যে শেষ পর্যন্ত দুই বিদেশি হত্যার বিচার আদৌ সম্ভব হবে কিনা। নাকি রাজনৈতিক লাভালাভের বিষয়টি সামনে চলে আসবে। কিন্তু আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এ ধরনের ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত।  রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতিসহ দুই বিদেশি হত্যার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। সামনে এসেছে জঙ্গিবাদের বিষয়টিও। সরকারকে অবশ্যই সব বিষয় পরিষ্কার করতে হবে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের নির্মোহ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সরকার সে পথেই হাঁটুক-জনপ্রত্যাশা এমনই।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।