আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ১৭ বছর!

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ০৭ আগস্ট ২০১৭

দেশে যখন উদ্যোক্তা তৈরির নানা উদ্যোগ চলছে তখন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোক্তার করুণ দশার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাণিজ্যিকভাবে সাপের বিষ উৎপাদনে গড়ে তুলেছেন সাপের খামার। তবে দীর্ঘ ১৭ বছরেও খামারের অনুমোদন না পাওয়ায় বিষ সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারছেন না এই উদ্যোক্তা। ফলে খামার এখন তার গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। কর্মচারীদের বেতন ও সাপের খাবার যোগাড় করতে না পারায় খামারটি চালানোই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। অথচ সম্ভাবনাময় এই খামারটি চালাতে পারলে তা একদিকে যেমন লাভজনক হবে অন্যদিকে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। তাই খামারটি যাতে চালু থাকে সে সংক্রান্ত আইনি জটিলতা অবিলম্বে দূর করা হোক।

এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক বিদেশে সাপের খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০০০ সালে দেশে ফিরে স্থানীয় ভাবে সংগৃহীত একটি কিং কোবরা ও ২৪টি ডিম দিয়ে নন্দিপাড়া গ্রামে সাপের খামার শুরু করেন। এরপর দিনে দিনে তার খামারে বেড়েছে সাপের পরিমাণ। বর্তমানে নাজা নাজা, নাজা কিউটিয়া, পাইথোন ও কিং কোবরা এই চার প্রজাতির প্রায় তিনশ বিষধর সাপ রয়েছে তার খামারে। খামার তৈরির পর থেকে খামারের অনুমোদন ও বিষ সংগ্রহের জন্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন আব্দুর রাজ্জাক। তবে এতদিনেও মেলেনি অনুমোদন। এ কারণে বর্তমানে খামারে কর্মরত শ্রমিকদের একদিকে বেতন দিতে পারছেন না অপরদিকে খামার পরিচালনা ও সাপের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও আছেন আর্থিক সংকটে।

২০০৮ সালে বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভাবে সাপের খামার অনুমোদনের জন্য নীতিমালা তৈরি করে সরকার গেজেট প্রকাশ করে। সে অনুযায়ী আব্দুর রাজ্জাকসহ ৫০ জন খামারি আবেদন করে। তবে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের দ্বন্দ্বে আটকে আছে অনুমোদন প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাজ্জাকের খামারের অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিলেও অনুমোদন মেলেনি আজও। নিঃসন্দেহে সাপের খামারটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। খামারটি অনুমোদন পেলে স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের পাশপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও তারা ভূমিকা রাখতে পারবে। এ কারণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি খামারটির অনুমোদন দিতে হবে। যথাসম্ভব সহযোগিতাও করতে হবে খামারটির ব্যাপারে। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বাধাগ্রস্ত হলে তা নেতিবাচক উদাহরণ সৃষ্টি করবে। যেটি কিছুতেই কাম্য হতে পারে না।

এইচআর/জেআইএম

‘সাপের খামারটি অনুমোদন পেলে স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের পাশপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও তারা ভূমিকা রাখতে পারবে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।