বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন


প্রকাশিত: ০৩:৫০ এএম, ০৪ জুলাই ২০১৭

এসি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে ব্যবহার করলে বিদ্যুতের অপচয় হয়। তাই সব সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রায় ব্যবহার না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুতের অপচয় রোধে গত রোববার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সব প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। তবে এর আগেও বিদ্যুৎ বিভাগ এ ধরনের চিঠি দিলেও ওই নির্দেশনা মেনে চলেনি দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান।

দেশে এখন গ্রীষ্মে এসি চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় এক হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট। যা প্রতি দিনই বাড়ছে। তাই ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে এসি না চালালে বিদ্যুতের এ চাহিদা অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য।

মূলত সাশ্রয়ী মনোভাব গড়ে তুলতে পারলে অনেক সমস্যা থেকেই উত্তরণ সম্ভব। ইতোপূর্বে বিদ্যুত সাশ্রয়ে মার্চ থেকে নবেম্বর পর্যন্ত সরকারি অফিসে কর্মকর্তাদের স্যুট-টাই না পরতে নির্দেশনা জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সে সময় সরকারি অফিসে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-কর্মকর্তাদের গরমে আনুষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা ছাড়া স্যুট-টাই না পরার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তারই আলোকে এ ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। সত্যি বলতে কি, আমাদের মধ্যে সাশ্রয়ী মনোভাবের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। কে কত ব্যয় করতে পারলো, কে কত দামী পোশাক পরতে পারলো তার একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে সমাজে।

প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এই প্রতিযোগিতা আসলে অপচয়েরই নামান্তর। এটা ভুলে যাওয়া চলবে না যে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং স্বল্পোন্নত দেশ। এই দেশের অনেক কিছুই এখনও ঠিকঠাক মতো গড়ে ওঠেনি। বিদ্যুত ব্যবস্থার এখনও যথেষ্ট উন্নতি হয়নি। দেশের অনেক অঞ্চল এখনও বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসেনি। যেখানে বিদ্যুত আছে সেখানেও সারাক্ষণ বিদ্যুত থাকে না। চাহিদা এবং উৎপাদনের সঙ্গে সমন্বয় না হওয়ায় এই অবস্থা।

একদিকে যেমন বিদ্যুতের সঙ্কট অন্যদিকে এর অপব্যবহারও রয়েছে । কেউ বাতি জ্বালানোর বিদ্যুত পায় না। আবার কেউ বিদ্যুত নিয়ে বিলাসিতায় মেতে ওঠে। যেখানে একটি বা দু’টি বাল্ব হলেই চলে সেখানে অনেক বাতি জ্বালানো হয়। অহেতুক আলোকসজ্জাও করা হয়। গরমের সময়ও মোটা কাপড় পরে এয়ারকুলার চালিয়ে রাখা হয়। অফিস-আদালতে লোকজন না থাকলেও অনেক সময় ফ্যান ঘুরে, বাতি জ্বলে। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নিজহাতে ফ্যান, লাইটের সুইচ বন্ধ করার কথা ভাবতেও পারেন না অনেকে। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে ইতোপূর্বে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েও নিজহাতে সুইচ বন্ধ করি।’ এটাই আসলে গৌরবের ব্যাপার। অপচয় করার মধ্যে কোন বাহাদুরি নেই। শুধু বিদ্যুতের ক্ষেত্রেই নয় সকল ক্ষেত্রেই যদি মিতব্যয়ী হওয়া যায় তাহলে সমাজে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। কথায় বলে, বিন্দু বিন্দু করেই সিন্ধু হয়। কোন কিছুরই নিয়মবহির্ভূত এবং অপব্যবহার ভাল নয়।

এইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।