কঠোর ব্যবস্থার বিকল্প নেই
মোবাইল ফোন এখন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। আমাদের দেশে মোবাইল ফোনের জয়জয়কার। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে লোভী ও প্রতারক মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে ক্রেতারা বঞ্চিত হচ্ছে। আসল পণ্যের দামে জিনিস কিনে পাচ্ছে নকল ও নিন্মমানের পণ্য। এতে শুধু ক্রেতারাই যে ঠকছেন তাই নয় সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। তাই নকল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে- রাজধানীর হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজায় অভিযান চালিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের ক্লোন বা নকল মোবাইল হ্যান্ডসেট জব্দ করেছে র্যা ব। এ ঘটনায় চারজনকে কারাদণ্ড ও ৩৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। এ ব্যাপারে র্যা ব এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অভিযানে দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত নিম্নমানের মোবাইল যন্ত্রাংশ সংযোজন করে আইফোন, স্যামসং, এইচটিসি, সনি, নকিয়া, মাইক্রোম্যাক্সের লোগো ব্যবহার করে ক্রেতাদের প্রতারিত করে আসছে। এসব সেট বিটিআরসির পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত অবৈধভাবে বিক্রি করায় ক্রেতারা মোবাইলের সঠিক মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়াও হ্যান্ডসেটগুলো মাস ছয়েকের মধ্যে অকেজো হয়ে যায়। দেশে মোবাইল ড্যাম্পিংয়ের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় এটি পরিবেশের উপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। অভিযানে উপস্থিত বিটিআরসির বিশেষজ্ঞরা হ্যান্ডসেটগুলোর আইএমইআই পরীক্ষা করে এসব মোবাইল ফোন নকল হিসেবে চিহ্নিত করেন। বিক্রেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব ফোন অবৈধভাবে বাজারজাত করছে বলে স্বীকার করেছে। তাই তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করা হয়।
বাংলাদেশে রয়েছে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বিপুল চাহিদা। এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ আছে নকল ও নিন্মমানের হ্যান্ডসেট আমদানি করে সেগুলোতে নামী-দামী কোম্পানির মনোগ্রাম বা লোগো লাগিয়ে দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব সেটের কোনো ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টিও নেই। মোবাইল হ্যান্ডসেটের মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পণ্যের নকল ঠেকাতে হবে যে কোনো মূল্যে। এসব নকল ও নিন্মমানের হ্যান্ডসেট অনেক সময় বিস্ফোরিত হয়ে ভয়ানক দুর্ঘটনার কারণ হয়। বিটিআরসির সক্রিয় ভূমিকা নকল মোবাইল হ্যান্ডসেটের বিক্রি বন্ধে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ ব্যাপারে রাজস্ব বিভাগকেও আরো সক্রিয় হতে হবে যাতে কোনোভাবেই এসব হ্যান্ডসেট দেশে ঢুকতে না পারে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও অব্যাহত রাখতে হবে। দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ক্রেতাসাধারণকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই নকল হ্যান্ডসেট বিদায় নিতে পারে।
এইচআর/এবিএস