পানিসম্পদ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সাত দফা


প্রকাশিত: ০৪:০৩ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানি ব্যবস্থাপনায় সার্বজনীন বৈশ্বিক উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি পানিকে দুষ্প্রাপ্য উৎস অন্তর্ভুক্ত করে সাত দফা এজেন্ডা উত্থাপন করে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে তাদের দেশের পলিসিতে পানি সম্পর্কিত বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানান। গত সোমবার বুদাপেস্টে পানি সম্মেলন-২০১৬ উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণকালে তিনি বলেন, আমাদের পানি ব্যবস্থাপনায় এখনই একত্রে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর পানিবিষয়ক সাত দফা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বনেতৃবৃন্দকে অভিন্ন স্বার্থে এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে।

সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্তঃসীমান্ত পানি বণ্টনে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আন্তঃসীমান্ত নদীর পানির সুব্যবস্থাপনা খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। এ প্রসঙ্গে তিনি ভাটির ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় দেশের চিরায়ত জীবনযাত্রার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দুষ্প্রাপ্যতা সবসময় পানি সংকটের প্রধান কারণ নয়। বরং এ সমস্যা ন্যায্য বণ্টনের সঙ্গেও সম্পর্কিত। আন্তঃসীমান্ত প্রবাহের বণ্টন একটি জটিল বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীসহ ২৩০টি নদীবিধৌত দেশের প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘের পানি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্যানেলের সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাত দফা এজেন্ডা উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশে আমাদের সংস্কৃতি, চেতনা, জীবন ও জীবিকার প্রধান কেন্দ্র জুড়ে রয়েছে পানি- একথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা পানি ইস্যুকে রাজনীতি ও কার্যক্রমে অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাত দফা এজেন্ডায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ই ওঠে এসেছে। বিশ্বে পিছিয়ে থাকা লাখ লাখ মানুষ অথবা গ্রুপ যারা বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং স্যানিটেশন সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সংকট মোকাবেলা করছে তাদের চাহিদার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকির মুখোমুখি দেশগুলোর বিপণন এলাকায় পানি সম্পর্কিত বিপর্যয় রোধে সহায়ক কাঠামো নির্মাণ জরুরি।

ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারও নানা সংকট সৃষ্টি করছে। এছাড়া পানি সংক্রান্ত গবেষণায়ও মনোনিবেশ করা এবং এ ব্যাপারে তহবিল গঠন করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পানি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে এজেন্ডা তুলে ধরার পাশাপাশি আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। পানির প্রাকৃতিক উৎস নদী বাঁচিয়ে রাখতে হবে। দখল দূষণে দেশের সিংহভাগ নদীর অবস্থা করুণ। দখল দূষণের কারণে নদী পথও আজ বিলীন হওয়ার পথে। এমনকি খোদ রাজধানীর চারপাশের নদী খালগুলোও এই দখল দূষণ থেকে মুক্ত নয়। দখল দূষণ বন্ধে মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হলেও কিছুদিন পরই অবস্থা তথৈবচ। এছাড়া ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। রাজধানী শহর এ নিয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভারতের সাথে অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি বন্টন সমস্যারও সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন। পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে সব ধরনের প্রচেষ্ঠা চালাতে হবে। অন্যদিকে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপচয় রোধ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করাটাও জরুরি। জীবনের উৎস পানি। তাই পানি রক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।