আমেরিকায় কালো মানুষের অধিকার


প্রকাশিত: ০৩:৫৮ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সারা বিশ্ব ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে এখন। ১৯৬৫ সালে, ঠিক এই দিনে আমেরিকা নামক বিশ্বের সবচেয়ে ‘সভ্য দেশ’ হত্যা করেছিল এমন এক মানুষকে, যার অপরাধ ছিল একটাই। তিনি কালো মানুষরা মানুষ হিসেবে অধিকার পাওয়ার যোগ্য বলে জোরালো দাবি তুলেছিলেন।

তিনি ম্যালকম এক্স ।  আত্মজীবনী ছাড়া ম্যালকম এক্স-এর লেখা আর কোন কিছু পাওয়া যায়নি। ১৯৯৮ সালে টাইম ম্যাগাজিন ম্যালকম এক্স-এর আত্মজীবনীকে বিশ শতকের সেরা দশটি প্রভাব সৃষ্টিকারী নন-ফিকশন বই-এর একটি বলে ঘোষণা দেয়। ম্যালকম এক্স কতখানি প্রভাব সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন, তা বোঝা যায় তাঁকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ম্যালকম এক্স’ দেখলে, যেখানে বিখ্যাত হলিউডি অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটন ম্যালকম এক্স চরিত্রে রূপদান করেছিলেন। ১৯৯০ সালে সেরা দশটি চলচ্চিত্রের একটি হিসেবে এই চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের স্বীকৃতি আদায় করে নেয়। ম্যালকম এক্স-কে নিয়ে হয়েছে আরো অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্র, যেমন জেমস আর্ল জোন্স অভিনীত ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ (১৯৭৭), ডিক এন্থনি উইলিয়ামস অভিনীত টিভি মিনি সিরিজ ‘কিং’ (১৯৭৮) ইত্যাদি।

অথচ আমেরিকায় কাল মানুষদের সাথে করা সাদা মানুষের অন্যায়গুলো নিয়ে সোচ্চার হওয়াতে তাঁর কপালে জোটে বর্ণবাদী আর সন্ত্রাসীর তকমা। ১৯৬৪ সালে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় স্থান মক্কা সফর করেছিলেন। ইসলাম ধর্মে সব মানুষ সমান মর্যাদার অধিকারী, কালো আর সাদার কোন প্রভেদ নেই- এই তথ্য জেনে ঘোষণা দিলেন ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেবেন। নিলেনও তা-ই। অথচ মুসলিম ম্যালকম এক্স ওরফে আল-হাজ্জ মালিক এল-শাবাজ-কে হত্যা করার পেছনে আমেরিকান মুসলিমদের প্রধান সংগঠন নেশন অব ইসলামের হাত ছিল বলে জোর গুঞ্জন ছিল। কোন এক বিচিত্র কারণে আমেরিকার মতো ‘বিচার হবেই’-এর দেশে ম্যালকম এক্স হত্যাকাণ্ডের মদদদাতাদের কোন বিচার হয়নি আজও। মানবাধিকারের লড়াইয়ের এই সৈনিককে স্মরণ করে না আমেরিকা। আসুন, আমরা করি।

১৯ মে ১৯২৫ সালে নেব্রাস্কার ওমাহাতে জন্মগ্রহণ করেন ‘লিটল’ ম্যালকম। শৈশবেই এতিম হয়েছিলেন। বয়স যখন মাত্র ছয়, তখন তাঁর পিতা নিহত হয়েছিলেন ছুরিকাঘাতে। সাদা মানুষের বর্ণবাদ ছুরি নিয়ে হামলে পড়েছিল, এ কথাই শুনেছিলেন তিনি। জেনেছিলেন, তাঁর বাবার আরো তিন ভাই এভাবে একই রকম সাদা মানুষের বর্বরতার স্বীকার হয়ে নিহত হয়েছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর হত্যাকারীদের হুমকির ভয়ে পরিবারটি এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। তাঁদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়া মায়ের আশ্রয় জোটে মানসিক রোগীদের হাসপাতালে। সাত বছর পর তিনিও মারা যান। ভাই-বোনদের সাথে বিচ্ছেদ ঘটে, একাকী ম্যালকম বাধ্য হয়ে দিন কাটাতে থাকেন শিশু-আশ্রয় কেন্দ্রে। জুনিয়র হাই স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, বড় হয়ে আইনজ্ঞ হবেন এমন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। যদিও এক সাদা চামড়ার শিক্ষক যখন তাঁর এই স্বপ্নকে ‘কোন নিগারের জন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নয়’, তখন তিনি মন খারাপ করে ছেড়ে দিলেন স্কুল। বুঝতে পেরেছিলেন, সাদা মানুষের পৃথিবীতে মেধা থাকলেও সাফল্য আসবে না কাল মানুষের কপালে!

