তারুণ্যের এপিঠ ওপিঠ


প্রকাশিত: ০৪:১০ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৬

জুলাই মাসের ১ তারিখ আমি দেশের বাইরে। বাংলাদেশের ইতিহাসের নৃশংসতম একটি হত্যাকাণ্ডের প্রক্রিয়া যখন শুরু হয়েছে আমি তার কিছুক্ষণের মাঝে খবরটি পেয়ে গেছি। শুধু আমি নই সারা পৃথিবীর প্রায় সব মানুষ সেই খবরটি জেনে গিয়েছে, সিএনএন যেরকম উৎসাহ উদ্দীপনা এবং উত্তেজনার সাথে সেই খবরটি প্রচার করেছে আমি আমার জীবনে সেরকমভাবে এ ধরনের কোনো খবরকে প্রচার হতে দেখিনি। গুলশানের সেই অভিশপ্ত কাফের ভিতরে কী ঘটেছে সেটি সংবাদমাধ্যমে এসেছে রাত পোহানোর পর, কিন্তু ভাসাভাসা ভাবে; সবকিছুই সবাই জেনে গেছে সেই রাতেই। আমিও জেনেছি এবং গভীর বিষাদে ডুবে যাওয়া বলতে যা বোঝায় বহুদিন পর আমি সেটি অনুভব করেছি। যন্ত্রের মত সবকিছু করে গেছি কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যেও মনের ভেতর থেকে সেই কষ্টটুকু সরাতে পারিনি। এতজন বিদেশি মানুষকে আমাদের দেশের মাটিতে এরকম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে আমরা তাদের আপনজনের কাছে কীভাবে মুখ তুলে তাকাব? শুধু বিদেশি নয় আমাদের দেশের তরুণ-তরুণীদেরও হত্যা করা হয়েছে, শুধুমাত্র তাদের পোশাক কিংবা তাদের পরিচয় হত্যাকারীদের পছন্দ হয়নি বলে। মানুষের জীবন এতো সহজ একটি পণ্য, এতো সহজে তাকে নিঃশেষ করে দেওয়া যায়?

পরদিন হত্যাকারীদের ছবি দেখে দেশের সব মানুষের মতো আমিও বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি ঠিক এই বয়সের, এই মানসিকতার ছেলে-মেয়েদের সাথে জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি। আমার ধারণা ছিল আমি বুঝি এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের চিন্তা-ভাবনার জগৎটি একটুখানি হলেও বুঝতে পারি। আমি এখন জানি আমার ধারণা সত্যি নয়, আমি সারা জীবন চেষ্টা করলেও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র কিংবা ধারালো চাপাতি হাতে হাসি মুখের এই তরুণগুলোর মনোজগৎটি কোনোভাবে অনুভব করতে পারব না। শুধুমাত্র ধর্মের কোনো এক ধরনের ব্যাখা দিয়ে সম্পূর্ণ নিরপরাধ কিছু মানুষ, কিছু মহিলা, কিছু তরুণ-তরুণীকে বিন্দুমাত্র অপরাধবোধ ছাড়া ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে কিংবা কুপিয়ে হত্যা করতে শেখানো যায়, সেটি একেবারে নিজের চোখের সামনে দেখেও আমি বিশ্বাস করতে পারি না। দেশের বাইরে বসে আমার কিছু করার নেই তাই শুধুমাত্র ইন্টারনেটে খবর পড়ি, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলো পড়ি। দেশ-বিদেশের অনেক বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবী জ্ঞানীগুণী মানুষেরা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন কিংবা বোঝার চেষ্টা করেছেন, তারা ঘটনার ব্যাখ্যা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন, আলোচনা সমালোচনা করেছেন, কী করতে হবে তার উপদেশ দিয়েছেন। আমার পক্ষে তার কিছুই করা সম্ভব না, যে বিষয়টা আমি বুঝতেই পারিনি আমি কেমন করে সেটি নিয়ে আলোচনা করব?

