সুমাইয়ার ফিরে আসা এবং সক্রিয় পাচারচক্র


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর থেকে অপহৃত শিশু সুমাইয়া বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে। এটা স্বস্তির বিষয়।  ২৪ দিন খোঁজাখুঁজির পর রাজধানীর কদমতলী এলাকার একটি বাড়ি থেকে সুমাইয়াকে উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার রাতে উদ্ধারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবিনা আক্তার  বৃষ্টি (২৮) নামের এক নারী ও তার বাবা সিরাজুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে অপহরণের সঙ্গে জড়িত বৃষ্টি নারী ও শিশু পাচারকারী চক্রের সদস্য। তিনি গত কিছুদিনের মধ্যে কয়েকবার ভারত গিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। অপহৃত শিশু সুমাইয়াকেও সময়-সুযোগ বুঝে ভারতে পাচার করা হতো  এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী ও শিশু পাচার বেড়েই চলেছে। এটা উদ্বেগজনক। দেশের ১৮ টি রুট দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার নারী ও শিশু অবৈধ পথে পাচার হচ্ছে ভারতে।

অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের একটি আকর্ষণীয় পথ হচ্ছে মানব পাচার। দেশে পাচারকারীদের একাধিক চক্র রয়েছে। শিশুরাও এদের শিকার। নানা কৌশলে শিশুদের সংগ্রহ ও পাচার করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চক্রগুলো দালালের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নারী সংগ্রহ করে। পরে তাদেরকে ভারতের বিভিন্ন পতিতাপল্লী এবং আবাসিক হোটেলে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করানো হয়। সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তাহীন অস্বচ্ছল নারী ও শিশুরাই এই অপরাধ কর্মকাণ্ডের সহজ শিকারে পরিণত হয়। পাচার রোধে সংশ্লিষ্টদের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন।

এছাড়া পাচার হওয়া নারীদের ফেরত আনার পর যথাযথ পুনর্বাসনের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রও জরুরি। এ ব্যাপারে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে। পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এক্ষেত্রে কার্যকর পন্থা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।