পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কার স্বার্থে?


প্রকাশিত: ০৩:৫৮ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬

এমনিতেই পানি সংকট। তারওপর আবার বাড়লো পানির দাম। এ নিয়ে নিশ্চিতভাবেই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ভোক্তাদের। রাজধানীতে দিন দিন বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এখন অত্যাবশ্যকীয় পানির দাম বাড়লে সেটি হবে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ সমতুল্য। কাজেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক এবং এই বৃদ্ধি ভোক্তাদের মধ্যে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত।

ঢাকা ওয়াসা চার মাসের মাথায় আবারও পানির দাম বাড়িয়েছে। আবাসিক ক্ষেত্রে দাম প্রতি ইউনিটে (এক হাজার লিটার) ১ টাকা ৫১ পয়সা এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৭২ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। সাধারণত ওয়াসার পানির দাম বছরে  ৫ শতাংশ হারে বাড়ে। কিন্তু এবার আবাসিক ও শিল্প-বাণিজ্যিক খাতে যথাক্রমে ১৭ ও ১৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া  সাধারণত বছরে একবার দাম বাড়ানোর কথা থাকলেও এবার দুই দফায় বাড়ানোর কারণে মোট দাম বাড়লো আবাসিকে ২২ শতাংশ এবং শিল্প ও বাণিজ্যিকে ১৮ শতাংশ।  সবমিলিয়ে এই মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আগে গ্রাহক, বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মতামত নিতে গণশুনানির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা কেন নেই সে প্রশ্নও উঠছে।  

ওয়াসার যুক্তি অনুযায়ী লোকসান কমানোর জন্যই পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। লোকসান কমানোর নানাবিধ উপায় আছে। সেগুলো অবলম্বন না করে দাম বৃদ্ধির শর্টকাট রাস্তায় হাঁটাটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়। পানির অপচয় রোধ, দুর্নীতিবন্ধ করাসহ নানা উপায়ে লোকসান কমানো যায়। পানি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে দিন দিন। রাজধানীতে পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাচ্ছে। দখল দূষণে নদ-নদীর অবস্থাও সঙ্গীন। এ অবস্থায় পানির অপচয় বন্ধ করতে হবে। এ জন্য  সাশ্রয়ী পানির কল তৈরি ও ব্যবহার করা যেতে পারে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে যেমন এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ওয়াসা দায়িত্ব নিতে পারে। যাতে চাইলেই কেউ পানির অপচয় করতে  না পারে, সেরকম প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ব্যবহার করা যায় কিনা- সেটি নিয়েও ভাবতে হবে।

পানির দাম বৃদ্ধির ফলে বাড়িওয়ালাদের কোনো সমস্যা হবে না। শেষ পর্যন্ত ভাড়াটিয়াদের ওপরই গিয়ে চাপবে এর দায়। মূল্যবৃদ্ধির যাঁতাকলে পড়ে এমনিতেই জনজীবন অতিষ্ঠ। এর ওপর পানির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি তাদের ওপর বাড়তি চাপ। এই চাপ তারা কতটা সহ্য করতে পারবে সেটি অবশ্যই ভাবতে হবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।