১৪ থেকে ২১ বছল বয়স তিনি কাটিয়েছেন বোস্টনে। ওখানে আফ্রিকান-আমেরিকান মানুষেরই বসবাস ছিল বেশি। ১৯৪৩ সালে মিশিগান হয়ে হার্লেম, ন্যুয়র্কে ঘুরে বেড়ালেন ভবঘুরের মত, সঙ্গ ছিল মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াড়ি আর চোর-বদমাশদের। মায়ের বাবার স্কটিশ যোগসূত্র থাকায় সেদিক থেকে তিনি পেয়েছিলেন লালচে চুল, তাই নাম হয়ে গিয়েছিল  Detroit Red. ঝোঁকের মাথায় সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে চাইলেন। চাকরিটা হ’ল না, কেননা তিনি বলেছিলেন, সৈনিক হিসেবে তিনি সুযোগ পেলে ‘নিগার সৈন্যদের একত্রিত করবেন...কিছু গোলাবারুদ-অস্ত্র চুরি করে বদমাশদের পেট ফুঁটো করে দেবেন’। ১৯৪৫ সালে বোস্টনের বেশ কিছু সাদা চামড়ার ধনীদের বাড়িতে ডাকাতি হ’ল, তিনি নাকি এর নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৪৬ সালে তিনি পরিণত হলেন বিশ বছরের তরুনে। চুরির অপরাধে জেলে যেতে হয় তাঁকে। চুরি করা এক ঘড়ি সারাইয়ের জন্য দোকানে গিয়েছিলেন, ধরা পড়লেন আর অগত্যা জেলে যেতে হ’ল। সেখানে পরিচয় হ’ল জন বেম্ব্রি নামের একজন কয়েদির সাথে। জন বেম্ব্রি হচ্ছেন একজন স্বশিক্ষিত মানুষ, ম্যালকম এক্স-কে অনুপ্রাণিত করলেন বই পড়ার জন্য।

জেলখানাতেই তিনি জানতে পারেন নেশন অব ইসলাম সম্বন্ধে। নেশন অব ইসলাম আফ্রো-আমেরিকানদের স্বপ্ন দেখায় আফ্রিকায় ফিরে যাওয়ার, যেখানে তারা সাদা চামড়ার মানুষদের অসম্মানের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে তাদের বেঁচে থাকার স্বপ্নকে। তাঁর কাছে চিঠি লিখতেন তাঁর বন্ধু ও ভাই-বোনেরা। তাঁদের চিঠি থেকে জানলেন, এই নতুন দলটি কালদের আত্ম-অধিকার নিয়ে সচেতন। ম্যালকমের ভাই রেজিনাল্ড ১৯৪৮ সালে তাঁকে লেখা এক চিঠিতে লিখলেন, ‘ম্যালকম, আর শূকর খেয়ো না এবং আর একটি সিগারেটও ঠোঁটে নিও না।” ম্যালকম তা-ই করলেন। ধূমপান বাদ দিলেন, শূকরের মাংস আর ছুঁয়েও দেখলেন না। কৌতূহলের বশে ন্যাশন অব ইসলামের প্রধান নেতা এলিজাহ্ মুহাম্মদকে একটি চিঠি লিখলেন ম্যালকম।

জবাবে মুহাম্মদ তাঁকে তাঁর অতীত ভুলে যেতে বললেন, আল্লাহ্ পাকের উদ্দেশ্যে মাথা নত করতে বললেন এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে আর জড়িত না হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে বললেন। এর পর থেকে এলিজাহ্ মুহাম্মদের সাথে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ হতে থাকে। রেজিনাল্ড তাকে বোঝালেন, সাদা মানুষরা আসলে শয়তান। সাদা মানুষদের সাথে কাল মানুষদের যে কোন সম্পর্কই অসসততা, বর্বরতা, অবিচার, ঘৃণা ইত্যাদির সাথে মিশে আছে। এর কিছু দিন পর থেকেই তিনি তাঁর নাম ম্যালকম-এর পরে এক্স (ঢ) লিখতে শুরু করেন। আত্মজীবনীতে তিনি এর রহস্য উদ্ঘাটন করে লিখেছেন, ‘ ঢ হচ্ছে আমার প্রকৃত আফ্রিকান পারিবারিক নামের প্রতীক, যা আমি আদৌ জানি না। আমার পিতৃপুরুষের কাছ থেকে পাওয়া ক্রীতদাসত্ব প্রকাশক কোন এক নীল চোখের শয়তানের নাম ‘লিটল’-কে সরিয়ে দেবে এই ঢ.’ একই সময়ে তিনি তাঁর নতুন নামকরণ করেন- ম্যালকম শাবাজ বা মালিক এল-শাবাজ।

