সাদিয়ার মৃত্যু ও পিষে যাওয়া আশা আকাঙ্খা


প্রকাশিত: ০৪:০৫ এএম, ০১ মার্চ ২০১৭

রাত একটা, আমি এক হতভাগা নিরুপায় চিকিৎসক বলছি । এইমাত্র নিউজ পেপার পড়তে বসে, আমার ভেতর টা ভেঙে চৌচির হয়ে গেল। গত ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার National Medical College এর এক হবু চিকিৎসক সাদিয়া হাসান বাসের ধাক্কায় মারা গেছে। মাত্র নয় মাস পরেই মেয়েটা চিকিৎসক হয়ে যেত। একজন সন্তানকে চিকিৎসক বানানোর জন্য তার পুরো পরিবারকে যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে চিকিৎসা বিদ্যা অনেক বেশি ব্যয়বহুল। সাদিয়ার মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। পরিবার শুধু একজন সদস্যকে হারালো না, দেশও হারালো এক সম্ভাবনাময় চিকিৎসককে।

Sadiaপাঠকের জন্য জাগো নিউজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরটি শেয়ার করছি-‘রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়াবাজারে বাসের ধাক্কায় সাদিয়া হাসান (২২) নামে এক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী নিহত হয়েছে। শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত সাদিয়ার বাড়ি রাজশাহীর হরগ্রাম বাজারে। তিনি পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজারের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ক্যাম্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জাগো নিউজকে জানান, সাদিয়া ও তার মা দেশের সকালে ট্রেন যোগে ঢাকায় আসে। কমলাপুর থেকে সিএনজি নিয়ে তারা কলেজে যাচ্ছিল। তবে নয়াবাজারের সড়কে পেছন থেকে একটি বাস তাদের সিএনজিকে ধাক্কা দিলে তারা গুরুত্বর আহত হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে সাদিয়াকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক।’

একজন চিকিৎসক এর জন্য তার পুরো পরিবারের থাকে বিশাল অবদান। আর এই অবদান, আশা, আকাঙ্খা যখন রাস্তায় পিষ্ট হয়, মায়ের চোখের সামনে যখন তার সন্তান বাসের ধাক্কায় মারা যায়, তখন কেমন লাগে একজন মায়ের? কী অপরাধ ছিল হবু চিকিৎসক সাদিয়া জাহানের, তার  পরিবারের? মানুষ মরণশীল। সবাইকেই একদিন মরতে হবে । কিন্তু তাই বলে পথে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে বেঘোরে? সাদিয়ার এই অকাল মৃত্যু, ভয়ানক বেদনার।

আমি আর লিখতে পারছি না। আমার কান্না পাচ্ছে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এইভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। সড়কে শৃঙ্খলা না থাকলে এমন ভাবে হারাতেই থাকবে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একজন মা। আপনার আপনজনদের ঘাতকেরা নৃশংস হত্যা করেছে। আপনি খুব ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে পারেন, আপনজন হারানোর ভয়ানক বেদনা। কোন অনুনয় বিনয় করছি না। আপনার কাছে আমাদের প্রাণের দাবি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হোক। আর কোন মানুষ যেন এইভাবে হারিয়ে না যায় । এই দৃশ্য ভয়ানক বেদনার।

লেখক : এমবিবিএস (ডি.ইউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (পাবলিক হেল্থ), পিজিটি (গাইনী এন্ড অবস্), রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনি এন্ড অবস্), স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ। ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হসপিটাল।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।