সন্ত্রাসবাদ দমনে একসঙ্গে কাজ করতে হবে


প্রকাশিত: ০৪:০৯ এএম, ২৪ মার্চ ২০১৭

সন্ত্রাস যে এখন কোনো একক দেশ বা অঞ্চলের সমস্যা নয় সেটি আবার প্রমাণ করলো যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনের ন্যক্কারজনক হামলা। স্থানীয় সময় গত বুধবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের কাছে একজন ব্যক্তি পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে তিনজন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারান। এরপর তিনি পার্লামেন্টের সামনে একজন পুলিশকে ছুরি চালিয়ে হত্যা করেন এবং পরে পুলিশের গুলিতে হামলাকারীও প্রাণ হারান। ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার বছর পূর্তির দিনে লন্ডনে এই ঘটনা ঘটে। এই হামলায় গোটা বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। শান্তিকামী বিশ্ব কিছুতেই এ ধরনের হামলা মেনে নিতে পারে না।

কারা এই হামলা চালিয়েছে, হামলার উদ্দেশ্যই বা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনের কাছে সন্ত্রাসী হামলায় ইসলামপন্থীরা জড়িত থাকতে পারে বলে দাবি লন্ডন পুলিশের। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাস-দমন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা মার্ক রোলি বিবিসিকে এমনটাই জানিয়েছেন। মার্ক রোলি আরও বলেন, তাদের বিশ্বাস হামলাকারী সম্পর্কে তাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল। যদিও এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। ওই হামলায় আরো ৪০ জন আহত হয়েছেন।  লন্ডনের এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী ঘটনা’ বলছে যুক্তরাজ্য পুলিশ। লন্ডন পুলিশ বলছে, এই সন্ত্রাসী হামলায় পাঁচজন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।

হামলার পর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি কোবরা সিকিউরিটি মিটিং শেষে ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে মে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ পার্লামেন্ট গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মত মূল্যবোধ চর্চা করে বিশ্বের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা অর্জন করেছে। যারা এই মূল্যবোধ প্রত্যাখ্যান করছে, তাদের কাছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অবশ্যই একটি টার্গেটে পরিণত হয়েছে।’

সন্ত্রাসের কাছে ব্রিটেন হার মানবে না এমন প্রত্যয় ব্যক্ত  করে মে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক নিয়মে সংসদের সভা বসবে। স্বাভাবিকভাবে লন্ডনের বাসিন্দারা নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্ম সারবেন। শহরে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও স্বাভাবিক নিয়মে যা করছিলেন এবং যা তাদের পরিকল্পনায় ছিল তাই করবেন।’ মে আরো বলেন, ‘ঘৃণা এবং অশুভ শক্তি ব্রিটেনকে বিভক্ত করতে পারবেনা।’

বিশ্বের নানা স্থানেই এখন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে। কখন কোথায় যে আবার হামলা হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। বৃটিশ পার্লামেন্ট ভবনের কাছে এ ধরনের হামলা অনিরাপদ এক বিশ্বব্যবস্থার চিত্রই তুলে ধরছে। সন্ত্রাস দমনে পশ্চিমা বিশ্বের নীতি যে ততোটা কার্যকর নয় এ ঘটনায় আবারো তা প্রমাণ হল। এ ধরনের হামলা শুধু নিরাপত্তাহীনতাকেই বাড়িয়ে তোলে না বরং জন্ম দেয় হিংসা, বিদ্বেষ, বিভেদের। তাই হামলা বন্ধে গোটা বিশ্বকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সন্ত্রাসবাদ দমনে সন্ত্রাসের সূত্রসন্ধানও অত্যন্ত জরুরি। আমরা এ বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।