১৯৫২ সালের আগস্ট মাসে প্যারোলে মুক্তিলাভ করে ম্যালকম নেশন অব ইসলাম দলটির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। কাল মানুষের অধিকার, মিলেমিশে থাকতে না চাইলে কাল আর সাদা আমেরিকানদের আলাদা আলাদা জায়গায় থাকতে দেওয়ার বিষয় এবং মানবাধিকার ইস্যুগুলোতে তিনি ছিলেন সামনের কাতারে থাকা যোদ্ধা। ভাল বক্তা হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল, ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা শরীরের গঠন ছিল সবার মনোযোগ কাড়ার জন্য উপযুক্ত। শিকাগোতে দেখা করেন এলিজাহ্ মুহাম্মদের সাথে। যদিও এর আগেই, ১৯৫০ সালে ম্যালকম এক্স নিজেকে ‘কম্যুনিস্ট’ দাবী করে কোরিয়ান যুদ্ধের বিরোধিতা করে প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানকে চিঠি লেখার কারণে এফবিআই ম্যালকম এক্স-এর নামে ফাইল খুলে বসেছে। খুব দ্রুত এফবিআই তাঁর কম্যুনিস্ট পরিচয়ের আড়ালে থাকা আসল সত্যটা বুঝে ফেলে, যে তিনি আসলে নেশন অব ইসলামের একজন সক্রিয় সদিস্য। তাঁর বর্ক্তৃতায় আকৃষ্ট হয়ে প্রতি মাসে শত শত আফ্রিকান-আমেরিকান দলটিতে যোগদান করছিল। যদিও খুব দ্রুত দলটির সাথে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। ম্যালকম এক্স-এর জনপ্রিয়তাকে দলটির প্রধান নেতা এলিজাহ্ মুহাম্মদ ভাল ভাবে নিতে পারছিলেন না। আবার নেশন অব ইসলামের কর্মকান্ড অনেকখানি সহিংস হয়ে যাচ্ছে বলে ম্যালকম এক্স প্রকাশ্যে তাঁর অপছন্দকে স্বীকার করছিলেন।

১৯৬৪ সালের মার্চ মাসে ন্যাশন অব ইসলাম ও এর প্রধান নেতা এলিজাহ্ মুহাম্মদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ম্যালকম এক্স। সে বছরের এপ্রিল মাসে মক্কা গেলেন। নিজের হজ্জ্ব অভিজ্ঞতা নিয়ে ম্যালকম এক্স তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘আমি বিস্মিত হয়েছিলেন সব রং-এর মুসলিমদের দেখে, নীল চোখের বন্ড থেকে শুরু করে কাল চামড়ার আফ্রিকানও আছে। এ থেকেই আমার মনে প্রত্যয় জাগে যে, ইসলাম-ই হচ্ছে বর্ণবাদের সমস্যাগুলোকে সমাধান করার একমাত্র উপায়।’

২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫। তিনজন সহযোদ্ধাসহ একাধিক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন এই নেতা। আফ্রো-আমেরিকান সংহতি-এর একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। ম্যানহাটনের আদুবন বলরুমে ৪০০ দর্শকের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখবেন তিনি। হঠাৎ কে একজন চিৎকার করে বলে উঠল ‘নিগার! আমার পকেট থেকে তোমার হাত সরাও!’

কেমন একটা হট্টগোল শুরু হ’ল। ম্যালকম এক্স সরে যেতে চাইলেন। তখন প্রথম সারিতে বসা এক লোক ভিড় কাটিয়ে তাঁর দিকে পিস্তল তাক করল। ম্যালকম এক্স-এর বুকে আঘাত হানল ঘাতকের ছুঁড়ে দেওয়া বুলেট। অন্য আরেক জন স্টেজে উঠে গিয়ে সেমি-অটোমেটিক হ্যান্ডগান দিয়ে ম্যালকম এক্স-কে গুলি করতে শুরু করল। মাটিতে পড়ে গেলেন ম্যালকম এক্স। হাসপাতালে নেওয়া হ’ল তাঁকে। একটু পরেই ডাক্তাররা ঘোষণা করলেন, ম্যালকম এক্স আর নেই। ময়না তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, মোট ২১টি গুলি তাঁর শরীর ভেদ করেছিল, বুক-কাঁধ-বাহু-পা জখম করেছিল মারাত্মক ভাবে।

