সেশনজট থেকে মুক্তি দিন

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:১৫ এএম, ২১ জুলাই ২০১৭

শিক্ষার্থীরা সাধারণত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলন করে। কিন্তু পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গেলে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার জন্য রাজপথে নামতে হয় সেটি সহজেই অনুমেয়। এ রকম এক পরিস্থিতিতেই গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে জড়ো হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিল রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার।কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে, শাহবাগ মোড়ে রাস্তা বন্ধ করতে চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়া ও আটক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা,তাদের আটক করা এবং রাজপথ অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মসূচি-কোনোটিই সমর্থনযোগ্য নয়। শান্তিপূর্ণ উপায়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

সেশনজট কমাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজ- এই সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কিন্তু এতে জটিলতা আরো বাড়ে। সঠিক সময়ে ক্লাশ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয়াসহ কয়েকটি দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় এসব কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার সময় ঠিক করা হয়। এর মধ্যে মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা শুরু হবে ১০ সেপ্টেম্বর। অনার্স তৃতীয় বর্ষের শুরু হবে ১৬ অক্টোবর। ডিগ্রি প্রথম ও তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৪ নভেম্বর। এভাবে আরও কয়েকটি পরীক্ষার সময় ঠিক করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, মৌখিকভাবে নয় লিখিতভাবে রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করতে হবে। আর এই ঘোষণা আসতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকে।

শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। নির্ধারিত সময়ে শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। শিক্ষা সমাপ্ত করতেই যদি তাদের বছরের পর বছর  লেগে যায় তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এমনিতেই চাকুরির বাজার মন্দা। তারওপর সেশনজটের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা সত্যি দিশেহারা। এ অবস্থায় অতি দ্রুত পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা ও পরীক্ষার নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের যেন আর দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এ নিয়ে সকল পক্ষকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। 

এইচআর/এমএস

‘শিক্ষা সমাপ্ত করতেই যদি ছাত্রদের বছরের পর বছর লেগে যায় তাহলে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে কবে?’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।