শিশুমৃত্যুর উদ্বেগজনক হার


প্রকাশিত: ০৩:৪৯ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

কবি সুকান্ত পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করার কথা বলেছিলেন তার কবিতায়। শুধু পরিবেশগত প্রতিকূলতাই নয় রোগ-ব্যাধি জনিত কারণেও শিশুরা থাকে নানা ঝুঁকির মধ্যে। এমনকি তাদের জীবনহানিরও কারণ হয় তা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট-এর গত ১০ নভেম্বরের সংখ্যায় এ সংক্রান্ত যে তথ্য ওঠে এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে বলা হয়েছে, দেশে গত বছর বিভিন্ন রোগ এবং নানা কারণে ১ লাখ ১৯ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।  ল্যানসেট-এর তথ্যে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ সময়ের আগে জন্মানোর জটিলতা। এ ছাড়া ম্যালেরিয়ার কারণে রক্তস্বল্পতা, সিফিলিস, একলামশিয়া, মায়ের অতিরিক্ত পরিশ্রম ও দূষণের কারণে অপরিণত শিশু জন্মায়। আবার অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের কারণেও অপরিণত শিশু জন্মাতে পারে। কাজেই এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে।

শিশুমৃত্যুর শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম থাকার বিষয়টি সত্যিই অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করতে হবে। এ কথা ঠিক সরকারের নানামুখি উদ্যোগের কারণে শিশুমৃত্যু এবং মাতৃমৃত্যুর হার অনেকটা কমে এসেছে। তবে সেটি যে এখনো কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছেনি সেটি তো শিশুমৃত্যুর উচ্চহারের পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।

এই পরিসংখ্যানে শিশুমৃত্যুর যেসব কারণের কথা বলা হয়েছে সেগুলো দূর করতে হবে। বাল্য বিয়ে আমাদের সমাজে এক বড় সমস্যা। বাল্য বিয়ের কারণে অল্প বয়সে মা হচ্ছে কিশোরীরা। অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ মা ও শিশু উভয়ের জন্যই বিপদজনক। এ জন্য বাল্য বিয়ে বন্ধে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিউমোনিয়ায়সহ নানা জটিল রোগ থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপেরও কোনো বিকল্প নেই। শিশুদের জন্য টিকাদান কর্মসূচিও আরো জোরদার করতে হবে।  ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫-এর নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ জন্য সঠিক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। সবদিক থেকেই দেশকে শিশুর জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে হবে।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।