পরিবারের কেউ মারা গেলে সব আপনজনেরা যেরকম একত্র হয়ে দুঃখটা একে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে নেয় আমি সেরকম কিছু একটা করতে চাইছি। মনের দুঃখটা সবার সাথে ভাগাভাগি করতে চাইছি। পৃথিবীর নানা দেশের যে মানুষগুলো এই দেশে এসে প্রাণ হারিয়েছে সম্ভব হলে আমি তাদের আপনজনের হাত ধরে মাথা নিচু করে ক্ষমতা চাইতাম। আমার নিজের দেশের যে তরুণ-তরুণীরা মারা গিয়েছে তাদের আপনজনের হাত ধরে মাথা নিচু করে ক্ষমা চাইতাম। আমার নিজের দেশের যে তরুণ-তরুণীরা, যারা মারা গিয়েছে তাদের আপনজনের কাছে আসলে আমাদের ক্ষমা চাইবারও ভাষা নেই। শুধু তাদের বলতে চাই এই তরুণ-তরুণীগুলো যেরকম তাদের সন্তান, তাদের ভাই কিংবা বোন, তারা আসলে ঠিক একই রকমভাবে আমাদের সন্তান, আমাদের ভাই কিংবা বোন। তাদের আপনজনেরা যেরকম কষ্ট পাচ্ছেন, আমরাও ঠিক একই রকম কষ্ট পাচ্ছি।

২.
এরকম হত্যাকাণ্ড যে বাংলাদেশে এই প্রথম হয়েছে তা নয়। প্রথম গণজাগরণমঞ্চ শুরু হওয়ার পর ব্লগার রাজীব হায়দারকে দিয়ে শুরু হয়েছিল (তখনো হত্যাকারীরা ছিল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র, বিত্তশালী পরিবারের সন্তানেরা)। সেই সময় সরকার একই সাথে কার্যকর এবং মানবিক ভূমিকা রেখেছিল। তারপর কীভাবে কীভাবে জানি দেশের মানুষকে ব্লগার, নাস্তিক, এভাবে ভাগ করা হতে থাকল এবং আমারা দেখতে শুরু করলাম কাকে হত্যা করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করছে সেই হত্যাকাণ্ডটিকে প্রকাশ্যে নিন্দা করা যাবে কি না। কোনো কোনো হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলাই হঠাৎ করে “স্পর্শকাতর” বিষয় হয়ে গেল। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনন্তকে হত্যা করার পর ক্যাম্পাসে আয়োজন করা শোক মিছিলে এই বিষয়টা নিয়ে আমি ক্ষোভ প্রকাশ করার পর হঠাৎ করে ছাত্রলীগের ছেলেরাই সিলেট শহরে আমার বিরুদ্ধে মিটিং-মিছিল মানববন্ধন শুরু করে দিল।

হত্যাকাণ্ডগুলো থামানো যায়নি, সেগুলো ধীরে ধীরে আরো বিস্তৃত হতে শুরু করেছিল; আমরা দেখতে শুরু করলাম শুধুমাত্র ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণেই পূজারী, ধর্মযাজক কিংবা পীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক, মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী লেখক, প্রকাশক, এলজিবিটি-কর্মী কিংবা বিদেশি মানুষ কেউই আর বাকি রইল না। তখন আমরা আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করতে শুরু করলাম, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর সরকার প্রমাণ করার চেষ্টা করতে লাগল এই জঙ্গি হত্যাকাণ্ড একান্তভাবেই আমাদের দেশীয় জঙ্গি, বাইরের জঙ্গিদের সাথে এর কোনো যোগাযোগ নেই। আবার সেই একইভাবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান কিংবা বিদেশি জঙ্গিরা প্রমাণ করার চেষ্টা করতে লাগল এগুলো আন্তর্জাতিক জঙ্গি বাহিনীর অংশ। বিষয়টি নিশ্চয়ই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ, অরলান্ডোতে একজন মানুষ কিছুদিন আগে একটা নাইট ক্লাবে গুলি করে প্রায় পঞ্চাশজন মানুষকে মেরে ফেলেছিল। হত্যাকাণ্ড শুরু করার আগে সে টেলিফোন করে নিজেকে আইএস-এর একজন কর্মী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল কিন্তু তারপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দাবি করেছে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আইএস-এর কোনো সম্পর্ক নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে হিংসার ‘আদর্শ’ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সত্যিকারের যোগাযোগের প্রয়োজন নেই, একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের যোগাযোগই যথেষ্ট। এই দেশের কিছু জঙ্গি তরুণের কাছে আইএস একটা ব্র্যান্ডের মতো, তারা এই দেশে সেই ব্র্যান্ডটির ফ্রেঞ্চাইস নিতে চায়। আইএস যে নৃশংসতা করে পৃথিবীতে নিজেদের পরিচিত করেছে বাংলাদেশের কিছু জঙ্গি যদি সেই একই নৃশংসতা করে দেখাতে পারে তাহলে তাদের ফ্রেঞ্চাইস দিতে বাধা কোথায়?

