হিতে যেন বিপরীত না হয়

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:০২ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশ নিতান্তই মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে নতুন করে যেন কোনো বিপাকে পড়তে না হয় সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখতে হবে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের সার্বিক কার্যক্রম একটি শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। তারা যেন সুনির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের বাড়িভাড়া না দেয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যেন জঙ্গিবাদসহ অন্যান্য অপতৎপরতার সাথে তাদের কেউ জড়াতে না পারে সেদিকেও কড়া নজর রাখতে হবে।

রোহিঙ্গারা যেন সারাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ জন্মসনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফ কার্ড সংগ্রহ করেছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। মানিকগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তারা কিভাবে এসব জায়গায় পৌঁছলো এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মনে রাখা প্রয়োজন, রোহিঙ্গারা সমস্যা কোনো সাধারণ সমস্যা নয়। রোহিঙ্গারা অন্য দেশের নাগরিক। তারা শরণার্থী হিসেবে এ দেশে এসেছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক নানা সংস্থাও রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখছে। তাদের নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া রোহিঙ্গারা বিদেশি নাগরিক হওয়ায় এর সাথে কূটনীতিসহ নানা বিষয় জড়িত। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। হিতে যেন বিপরীত না হয় লক্ষ রাখতে হবে সেদিকেও।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকেও ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। কী ধরনের ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন সেটি আগে নির্ধারণ করতে হবে। অভিযোগ আছে ত্রাণ নিয়ে নানা ধরনের অনিয়ম চলছে। রোহিঙ্গা নয়-এমন লোকজনও দাঁড়াচ্ছে ত্রাণের লাইনে। এছাড়া যে কেউ রোহিঙ্গাদের নামে ত্রাণ সংগ্রহ করছে। ত্রাণ নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম বিশৃঙ্খলা না হয় সেটি কঠোর হাতে দমন করতে হবে। ত্রাণ কার্যক্রম এককেন্দ্রিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রে যাতে কোনো অপতৎপরতা চলতে না পারে দৃষ্টি দিতে হবে সেদিকেও। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গার রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করতে হবে। এর ভিত্তিতেই সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের স্রোত বন্ধ করা এবং আশ্রিতদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারেও কূটনৈতিকসহ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

এইচআর/জেআইএম

‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গার রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করতে হবে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।