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ম্যালকম এক্স-এর স্ত্রী বেটি শাবাজ-কে শোক বার্তা পাঠান। এতে তিনি লেখেন, ‘বর্ণবাদ সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সব সময় চোখে চোখ রাখতে না পারলেও ম্যালকমের জন্য আমার মনে সব সময়ই গভীর স্নেহ রাখা ছিল এবং আমি অনুভব করতাম যে তাঁর সেই ক্ষমতা ছিল সমস্যার উপর আঙ্গুল স্থাপন করে সমস্যার শেকড়ে পৌঁছে যাওয়ার। তিনি ছিলেন তাঁর মতাদর্শ প্রচারে অসাধারণ বাগ্মী এবং সত্যিকার অর্থেই কারো কোন সন্দেহ নেই যে, ম্যালকম সেই সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাতেন, আমরা দৌড় প্রতিযোগিতার মতই যার মুখোমুখি হচ্ছি প্রতিনিয়ত।’

হাতে নাতে ধরা পড়েছিল তালমাজ হায়ার নামের এক বন্দুকধারী। বাকি দু’জনকে সনাক্ত করতে পেরেছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরা সবাই নাকি ছিল নেশন অব ইসলামের সাথে জড়িত। নেশন অব ইসলামের ঘাড়ে দোষারোপ করা হলেও এলিজাহ্ মুহাম্মদ পুরোপুরি অস্বীকার করেন সেটি। যদিও ম্যালকম এক্স-এর মৃত্যুতে শোক বক্তব্য রেখেছেন অন্যদের মতই আবেগ দিয়ে। তবে ম্যালকম এক্স ‘অবাধ্য’ ছিলেন এ কথা স্মরণ করিয়ে এলিজাহ্ যা বলেছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল, ম্যালকম এক্স-এর তথাকথিত হঠকারিতা-ই তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী।

এলিজাহ্ মুহাম্মদের বক্তব্যের ছায়া পাওয়া গেল দ্য ন্যুইয়র্ক টাইমস-এর নিবন্ধে। ম্যালকম এক্স তাঁর জীবন বিস্ময়কর ও করুনভাবে নষ্ট করেছেন বলে মতামত প্রকাশিত হয় এই নিবন্ধে। একই রকম ধারণা ইউরোপ ও আমেরিকার অন্য সব মিডিয়াতে দেখা গেলেও আফ্রিকায় শোনা গেল সহানুভ‚তিশীল কষ্ঠস্বর। দ্য ডেইলি টাইমস অব নাইজেরিয়া লিখল, ‘ম্যালকম এক্স শহীদের অবস্থান লাভ করবেন’। ঘানার পত্রিকাগুলো তাঁকে জন ব্রাউন এবং প্যাট্রিস লুমুম্বার মত শহীদ বলল। বেইজিং-এর গুয়াংমিং ডেইলি লিখল, ‘ম্যালকম-কে হত্যা করা হয়েছে, কেননা তিনি স্বাধীনতা আর সমঅধিকারের জন্য যুদ্ধ করতেন।’

অনেকেই এফবিআই বা সিআইএ-কে দোষ দিল। পুলিশ কেন ঠিক সময়ে নিরাপত্তা দেয়নি, হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ কেন আলামত নষ্ট করে ফেলল, এরকম নানান প্রশ্নের জন্ম হ’ল। এসবের জবাব তখন না পাওয়া গেলেও, ১৯৭০ সালে জানা গেল, জন আলী নামে একজন এফবিআই-এর ছদ্মবেশী এজেন্ট নেশন অব ইসলাম-এর সদস্য হয়ে থাকতেন। এই আলী-ই নাকি এলিজাহ্ মুহাম্মদ এবং ম্যালকম এক্স-এর মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি করেছিল। হত্যাকাণ্ডের ঠিক আগের রাতে জন আলী সাক্ষাৎ করেছিলেন তালমাজ হায়ার-এর সাথে, যে কিনা ম্যালকম এক্স-কে গুলি করেছিল। ওদিকে শাবাজ পরিবার দোষারোপ করেছিলেন আরেক আফ্রো-আমেরিকান মুসলিম নেতা লুইস ফারাখানকে। যদিও লুইস ফারাখান অস্বীকার করেছিলেন জোরালো কণ্ঠে। তিনি নাকি তাঁর বক্তব্য দিয়ে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন, যাতে হত্যাকারীরা উদ্দীপ্ত হয়েছিল। এভাবেই, প্রত্যক্ষ হত্যাকারীরা ধরা পড়লেও কাদের মদদে নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছিল, তা আজো জানা যায়নি।
লেখক : শিশুসাহিত্যিক।

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।