দ্রুত পশুর বর্জ্য অপসারণ করুন
ঈদুল আজহায় কোরবানির পর প্রতি বছরই পশুর বর্জ্য এক মহা সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। এ বছর এ সমস্যা উত্তরণে সিটি কর্পোরেশন থেকে নানা উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। ৩০ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। এখন সময়মতো বর্জ্য অপসারণই আসল কথা।
কোরবানির পশুর বর্জ্য পরিবেশ দূষণ ছাড়াও নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করে। সময়মত বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব না হলে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও বেগ পেতে হয় বর্জ্য অপসারণে। এ কারণে সুনির্দিষ্ট জায়গায় পশু কোরবানি করতে পারলে বর্জ্য অপসারণ সহজ হয়। এ বছর ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ-এই দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেই সুনির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য পাঁচ শতাধিক স্থান নির্বাচন করে দেওয়া হয়।
প্রতিবছরই রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে কোরবানির পশু জবাই করার পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বর্জ্য। লাখ লাখ পশু কোরবানি দেওয়ার পর বর্জ্য পরিষ্কার করতে দুই সিটি কর্পোরেশনই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। বাতিল করা হয় সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটিও। কিন্তু এর পরও বর্জ্য পরিষ্কার হয় না ঠিকমতো। ফলে কোরবানির পর দীর্ঘ সময় দুর্গন্ধ থেকেই যায়।
আমরা ইতিপূর্বেও এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে রাজধানীর নানাবিধ সমস্যার কথা বলেছি। বর্জ্য অপসারণের বিষয়টি নিয়েও আমরা সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সেখানে বলা হয়েছে- ‘নানাবিধ কারণে রাজধানী ঢাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপেও বসবাস অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকা মহানগরী শীর্ষে। কাজেই এই শহর যাতে বসবাসের উপযোগী থাকে সেটির দায়িত্ব কেবল সরকার, সিটি কর্পোরেশন বা অন্য কোনো সংস্থার নয়। সাধারণ নাগরিকদের দায়িত্বও এখানে কম নয়। বাসা-বাড়ির সামনে, অলিতে গলিতে পশু কোরবানি না করে সুনির্দিষ্ট জায়গায় করলে বর্জ্য অপসারণ যেমন সহজ হবে তেমনি নগরবাসী বর্জ্যের দূষণ ও দুর্গন্ধ থেকেও মুক্তি পাবে।’ উন্নত বিশ্বে পশুর সব ধরনের উচ্ছিষ্ট প্রক্রিয়াজাত করে কাজে লাগানো হয়। আমরা ইচ্ছ করলেই তা করতে পারি।
কোরবানির পর এখন পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণ করাটাই জরুরি। এ নিয়ে কোনো সময়ক্ষেপণ করা হলে তা পরিবেশের জন্য যেমন হুমকি হবে তেমনি জনসাধারণের দুর্ভোগেরও কোনো অন্ত থাকবে না।
এইচআর/পিআর