ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন গোপন বিষয় নয়
ময়নাতদন্ত হল কিছু প্রশ্নের উত্তর ঘাটতে শবদেহের পরীক্ষা, যা সাধারণত পুলিশের অনুরোধে চালান এবং সুরৎহাল প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে করা হয়ে থাকে। পরীক্ষা সমাপ্তিতে প্রতিটি ময়নাতদন্তের দুটি কার্বন কপিসহ সর্বমোট তিনটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।
জেলা সদরের ক্ষেত্রে একটি প্রতিবেদন থানায়, একটি প্রতিবেদন সিভিল সার্জনের মাধ্যমে এস পি বরাবর প্রেরণ করা হয় যা প্রতিস্বাক্ষরিত হয়ে আদালতে জমা পড়ে। মেডিকেল কলেজগুলোতে কোন রকম প্রতিস্বাক্ষর ছাড়া এস পি এবং থানায় পাঠানো হয়। উভয় ক্ষেত্রে একটি কার্বন কপি মূল বইয়ের সাথে অফিস কপি হিসেবে থেকে যায়।
এই প্রতিবেদন পরবর্তীতে কোর্টে ঘটনা সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণের প্রামাণিক দলিল হিসেবে ব্যবহার হয়। মনে রাখা প্রয়োজন যে একটি বিচারকাজে বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া এমন আরও আরও প্রামাণিক দলিল বিবেচনায় এনে বিচারক তার সুচিন্তিত রায় ঘোষণা করেন।
এখন প্রশ্ন হল, এটি কি গোপনীয় নথি? উত্তর হল, এটি কোন নথি নয়। এটি একটি প্রামাণিক দলিল। প্রামাণিক দলিল কখনও গোপন থাকতে পারে না। বিচার শুরুর আগেই প্রতিপক্ষ এই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার অধিকার রাখেন এবং অভিযোগ খণ্ডাতে ব্যবস্থা নেন। বিদেশে আমরা ময়না তদন্ত করে প্রতিবেদন অফিসে জমা দেই। সেই প্রতিবেদনের প্রতিলিপি যে কেউ নির্দিষ্ট ফিস জমা দিয়ে পেতে পারেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কোর্ট ইচ্ছা করলে কোন প্রতিবেদন জনসম্মুখে না প্রকাশের আদেশ দিতে পারেন।
পরিশেষে বলব, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কোন গোপন প্রতিবেদন নয়। এটিকে যারা গোপন রাখতে চান তাদের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ।
লেখক : অধ্যাপক ও সিনিয়র ফরেনসিক কনসালটেন্ট ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি এমএআরএ, মালয়েশিয়া।
এইচআর/পিআর