বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ মানুষের মাথায় বাজ

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:০৬ এএম, ১৯ আগস্ট ২০১৭

হঠাৎ করেই পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। কিছুদিন আগেও যে পেঁয়াজ ছিল ৩৫ টাকা কেজি তা এক লাফেই বেড়ে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির জন্য নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। তাই দাম বাড়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এমনিতেই দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে, তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়ায় যেন বাজ পড়ছে ভোক্তাদের মাথায়। প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো দেখার কি কেউ নেই?

কথায় আছে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। ব্যবসায়ীদের আমরা দুর্জন বলতে চাই না। আর সব ব্যবসায়ীর দায়-দায়িত্ব এবং নীতিনৈতিকতাও একই পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। তবে একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর লাভ ও লোভের কারণেই যে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। মুনাফালোভী এই মানসিকতা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সরকারের হাতে খুব একটা নেই। তারপরও টিসিবিকে কার্যকর করে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রেখে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়। সরকার বলছে, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এরপরও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হল কী করে। এক্ষেত্রে কী কারো কোনো দায়-দায়িত্ব নেই?

এদিকে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)। নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, টিসিবি চেয়ারম্যান ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিসিএস’র পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।

ঈদুল আজহা আসতে আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। এই সময়ে পেঁয়াজের চাহিদা আরও বেড়ে যাবে। তাহলে কি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা এই সুযোগটিই নিয়েছেন? কোনো উৎসব আনন্দে মানুষ যাতে ভালোভাবে অংশ নিতে পারে সেজন্য জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়া হয়। ছাড় দেয়া হয় বিশেষ বিশেষ পণ্যদ্রব্যে। আমাদের দেশে ঘটে এর উল্টোটা। যে কোনো উসিলায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইন-কানুন নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই এখানে।

ভোক্তাদের পকেট কাটা হবে আর সরকার শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং সিন্ডিকেটধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। অবিলম্বে পেঁয়াজের মূল্য জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে যার যা করণীয় রয়েছে সেটি করতে হবে। এজন্য সরকার-ব্যবসায়ী সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। ত্যাগ করতে হবে মুনাফালোভী মানসিকতা।

এইচআর/জেআইএম

‘ঈদুল আজহা আসতে আর দুই সপ্তাহ বাকি। এই সময়ে পিঁয়াজের চাহিদা আরও বেড়ে যাবে। তাহলে কি ব্যবসায়ীরা এই সুযোগটিই নিয়েছে?’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।