দর্শকের কাণ্ড এবং নিরাপত্তার ঘেরাটোপ


প্রকাশিত: ০৬:৪৪ এএম, ০২ অক্টোবর ২০১৬

মিরপুর স্টেডিয়ামে এমন দৃশ্য এর আগে দেখেনি কেউ। তবে ফুটবলে কিংবা ক্রিকেটে প্রায়ই দেখা যায় এমনটি। কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাসকিনের ২৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলের পর হঠাৎই ক্রিকেট বোর্ডের নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন এক তরুণ। লক্ষ্য, মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছুঁয়ে দেখা।

ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে আসা তরুণকে দেখে মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা মাশরাফি শুরুতে খানিকটা ঘাবড়েও গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য বুঝতে পেরে দাঁড়িয়ে যান। জড়িয়ে ধরেন ওই দর্শককে। পেছনে পেছনে বিপুল বিক্রমে ওয়াকিটকি হাতে ছুটে আসেন নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন। মাশরাফি আগলে ধরেন ভক্তকে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অনুরোধ করেন ওই দর্শকের যেনো কোনো ক্ষতি না হয়। নিরাপত্তা কর্মীরা পরে মাশরাফির কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন ওই মাশরাফি ভক্তকে। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। রাতেই নেওয়া হয়েছে মিরপুর থানায়।

ওই দর্শক গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড থেকে মাঠে ঢুকে পড়েন। এই ঘটনা নিয়ে নানামাত্রিক বিশ্লেষণ হচ্ছে। বিশেষ করে অধিনায়ক মাশরাফি তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যে প্রত্যুৎপন্নমতিতার পরিচয় দিয়েছেন তা সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। এছাড়া ভক্তকে বুকে আগলে রেখে মহানুভবতা ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন তিনি।

তবে দেশে যখন জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে তখন নিরাপত্তার দিক থেকে ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে এটি হওয়া উচিত ছিল না। একজন দর্শক মাঠে ঢুকে পড়েছেন, তিনি সাধারণ কোনো দর্শক না হয়ে অন্য কিছুও হতে পারতেন। তার মানে কোনো অঘটন ঘটানোর জন্য যে কেউ মাঠে ঢুকে পড়তে পারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাহলে এই রকম- এমন প্রশ্নও উঠতে পারে। ব্রিটিশ মিডিয়ায় তো নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নই তোলা হয়েছে। ইংল্যান্ড দল এখন বাংলাদেশে। তাদের উদ্বেগ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট অন্তপ্রাণ। ক্রিকেটের যে উন্নতি তার পেছনে দর্শকের ভূমিকাকে অনেক বড় করে দেখা হয়। সেই দর্শকরা যদি এমন আচরণ করেন যা নির্বিশেষে ক্রিকেটের জন্য ক্ষতির কারণ হয় সেটি হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দর্শকদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করি। আমাদের যেন বদনাম না হয়। আর নিরাপত্তাবাহিনীকেও এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরো কঠোর অবস্থান নিতে হবে। একটি সুষ্ঠু সুন্দর  আনন্দময় পরিবেশে খেলা অনুষ্ঠানের জন্য সবাইকে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।