চাই কৃষিজমির পরিকল্পিত ব্যবহার


প্রকাশিত: ০৪:০৭ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির ওপরই এদেশের অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিশেষ করে দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে যে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের দরকার হয় তা আসে কৃষিজমি থেকেই। কিন্তু দিন দিন এই জমি কমে যাচ্ছে। কৃষি জমির পরিমাণ এতোটাই দ্রুত কমছে যে তা রীতিমত উদ্বেগজনক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় কৃষি জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। দরকার হলে এ ব্যাপারে আইন করে হলেও কৃষি জমি রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধিই কৃষি জমি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ঘর-বাড়ি। যার অধিকাংশ তৈরি হচ্ছে কৃষি জমিতে। এছাড়া জনসংখ্যা বাড়ার প্রভাব পড়ছে অন্যান্য ক্ষেত্রে। নতুন রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মাণ করতে হচ্ছে। বাড়ছে শিল্পকারখানা। এসবের জন্য কৃষি জমিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীভাঙনের ফলেও কৃষি জমি কমছে। এসব কারণে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কৃষি জমি রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

সহযোগী একটি দৈনিকের এ সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, প্রতিবছর দেশে কৃষিজমি কমছে ৮২ হাজার হেক্টর, যা মোট জমির ১ শতাংশ। কৃষিশুমারি ১৯৮৪ ও ২০০৮-এর মধ্যে তুলনা থেকে দেখা যায়, চাষকৃত এলাকার পরিমাণ কমেছে সাত লাখ ৩৩ হাজার একর, অর্থাৎ ২৪ বছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ।  কৃষিজমি যে হারে কমছে তাকে উদ্বেগজনক বলছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষজ্ঞের মতে, প্রতিবছর দেশের জনসংখ্যায় যোগ হওয়া নতুন মুখের জন্য সাড়ে তিন লাখ টন বাড়তি চালের দরকার হয়। একদিকে খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া এবং অন্যদিকে কৃষিজমি কমে যাওয়া রীতিমত উদ্বেগজনক ব্যাপার। এ অবস্থায় জমির পরিকল্পিত ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।

সীমিত আয়তনের বাংলাদেশে জমি খুবই মূল্যবান; এখানে ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রতি ইঞ্চি জমি হিসাব করে ব্যবহার করতে হবে। অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও নগরায়নের কারণে দেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। আবাদি জমি কমে যাওয়ার কারণে বছরে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন কম হচ্ছে। আবাদি জমি যেভাবে কমছে, তাতে দেশে আগামীতে খাদ্য নিরাপত্তা হমকির সম্মুখীন হবে। তাই সারাদেশে জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি জমির পরিকল্পিত ব্যবহারের বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতা দরকার। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে দেশে সংরক্ষিত কৃষিজমি ও বনভূমির পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সঙ্গে নগরায়ণ ও উন্নয়ন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে জমির পরিকল্পিত ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।