শেখ হাসিনা মানেই কাজ, অবিরাম কাজ
শেখ হাসিনাকে সম্পূর্ণ জানা এখনো ফুরোয়নি আমাদের। কিন্তু যেটুকু জানি, সেটুকুই বিস্ময়কর। নিজস্ব সৃষ্টির বাইরে তাঁর আমন্ত্রণ দশদিকে। কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছিলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের সিঁড়িতে যখনই পা রেখেছিলেন তখনই বুঝে নিয়েছিলেন- ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু পথ ’ । তাঁর পথে পথে পাথর ছড়ানো ছিল। শুধু পাথর নয়; এক পর্যায়ে দেখা গেলো ‘পথে পথে গ্রেনেড ছড়ানো ’ । শেখ হাসিনা জেনে গিয়েছিলেন, চলার পথে অনেক বাঁক থাকে, চোরা স্রোত থাকে, অনির্দিষ্ট আর অলক্ষ অনেক উপাদানে জড়িয়ে থাকে ইতিহাসের অনির্ধারিত গতিপথে। দেশে প্রত্যাবর্তনের মাত্র পাঁচ দিন আগে ১১ মে (১৯৮১) তারিখে বিশ্বখ্যাত ‘নিউজউইক’পত্রিকা বক্স আইটেম হিসেবে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে।
শেখ হাসিনা যখন দেশে ফেরেন তখন সময়টা খুব খারাপ ছিল। বলতে গেলে যে কোনো সময় একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত, খুনিরা যেন সব জায়গায় ওঁতপেতে ছিল। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এত ঝুঁকি জেনেও দেশে ফিরে যাচ্ছেন কেন?শেখ হাসিনা স্পষ্ট করে বলেছিলেন, তিনি নিহত হওয়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত নন; এমনকি যে সরকারের মোকাবিলা করবেন তার শক্তিকে তিনি বাধা বলে গণ্য করবেন না। জীবনে ঝুঁকি নিতেই হয়। মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ত্ব থেকে বঞ্চিত হয়। অনেকে বলেন শেখ হাসিনা ভীষণ জেদী। অবশ্য জেদী, জেদ ছিল বাংলাদেশের মাথায় স্বাবলম্বিতার মুকুট পড়িয়ে দেওয়ার প্রাণান্তকর প্রয়াস। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন যথার্থই বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার দুটি গুণকে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিই। একটি তাঁর সাহস, প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার দৃঢ় মনোবল ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃঢ়তা। অন্যটি গণমানুষের প্রতি ভালোবাসা। গ্রামেগঞ্জে ঘুরে টের পেয়েছি হতদরিদ্র মানুষরা তাঁকে ভালোবাসে- তাঁর কাছেই তাদের প্রত্যাশা। মনে করে, তাদের যা কিছু চাওয়ার জায়গা এক জায়গাতেই। তিনি বোঝেন জনগণের সুখ-দুঃখ, বোঝে তাদের নাড়ির টান।’ তাঁর হাজার রকমের কর্মের প্রয়াস জাতি হিসেবে আমাদের মাথা উঁচু করে দেয়। সারা পৃথিবীর মানুষ ‘একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী মানেই শেখ হাসিনাকেই জানেন।
ঈদুল আজহা, ঈদুল ফিতর, নববর্ষ বাঙালির দিনগুলোতে যে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠান তাতে থাকে মানবিকতার অফুরান চিহ্ন। অবধারিত ভাবে অটিস্টিক শিশুদের আঁকা ছবি। সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে শেখ হাসিনা অতুলনীয় ভূমিকা বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের উঁচু করে দিয়েছে। তাঁর কটাক্ষ সেই সব অন্তঃসারশুন্য সম্মেলনের দিকে সেখানে পৃথিবীর আর সব বৃহৎ এবং জলন্ত সমস্যার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে দিকে আলোচনা চলে এভাবে ‘অনেক কথা যাও গো বলে কোন কথা না বলে ’। কেননা শেখ হাসিনা জানেন ও বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ কঠিন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্টা করতে পেরেছে। তাই তাদের গর্বিত হওয়ার কারণও আছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সর্বশেষ বই এর নাম ‘ফার্স্ট বয়দের দেশে’ যা চলতি জুলাই মাসে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে ‘ দারিদ্র , যুদ্ধ ও শান্তি ’ । শেখ হাসিনার লড়াই হচ্ছে দারিদ্র হঠাও, যুদ্ধ বন্ধ করে সেখানে শান্তির পতাকা উড়ান। এ কথা ফের মনে করা দরকার, কারণ এই অবশ্যম্ভাবী বিষয়গুলো বিশ্বনেতাদের অনেকে যথেষ্ট মূল্য দেন না । শেখ হাসিনা জানেন ও বোঝেন, কোথায় মূল সমস্যা। চলতি মাসের ২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার বক্তব্য ছিল সবার কাছে দৃষ্টান্ত স্বরুপ। তিনি কি আশ্চর্য আহ্বান জানিয়েছেন।
‘সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংস জঙ্গিবাদ শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। একজন সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম, বর্ণ বা গোত্র নেই। আমি নিজে বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছি। সে হিসেবে আমি সন্ত্রাসের শিকার মানুষের প্রতি আমার সহানুভূতি প্রকাশ করছি। আমি মনে করি তাঁদের সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। আমরা ধর্মের নামে যে-কোনো সহিংস জঙ্গিবাদের নিন্দা জানাই। সহিংস জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধে তৃণমূল পর্যায়ে আমরা পরিবার, নারী, যুবসমাজ, গণমাধ্যম এবং ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করেছি। বৈশ্বিক এ সমস্যা মোকাবেলায় আমার প্রস্তাব হচ্ছে- এক, সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে; দুই, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে; এবং তিন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিবাদ মীমাংসা করতে হবে।’ শেখ হাসিনা বোধ হয় একমাত্র নেতা যিনি জীবনবোধের কথা বলতে গিয়ে অকপটে নিজেকে মেলে ধরেছেন । কোনো বাঁধাধরা তত্ত্বে নিজেকে তিনি আটকে রাখেননি। খোলা মনে খোলা চোখে শক্ত মাটিতে দাঁড়িয়ে সবকিছু তিনি যাচাই করে দেখেছেন আর সেই সঙ্গে পুরানোকে ছাড়িয়ে নতুনের দিকে বাড়িয়েছেন তাঁর হাত। বিশেষত, বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশ কিসের সঙ্গে সম্পর্ক, কিসের অগ্রগতি বা পশ্চাদগতি তা একমাত্র শেখ হাসিনাই বুঝেছেন।
দুই.
