কপিরাইট কার্যালয় থাকুক সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েই


প্রকাশিত: ০২:১৬ এএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৫

বাংলাদেশের শিল্পাঙ্গনের মানুষজন যখন তাদের সৃষ্টি কর্মের মেধাস্বত্ব নিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত তখন কপিরাইট অফিস নিয়েই টানাটানি শুরু হয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে শিল্পীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে সংস্থা কাজ করবে সেটিই উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে একটি অশুভ মহল। কপিরাইট কার্যালয়কে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক (ডিপিডিটি)-এর সঙ্গে একীভূত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন,  এর বাস্তবায়ন ঘটলে শিল্প-সংস্কৃতিতে উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত হবে। মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন শিল্পীরা।

এ নিয়ে  বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরাম। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশান (বামবা), মিউজিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইবি) এবং লিরিসিস্টস, কম্পোজারস অ্যান্ড পারফর্মার্স সোসাইটি (বিএলসিপিএস)।

বাংলাদেশে মেধাস্বত্ব আইন ঠিকভাবে কার্যকর না থাকায় শিল্পী-সাহিত্যিকরা নানা ভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র শিল্পে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অনেক সৃষ্টিশীল ও মেধাবী শিল্পীরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জীবন সায়াহ্নে এসে অনেকেই আর্থিক সঙ্কটে পড়ছেন। অথচ মেধাস্বত্ব আইন কার্যকর থাকলে এদের ন্যায্য পাওনা থেকেই তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতেন। যেখানে মেধাস্বত্ব কার্যকর করার জন্য একসঙ্গে কাজ করার কথা সেখানে উল্টো কপিরাইট অফিসকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের অশুভ প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে যথার্থই বলেছেন সঙ্গীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোর-  “যারা লোহা-লক্কড়ের বাণিজ্য করে, তারা কি আর শিল্প-সংস্কৃতি বুঝবে? আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়- এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।”

মেধাস্বত্ব কার্যকর না থাকায় মিউজিক ইন্ড্রাস্ট্রি ধ্বংসের মুখে। একটা এ্যালবাম বের হলেই সঙ্গে সঙ্গেই পাইরেসি হয়ে যাচ্ছে। ফিল্মের ক্ষেত্রেও একই কথা। এ অবস্থায় মেধাস্বত্ব আইনকে কিভাবে কার্যকর করে ফল পাওয়া যায় সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রশি টানাটানি হলে অশুভ চক্রই তাতে লাভবান হবে। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে মেধাস্বত্ব বা কপিরাইট আইন করা হয়েছে সে উদ্দেশ্যেই সকলের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এক্ষেত্রে কাম্য নয়। শিল্পীরা  কপিরাইট কার্যালয়কে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে রাখার যে দাবি জানিয়েছেন  সেটি অত্যন্ত যৌক্তিক। যার যে কাজ সেটা তাকেই মানায়। আর্ট-কালচার বা শিল্প-সংস্কৃতি আর  ইন্ড্রাস্ট্রি বা শিল্পকারখানাকে গুলিয়ে ফেলার কোনো অবকাশ নেই।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।