মধ্যপ্রাচ্যে আইএস যখন ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে উঠছে তখন একেবারে বিনা পরিশ্রমে তারা যদি পৃথিবীর অন্য দেশেও নিজেদের একটু প্রচার করতে পারে তাহলে তারা কেন সেই সুযোগ নেবে না? কাজেই এই দেশে আইএস আছে কিংবা আইএস নেই এই বিতর্কটি সবাইকে সন্তুষ্ট করে শেষ করা যাবে তা নয়। এই দেশে আইএস-এর আদর্শে বিশ্বাস করে একেবারে নিরপরাধ নারী-পুরুষকে হত্যা করার মতো কিছু তরুণের জন্ম হয়েছে এটিই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।

একজন তরুণের শুধু যদি এরকম একটি মানসিকতা হয়ে যায় তাহলেই সে যে এই দেশে ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারবে তা নয়। এরকম ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্যে তার অস্ত্রের দরকার গোলাবারুদ দরকার, অস্ত্র ব্যবহার করার ট্রেনিং দরকার। আমাদের খুবই দুর্ভাগ্য এই তরুণদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে এবং সেই অস্ত্র ব্যবহার করার ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। কারা এই কাজটি করেছে আমরা সেটি জানি না, তারা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েগেছে, এই দেশের মাটি থেকে এই জঙ্গিদের নির্মূল করতে হলে ধরা-ছোঁয়ার বাইরের সেই আদৃশ্য মানুষগুলোকে ধরতে হবে। তারা কারা আমরা জানি না, শুধুমাত্র অনুমান করতে পারি আমাদের এই দেশটির জন্যে তাদের বিন্দুমাত্র মমতা নেই। পৃথিবীর সামনে এই দেশটিকে অসম্মান করা ছাড়া তাদের আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে আমি জানি না।

৩.
গুলশান কাফের ঘটনা ঘটে যাবার পর দেশ থেকে আমার কাছে অনেক ই-মেইল এসেছে যেখানে কম বয়সী ছেলে-মেয়েরা দেশের অবস্থা নিয়ে একধরনের ভয় আতংক হতাশা এবং দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমি তাদের মনের অবস্থাটা পরিস্কারভাবে বুঝতে পারি। আমি নিজে যেভাবে শান্ত্বনা পাওয়ার চেষ্টা করি তাদের ঘুরেফিরে সেই কথাগুলোই বলেছি। আমি তাদের বলেছি এটি যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের সমস্যা তা নয় সারা পৃথিবীতেই এই ব্যাপারগুলো ঘটছে। ইউরোপের বড় বড় দেশগুলোতেও হুবহু একই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে, তাদের হাজার রকম আধুনিক প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ পাওয়া পুলিশ, নিখুঁত ইন্টেলিজেন্স থাকার পরও মাঝে মাঝেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। আমি আগে বেশ কয়েকবার ইউরোপে এসেছি, দেশগুলোকে সব সময়েই ছিমছাম শান্তিপূর্ণ মনে হয়েছে। এবারে একটা পার্থক্য চোখে পড়ছে এয়ারপোর্টে, শহরের মোড়ে, ট্রেন স্টেশনে একটু পর পর সশস্ত্র পুলিশ। প্লেনে ওঠার আগে যেভাবে স্যুটকেস এক্সরে করে প্লেনে তোলা হয় এখন ট্রেনের বেলাতেও তাই। যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নানা রকম নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। সারা পৃথিবীতেই যদি মানুষকে বাড়তি সতর্কতার ভেতর দিয়ে যেতে হয় তাহলে বাংলাদেশ তার বাইরে কীভাবে থাকবে?

