ফেসবুক সমালোচনায় কোকোর দুই মেয়ে


প্রকাশিত: ০৯:৪৩ এএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সদ্য প্রয়াত ব্যবসায়ী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দুই মেয়েকে নিয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

দুই মেয়ে জাফিয়া ও জাহিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা ছেড়েছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সদ্য বিধবা স্ত্রী শার্মিলা রহমান সিঁথি। সোমবার দুপুরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানে তারা মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

সূত্র জানায়, জাফিয়া ও জাহিয়ার পরীক্ষা থাকায় তারা মালয়েশিয়া চলে গেছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। গত ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার বাবার কফিনের সঙ্গে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান দেশে আসেন।

২০ দলীয় জোটের হরতালের কারণে যখন দেশের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না তখন নিজের নাতনীদের পরীক্ষা দিতে পাঠালেন খালেদা জিয়া। এটিই হচ্ছে আলোচনার মূল বিষয়।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, মাথায় কত প্রশ্ন আসে - পরীক্ষা আমলে নিচ্ছে না বিএনপি: কর্মসূচী আপাতত শিথিল করছে না বিএনপি। এমনকি এসএসসি পরীক্ষাকেও আমলে নেয়া হচ্ছে না, শুক্রবারেও হরতালের চিন্তা। [ সূত্র: প্রথম আলো, ৩.২.১৫, পৃষ্ঠা-১] পরীক্ষা আছে তাই: বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াতপুত্র কোকোর স্ত্রী তাঁর দুই সন্তান নিয়ে মালয়েশিয়ায় ফিরে গেছেন। সোমাবার দুপুরে তারা চলে গেছেন তারা। বলা হচ্ছে: মালয়েশিয়ায় স্কুলে অধ্যয়নরত কোকোর দুই কন্যার পরীক্ষা থাকায় তারা ফিরে গেছেন। [সূত্র: প্রথম আলো, ৩.২.১৫, পৃষ্ঠা-২] পিতার মৃত্যুশোক, মৃতের জন্য ৪০ দিনের আনুষ্ঠানিকতা ছাপিয়ে বড় হয়েছে দুই কন্যার পরীক্ষা। নিশচয়ই প্রশংসনীয়। শিক্ষাই আগে, নিশ্চয়ই। কিন্তু দেশে যে ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা আটকে যাচ্ছে হরতাল-অবরোধ- পেট্রোল বোমায়, এর দায় কে নেবে? এদের জন্য কোন মা – দাদী কি নেই?



চ্যানেল আই এর বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান লিখেছেন, Late Arafat Rahman Koko`s daughters went back to Malaysia to appear in school exams. This is normal. A death cannot stop life of others. But, question is when Mrs. Khaleda Zia`s grandchildren can appear in school exams, one and half million kids of the country, she led as Premier thrice, could not start their SSC exams and many others missed O and A level exams following an unprecedented blockade, marking arson and killings, she has called for. Her sons` education was never affected for this kind of movement in the past as they had never been in education. Similarly, education of Mrs. Sheikh Hasina`s son, daughter, nephew and niece and grandchildren was never affected when she led similar movements for caretaker government system as all of them studied/ study abroad. We are not opposed to study abroad if you have the capacity, but why our kids` education will be affected for your game for power! How long this monarchy will continue!

সিনিয়র সাংবাদিক সাওগাত আলী সাগর লিখেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সদ্য প্রয়াত ছেলে কোকোর দুই মেয়ে জাহিয়া ও জাফিয়া মালয়েশিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। কোকোর মরদেহ`র সঙ্গে তারা দেশে এসেছিলেন। কিন্তু মালয়েশিয়ায় তাদের পরীক্ষা থাকায় তাঁরা ফিরে গেছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের চরিত্র। নিজেদের সন্তানদের তারা বিদেশে রাখেন, সাধারণ মানুষের সন্তানদের রাজনীতির নামে আগুনে পুড়িয়ে মারেন। ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে গুরুত্ব পায় না। কারণ তাদের সন্তানরা পরীক্ষার জন্য মালয়েশিয়া উড়ে যায়। সেখানে পেট্রল বোমার আতংক নেই। পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা নেই। নিজের সন্তানদের নিরাপদে দূরে রেখে তারা দেশের সন্তানদের জীবনকে, ভবিষ্যৎকে আগুনে পুড়িয়ে দগ্ধ করেন। এই তো রাজনীতি!

