দায়ী কে?


প্রকাশিত: ০৩:৫০ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

রাজধানী ঢাকার অচলাবস্থা নিয়ে কম কথা হয়নি। একেক সংস্থা একেকজনের ওপর দায় চাপিয়েই তাদের দায়িত্ব সেরেছে। কিন্তু আসলে দায়ী কে? গভীরভাবে ভেবে দেখা হয়নি বিষয়টি। তাহলে তিলোত্তমা রাজধানী শহর ঢাকা দিনে দিনে কেন এক অচল, স্থবির বাস অযোগ্য শহরে পরিণত হল সেই প্রশ্নের উত্তর মিলতো। কিন্তু দায়ী যেই হোক না কেন এই দুর্বিষহ নগর জীবন থেকে মুক্তি পেতে হবে। রাজধানীকে বাস উপযোগী করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

ঢাকা নগরীর অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা। এরজন্য এবার ওয়াসাকে দুষলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন ‘সংস্থাটির কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে। নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। খাল দখল হচ্ছে। আমাদের ওপর দায় আসছে।’ তিনি বলেন, ‘বিগত পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি ঢাকা ওয়াসা আজকে ব্যর্থ সংস্থায় পরিণত হয়েছে।’

মেয়র আরো বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু এ জলাবদ্ধতা নিরসনে কি হাজার হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন পড়ে? এতে তাদের মনোযোগ প্রয়োজন। তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি একটু মনোযোগী হয় তাহলে এ জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব। অথচ তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে শহর। তারা ব্যস্ত রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন কীভাবে করবে সে কাজে। আপনাদের বড় প্রকল্পের আগে ছোট ছোট সমস্যা আগে সমাধান করতে হবে।’  সাঈদ খোকন বলেন, ‘প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের প্রতিটি নাগরিকের সঙ্গে কথা হয় আমার। কিন্তু কোথাও পানি নেই। কোথাও খাবার পানির অভাব। আবার যে বাসায় পানি থাকে সে বাসায় ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানি থাকে। অথচ এসব বিষয়ে তাদের যখন বলি তারা বলে তাদের অর্থের অভাব রয়েছে।’

রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ঢাকা ওয়াসায় ৫০ কর্মীর সমন্বয়ে দক্ষ জনবল নিয়ে বিশেষ সার্কেল করা হলেও তিন বছর ধরে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দিয়ে কোনো কাজ না করিয়েই বেতন দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ওয়াসার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে। অথচ তারা কোনো কাজ করছে না। এই রেষারেষির মাঝখানে পরে জনসাধারণের জীবন অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় সিটি কর্পোরেশনের সাথে ওয়াসাকে একীভূত করার কথা বলছেন দক্ষিণ সিটি মেয়র।

বাস্তবতা হচ্ছে রাজধানীতে বিভিন্ন সংস্থা তাদের নিজস্ব বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত। এদের কারো সাথে কারো সমন্বয় নেই। কারো ওপর কারো নিয়ন্ত্রণও নেই। আবার এক বা একাধিক সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্র বিশেষে একই ধরনের কাজ করে থাকে। এতে আরো জটিলতার সৃষ্টি হয়। এজন্য সেবাদানকারী সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে একই ছাতার নিচে আনতে পারলে সেটা হবে সবচেয়ে উত্তম। যানজট, জলাবদ্ধতা, ড্রেনেজ সমস্যা, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নানাবিধ সমস্যায় নগরবাসী অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে সেবামূলক সংস্থাগুলো যাতে জনদুর্ভোগ লাঘবে একসাথে কাজ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তখন আর একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে পার পাবে না।

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।