উঠতে পারে অনেক কথা। উঠেছেও। যেমন কাজের কথা। অবিরাম কাজ। খুব ভাল বাসেন কাজ। কাজই তাঁকে আনন্দ দেয়। তারা লড়াকু মানুষ, অজেয় মানুষ, অমর মানুষ, এই মানুষজনের কাছে শেখ হাসিনার দায়ভাগ আছে। এই দায়ভাগই শেখ হাসিনার রাজনীতি কিংবা তাঁর নিয়তি। আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা তাঁর পিতৃপুরুষের জন্মস্থান কেনিয়া সফরে গিয়ে বলছিলেন, ‘কেনিয়া যেন বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে এই দুই দেশকে অনুসরণ করে।’এটা যে কত বড় একটা স্বীকৃতি, ভাবা যায় না। এটাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অসাধারণত্ব। তাঁর সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর মহান পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর জীবনের অমলিন শিক্ষা, দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর অনুরাগ, সুদৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, অক্লান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং অসাধারণ আত্মবিশ্বাস। শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় গুণ তাঁর সৃষ্টিশীলতা। এটা তিনি অর্জন করেছেন এবং তার জন্যে নিরন্তর পরিশ্রম করেছেন। শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করেন মূল্যবোধ সাময়িকভাবে বর্জন করে বা মূল্যবোধের নীতি থেকে সরে এসে মূল্যবোধ অর্জন করা যায় না। শেখ হাসিনা জানে, নিরন্ন সকাল, বিদ্যালয়ে নিবার্ন্ধ অনাত্মীয় পরিবেশ, রোগব্যাধি থেকে উপশমের অশ্চিয়তা এবং অদরদী চিকিৎসা, এই সবের মধ্যে লুকিয়ে থাকে এক ভয়াল ছায়া। এরই মধ্যে কাটতে থাকা নিরাপত্তাহীন শৈশব এগিয়ে চলে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ভবিষ্যতের দিকে। শেখ হাসিনা পিতার মতো অসম্ভব সাহসী। এবং লক্ষ্যে অবিচল।
আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই আমরা শান্তি-কেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ এবং পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে চলেছি। এ উপলব্ধি থেকেই সাধারণ পরিষদে ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর 'শান্তির সংস্কৃতি' শীর্ষক প্রস্তাব পেশ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জাতি সংঘের সাধারণ অধিবেশনে যেরকমভাবে বলেছেন। এবারও সেভাবে বলেছেন এবং সুস্পষ্ট ও সুনিদিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন। “মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং ভ্রাতৃপ্রতীম ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে সব ধরনের বৈষম্য এবং শত্রুতা নিরসনের জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ” আমরা আশা করি, শান্তিবিনির্মাণে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে 'অব্যাহত শান্তি'র জন্য অর্থায়ন বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছ থেকে আমরা সাহসী এবং উদ্ভাবনমূলক প্রস্তাব প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে 'জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ তহবিলে' আমি ১ লাখ মার্কিন ডলার প্রতীকী অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিচ্ছি। দেশকে শক্তিশালী অর্থনীতির ওপর দাঁড় করিয়েছেন; তেমনি সৃজনশীল কুটনীতি দিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্র বিজয় করে এনেছেন। শেখ হাসিনাই ভারতের বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত চুক্তির ধারাবাহিকতায় ১০ হাজার একর জমি ফিরিয়ে এনেছেন। বিগত ৬৯ বছরে যা কেউ চিন্তাও করেননি। ১৯৯৬ -২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনাই পেরেছিলেন পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে। পৃথিবীতে এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ শান্তি চুক্তি করে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন।
তিন.
