কথায় নয় কাজে প্রমাণ দিতে হবে
নানা আশাবাদের মধ্য দিয়ে শুক্রবার শেষ হলো ডিসি সম্মেলন। চারদিনে মোট ১৮টি কার্য অধিবেশন হয়েছে। এ অধিবেশনে ২৮৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবের বিষয়ে বিবেচনা করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ডিসিদের পক্ষ থেকেও যেমন নানা দাবি দাওয়া ও অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়েছে তেমনি প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিরাও নানা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে জেলা প্রশাসকদের আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখা। জঙ্গিবাদ দমনে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রশাসনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি সম্ভব হলে জঙ্গিবাদসহ অন্যান্য আর্থ-সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া কোনো কঠিন বিষয় হবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে জঙ্গি দমনের যুদ্ধ চলছে, উন্নয়নের যুদ্ধ চলছে, সুশাসন প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ চলছে। এ তিন যুদ্ধে জেলা প্রশাসকদের সংবিধানের নির্দেশিত চার নীতির উপরে থেকে ভূমিকা রাখার জায়গা আছে। আমরা মনে করি গণপ্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে এ তিন যুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা রাখা ডিসিদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। আমরা সেই কর্তব্য পালনের আহ্বান জানিয়েছি।’ নিশ্চয়ই দেশের প্রতিটি মানুষ আজ জঙ্গিবাদের অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। এ জন্য জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এ ধরনের সম্মেলনে অনেক ধরনের কথা হয়। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করাই আসল কথা।ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২১টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নির্দেশনা দিয়েছেন। যার সবগুলোই গুরুত্ববাহী।নারী-শিশু নির্যাতন এবং পাচার, মাদকের অপব্যবহার, যৌতুক, ইভ টিজিং ও বাল্যবিয়ের মতো সমস্যাগুলোর কথা উঠে এসেছে। এছাড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। একইসঙ্গে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী রক্ষা, দূষণ মুক্ত ও ফেরিঘাটের চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ নদীর ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সহযোগিতা নিয়ে এগুতে হবে। দেখা যায় অনেক ধরনের কমিটি হয় কিন্তু সেগুলোতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে এক ধরনের ঔদাসীন্য দেখানো হয়। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থির উন্নতি হবে না। বিশেষ করে জঙ্গিবাদের হিংস্র থাবা থেকে বাঁচতে হলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ সামাজিক সমস্যাগুলোর ব্যাপারেও আরো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করবো ডিসি সম্মেলনে যে সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা পালনে সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক ও দায়িত্বশীল হবেন।
এইচআর/এমএস