চালের দাম কমছে না কেন?

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:০২ এএম, ০৫ আগস্ট ২০১৭

চালের মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধির মুখে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইতোমধ্যে বাজারে আমদানি করা চালও এসে পৌঁছেছে। কিন্তু এরপরও চালের দাম কমেনি। এমনিতেই উচ্চ দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে পিষ্ট মানুষজন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য চালের মূল্য বৃদ্ধিতে যার পর নাই ভোগান্তিতে আছে। এই ভোগান্তি যত তাড়াতাড়ি দূর হয় ততোই মঙ্গল।

আমদানি করা মোটা চালের প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ১-২ টাকা। পাইকারিতে কয়েক দিন আগে মোটা চাল ৪০-৪০.৫০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪১-৪১.৫০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে পরিবহন সমস্যাকে দায়ী করেছে। কয়েক দিন ধরে আমদানি করা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে বস্তাপ্রতি দুই হাজার ১০০ থেকে দুই হাজার ১৫০ টাকায়। প্রতি বস্তায় ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। আগে বিক্রি হতো দুই হাজার ৫০ টাকায়। মোটা চাল এখনো বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকা কেজি দরে। যদিও সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, মোটা চাল ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্কহার কমানো, ব্যবসায়ীদের জন্য বাকিতে এলসি খোলার সুযোগ এবং ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। এই চাল বাজারে আসলেই মূল্য কমার কথা। কিন্তু তা কমেনি। ব্যবসায়ীরা চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে পরিবহন সমস্যাকে দায়ী করে বলছেন, ভারত থেকে চাল আনতে অনেক সময় ট্রাকের লম্বা লাইনে পড়তে হয়। যত বেশি সময় লাগে তত বেশি ভাড়া গুনতে হয়। এই সমস্যার কারণেই এখন দাম বাড়ছে ।

চাল আমদানি সহজ করার পর সরকারি-বেসরকারি নানাভাবেই চাল আসছে দেশে। প্রচুর মজুদ গড়ে উঠেছে। এরপরও দাম না কমাটা আমাদের বোধগম্য নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। তারওপর চালের মতো অপরিহার্য পণ্যের দামও যদি নাগালের বাইরে থাকে সেটি অত্যন্ত দুর্ভোগের কারণ হবে। কৃষক একদিকে ধানের উৎপাদন খরচও পায় না। অন্যদিকে চড়া মূল্যে এখন চাল কিনতে হচ্ছে। এই টাকাও কিন্তু কৃষকের ঘরে যাবে না। এ অবস্থার অবসান জরুরি। খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কৃষক যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে চালের মূল্যও । এবারের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে চাল নিয়ে যেন কোনো চালবাজি হতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রচুর মজুদ থাকার পরও কেন চালের দাম কমছে না সেটিও খতিয়ে দেখে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এইচআর/এমএস

‘কৃষক একদিকে ধানের উৎপাদন খরচও পায় না। অন্যদিকে চড়া মূল্যে এখন চাল কিনতে হচ্ছে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।