২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলো’তে প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে একটি লেখা খুবই গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছেন। বাংলাদেশে শুধু প্রথম আলো বিশেষ ব্যবস্থায় প্রজেক্ট সিন্ডিকেটের নিবন্ধ বাংলায় প্রকাশ করে থাকে। লেখাটির শিরোনাম ছিল ‘ অভিবাসন ব্যবস্থাপনা সঠিক হতে হবে’। লেখার কয়েকটি লাইন ছিল এম ‘গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশী অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। কেবল ভূমধ্যসাগরেই প্রাণহানি হয়েছে ৩ হাজার ২০০ মানুষের। আর বঙ্গোপসাগরের ঠিক পূর্বে আন্দামান সাগরে ভিড়তে না পেরে নৌকায় আটকে থেকেছে অথবা পাচারকারীর হাতে জিম্মিদশায় পতিত হয়েছে।’ এ রকম সত্য উচ্চারণ বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া আর কে করতে পারেন? সত্য যেখানে বিপদজনক সেখানে সত্যকে তিনি ভয় করেননি, মিথ্যে যেখানে সুবিধাজনক সেখানে তিনি সহায় করেননি মিথ্যেকে। আধুনিককালের চলমান পটের ওপর তিনি নিত্যকালের চিত্র রেখে যাচ্ছেন। ৭১ বছরে শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়ন, অগ্রগতি, নির্ভরতার প্রতীক। ক্ষুধামুক্ত দরিদ্রতা নিরসনের এক সাহসিকার নাম শেখ হাসিনা।
১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল ডিগ্রি’তে ভূষিত করে। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জন্ ওয়েসলিং নিম্নে প্রদত্ত প্রমাণপত্র ‘সাইটেশান’ পাঠ করেন :
‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ।
আপনার পিতা বাংলাদেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আর আপনিও বারবার নিজের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে এবং নিজের জীবনকে বিপন্ন করে দেশে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটিয়েছেন।’
‘সরল অথচ তীক্ষ্ণ বাগ্মিতা দিয়ে আপনি দেশের জনগণের জন্য আপনার সংগ্রামের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছেন। তা হলো “ভাত ও ভোটের অধিকার”। প্রায়ই দেখা যায়, তৃতীয় বিশ্বের জনগণকে ভোটের বিনিময়ে ভাতের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কিছুই পায় না। অথচ, আপনার সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের ভাত ও ভোট দুটোর নিশ্চয়তাই পাবে।’
‘বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের সাহস। এই সাহস কেবল তাদের ধৈর্যের পরিচায়কই নয়, এর দ্বারা নিজেদের সমৃদ্ধিও বয়ে এনেছে তারা।’
‘যে-বছর আপনি জন্মগ্রহণ করেন, সে-বছর জনগণ ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলেও পাকিস্তানের নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। সেই কারণে আপনার পিতা সিকি শতাব্দী ধরে বাংলার স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন করেন। কিন্তু তাঁকে ও তাঁর জনগণকে একসঙ্গে স্বাধীনতার ফল ভোগ করার সুযোগ বেশি দিন দেওয়া হয়নি। যেসব অফিসার আপনার পিতা, মাতা ও তিন ভাইকে হত্যা করেছে, তারা ভেবেছিল, বাংলার মানুষের প্রতি আপনার পরিবারের সেবা-ভালোবাসার সুযোগ তারা খতম করে দিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আশা সুদূরপরাহত করতে পেরেছে। কিন্তু আপনাকে তারা গণনায় আনতে ব্যর্থ হয়েছিল।’
‘আপনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরবর্তী বছরগুলোয় বাংলাদেশ অস্থিতিশীল ধারায় প্রকাশ্য ও গোপন সামরিক শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। এই অস্থির প্রেক্ষাপটের বিপরীত ধারায় ছিল দুটো জিনিস। প্রথমত, বাংলার জনগণ এবং দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা। সে সময় সেই গণতন্ত্রের কথা কেউ ভুলে যায়নি, যার প্রেক্ষিতেই জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের। আপনার সত্য কথা বলার অবিচল দৃঢ়তা আপনাকে অপশাসকদের কাছে বিপজ্জনক করে তুলেছিল। তারা আপনাকে আপনার পিতার বাসভবনে বন্দী করে রাখলেও আপনার উদ্যমকে, আপনার চেতনাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিশাল দুর্গের মতো পৈতৃক বাড়ি ও তার উত্তরাধিকারের মধ্যে আটকে থাকলেও আপনার বসবাস ছিল সেই মুক্তির মধ্যে, যে মুক্তি হলো সাহসিকতার মুক্তি। আপনার পিতার একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার সিকি শতাব্দী পর আজ আপনি সেখানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন।’
‘শেখ হাসিনা একজন মহা পিতার সুযোগ্য কন্যা, একটি যোগ্য জনগোষ্ঠীর মহান সেবক। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে আপনাকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করছে।’ (দৈনিক ভোরের কাগজ, ঢাকা : ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭)
শেখ হাসিনা মানেই এগিয়ে যাওয়া বিশাল আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ।
লেখক : রাজনীতিক বিশ্লেষক।
এইচআর/আরআইপি