মুনাফালোভী মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৩:৫০ এএম, ০২ নভেম্বর ২০১৭

দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে চলে যাওয়াটা কোনো কাজের কথা নয়। বাস্তবতা হচ্ছে বাজারে দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া লাফিয়েই চলেছে। লাগাম টেনে ধরার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাজারে সবজির দাম ঊর্ধ্বগামী। কাঁচামরিচের দাম আকাশচুম্বী। এরইমধ্যে আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। কিছুদিন আগেও যে পেঁয়াজ ছিল ৫৫ টাকা কেজি তা এক লাফেই বেড়ে এখন ৮০/৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির জন্য নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। তাই অতিরিক্ত দাম বাড়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এমনিতেই দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে, তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়ায় যেন বাজ পড়ছে ভোক্তাদের মাথায়। প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো দেখার কি কেউ নেই?

কথায় আছে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। ব্যবসায়ীদের আমরা দুর্জন বলতে চাই না। আর সব ব্যবসায়ীর দায়-দায়িত্ব এবং নীতিনৈতিকতাও একই পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। তবে একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর লাভ ও লোভের কারণেই যে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৭ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। চাহিদা মেটানোর জন্য ৫ থেকে ৬ লাখ টন আমদানি করা হয়। যা আসে ভারত থেকে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, এক মাসে বাজারে পেঁয়াজের দাম ৭১ শতাংশ বেড়েছে। মাত্র এক বছর আগেও এক কেজি পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ৩৫ টাকা ছিল। বলা হচ্ছে অতিবৃষ্টির কারণে এবার দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে আমদানির পরিমাণ যে বাড়বে সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা। এ কথা ঠিক ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই অতিরিক্ত দাম?

মুনাফালোভী এই মানসিকতা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সরকারের হাতে খুব একটা নেই। তারপরও টিসিবিকে কার্যকর করে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রেখে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়। সরকার বলছে, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এরপরও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হল কী করে। এক্ষেত্রে কী কারো কোনো দায়-দায়িত্ব নেই?

যে কোনো উসিলায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইন-কানুন নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই এখানে। ভোক্তাদের পকেট কাটা হবে আর সরকার শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং সিন্ডিকেটধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। অবিলম্বে পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে যার যা করণীয় রয়েছে সেটি করতে হবে। এজন্য সরকার-ব্যবসায়ী সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। ত্যাগ করতে হবে মুনাফালোভী মানসিকতা।

এইচআর/পিআর

এ কথা ঠিক ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই অতিরিক্ত দাম?

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।