দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশই স্বপ্নের দেশ


প্রকাশিত: ০৬:০৪ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য থেকে মুক্তির ডাক দিয়েছেন নতুন করে। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন ‘এখানে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত আছেন। অনেক জনপ্রতিনিধি আছেন। আমি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে সংসদ সদস্য পর্যন্ত সকলকে বলব, বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। নিজ নিজ এলাকায় কতজন দরিদ্র মানুষ আছে, গৃহহারা মানুষ আছে, যার ঘর নাই, বাড়ি নাই-ঠিকানা নাই, নিঃস্ব-রিক্ত মানুষ আছে, কারা হতদরিদ্র, বয়োবৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী আছে, আপনারা তাদের তালিকা বানান। তাদের জন্য আমরা বিনা পয়সায় ঘর তৈরি করে দেব। তারা যেন বেঁচে থাকতে পারে, তার ব্যবস্থা করে দেব। কারণ তারা আমাদের নাগরিক, এটা আমাদের দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। কাজেই জনগণের কল্যাণ করাই আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যদি এই কাজটা ভালোমতো করতে পারি, তাহলে এই বাংলাদেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না। দারিদ্র্যের হার ৯৭ ভাগ ছিল। আমরা ২২ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্রের হার ১২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। বাংলাদেশে দরিদ্র বলে কিছু থাকবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

ক্ষুধা-দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রাম নিরন্তর। এই সংগ্রামে যখন কোনো দেশের সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তখন তা ওই দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয়।  এটা খুবই আশার কথা যে বাংলাদেশের অতি দারিদ্র্য পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে। সাত বছরের ব্যবধানে প্রায় ৮০ লাখ হতদরিদ্র লোক অতি দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠেছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি ‘টেকিং অন ইন-ইকোয়ালটি’ শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সেখানে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের এ চিত্র উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে ২ কোটি ৮০ লাখ হতদরিদ্র লোক ছিল। চলতি অর্থবছরে তা ২ কোটিতে নেমে এসেছে। এরা প্রতি মাসে ১ হাজার ২৯৭ টাকাও আয় করতে পারেন না। শিক্ষাক্ষেত্রে লিঙ্গসমতা ও সফল পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এ দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করেছে বলেও মন্তব্য করে বিশ্বব্যাংক।

প্রকৃতপক্ষে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশই স্বপ্নের বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে সরকার নানামুখি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বয়স্কভাতাসহ চালুসহ রয়েছে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি। উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা দূর করা সম্ভব হয়েছে সরকারের বাস্তবমুখি পদক্ষেপের কারণে। দারিদ্র্যকে সঙ্গে করে একটি দেশ খুব বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারে না। এতে সামাজিক বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করে। কাজেই বৈষম্যমুক্ত একটি সমাজতথা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে দারিদ্র্য দূর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদের প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা পালন করতে হবে। দেশে একজন মানুষও যেন গৃহহীন ও দরিদ্র না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাও অত্যন্ত জরুরি। দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক একটি ব্যবস্থাই পারে দারিদ্র্যসহ সকল ধরনের বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে। দারিদ্র্য বিমোচনে একসঙ্গে কাজ করাটাই হোক সকলের লক্ষ্য।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।