ফেসবুকে সঞ্জয় দে লিখেছেন, জাফিয়া ও জাহিয়ার জন্য ভালোবাসা-শুভ কামনা। সামনে পরীক্ষা, তাই ওরা ফিরে গেছে মালয়েশিয়ায়। ওখানে হরতাল-অবরোধ নেই, রাস্তায় চলার পথে পেট্রল বোমায় পুড়ে মরার আতঙ্ক নেই। পরীক্ষা সময় মতো কি হবে না- সেই উদ্বেগও নেই। তাই বাবা হারানোর কষ্ট চাপা দিয়ে ঠিকঠাক দিনেই পরীক্ষার হলে যাবে জাফিয়া-জাহিয়া। আর দেশে সেদিনও হয়তো থাকবে হরতাল-অবরোধ। পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় পুড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীর দেহ নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় হয়তো দিগ্বিদিক ছুটে বেড়াবেন কোনো অভিভাবক। পরীক্ষা নিয়ে তাচ্ছিল্যের সুর ঝরবে জাফিয়ারই অতি কাছের দলের নেতাদের কণ্ঠে। তবুও চাই জাফিয়া-জাহিয়ার পরীক্ষা ভালো হোক, এ বছর বাংলাদেশের কয়েক লাখ কিশোর পরীক্ষার্থীর মধ্যে অন্তত দুজন দুর্ভাবনা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে পারছে- এটাই বা কম কীসের!!??

সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা লিখেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সদ্য প্রয়াত ছেলে কোকোর দুই মেয়ে জাহিয়া ও জাফিয়া মালয়েশিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। কোকোর মরদেহ`র সঙ্গে তারা দেশে এসেছিলেন। কিন্তু মালয়েশিয়ায় তাদের পরীক্ষা থাকায় তাঁরা ফিরে গেছেন।

এনায়েত শাওন লিখেছেন, আমি ভেবেছিলাম মতিকণ্ঠের ব্লাস্ট আইটেম এটি কিন্তু না, আসলেই পরীক্ষা আছে। তাহলে তো যেতেই হবে। পাল্লায় ওজন দিয়ে দেখলাম ১৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর পরীক্ষা এক পাল্লায়, আর জাহিয়া ও জাফিয়ার পরীক্ষা আরেক পাল্লায়। ওজন জাহিয়া জাফিয়ার দিকেই ঝুঁকে পরেছে। আশীর্বাদ রইলো তোমরা কমপক্ষে এসএসসি পাশ কইরো। তয় আরও ভাল হইতো দাদীরেও একটু হাওয়া বদলের জন্য নিয়ে গেলে।

হেলাল উদ্দিন লিখেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সদ্যপ্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও তাঁদের দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান মালয়েশিয়া চলে গেছেন। দাদীকে সাথে নিয়ে গেলে দেশটা পেট্রল বোমা থেকে রেহাই পেতো।

শারমিন জাহান পল্লবী লিখেছেন, নিজের মেয়েদের পরীক্ষার জন্য চলে গেছে মালয়েশিয়া! আর বাংলাদেশে যারা এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে তাদের বেলায়, "কিসের পরীক্ষা কিসের কি, আগে আইনের শাসন।" আসলেই তো, যারা জনগণ কে পেট্রল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে জনগনের অধিকার আদায় করে তাদের কাছে তো আইনের শাসনই তো বড় হবে! আমরা ম্যাংগো পিপল কেন যে কিছু বুঝি না!!!

এএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।