তবে বাংলাদেশকে নিয়ে আমি ভিন্ন একটি বিষয়ে আশাবাদী। সেটি হচ্ছে এই দেশের মানুষের ভেতর এক ধরনের স্নেহপ্রবণ কোমল সারল্য আছে, তারা ধর্মপ্রাণ এবং ধর্মভীরু এবং কখনোই ধর্মান্ধ নয়। তারা কোনো কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি পছন্দ করে না। উগ্র মানসিকতার দেশগুলোতে জঙ্গিবাদ যেভাবে শিকড় গজিয়ে ফেলতে পারবে এই দেশে সেটি কখনো সম্ভব হবে না। সরকার যদি কখনো এদের পক্ষে চলে যায় তখন পুরো ব্যাপারটি বিপজ্জনক হতে পারে, বিএনপি-এর সাথে জামায়াত ক্ষমতায় চলে আসার পর প্রায় সেরকম একটি ঘটনা ঘটে গিয়েছিল কিন্তু আমরা সেটি পার হয়ে এসেছি।

আমি যেহেতু এই মুহূর্তে দেশের বাইরে তাই সরাসরি দেশের হৃদস্পন্দনটি ধরতে পারছি না, তবে ইন্টারনেটে দেশের খবরাখবর পড়ে অনুমান করছি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার যথেষ্ট কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ‘বিষয়গুলো স্পর্শকাতর’ তাই এগুলো নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না সেই মনোভাবেরও পরিবর্তন হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে নিষিদ্ধ হয়ে থাকা জাকির নায়েককেও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে সমস্ত তরুণেরা অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের অনেকেই যে জাকির নায়েকের বক্তব্য নিয়মিত শুনতো সেটি মোটেও বিস্ময়ের কোনো ব্যাপার নয়। নতুন পৃথিবীতে মানুষ অনেক বেশি সহিষ্ণু হবে, তারা শুধু যে অন্য ধর্ম, অন্য বর্ণ, অন্য কালচারের মানুষকে বুক আগলে রক্ষা করবে তা নয়, এই পৃথিবীর পশু পাখি গাছপালাকেও রক্ষা করবে। তাই যখন কেউ নিজের ধর্মকে ব্যাখ্যা করার জন্য অন্য ধর্মকে উপহাস করতে থাকে সেটি পৃথিবীর জন্যে শুভ হতে পারে না।

গুলশানের কাফেতে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটে যাবার পর আমার ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই নিজের মত করে কিছু একটা করার চেষ্টা করছে। কম বয়সী কোনো ছেলে বা মেয়ে না বুঝে যেন জঙ্গিদের পেতে রাখা কোনো ফাঁদে পা দিয়ে না ফেলে সেজন্য তাদের কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সেটিও তারা প্রচার করার চেষ্টা করছে। আমার মনে হয় যেটা ঘটে গেছে সেটা নিয়ে শুধু আলোচনা সমালোচনা হাহাকার বিষোদগার না করে এরকম একটা কাজ করার গুরুত্ব অনেক বেশি।

আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারব না বিত্তশালী পরিবার থেকে উঠে আসা ভালো পরিবেশে লেখাপড়া করা কিছু তরুণের অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতার বিষয়টি আমরা কেউই গ্রহণ করতে পারিনি। এই ঘটনার পাশাপাশি যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি কী কম অবিশ্বাস্য? ঠিক একই বয়সের তরুণ ফারাজ আইয়াজ হোসেন, গুলশান কাফেতে সে যখন বুঝতে পেরেছে তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও তার বান্ধবীদের মেরে ফেলা হবে, তখন সে তাদের ফেলে রেখে নিজের জীবন বাঁচাতে রাজী হয়নি। তাকেও নিষ্ঠুরভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এই খবরটি পড়ে সারা পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠেছে। মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসার এর থেকে বড় উদাহরণ পৃথিবীতে আর কয়টি আছে?

যে দেশের মাটি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মতো তরুণের জন্ম দেয় আমি কেন সেই দেশকে নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হব?

লেখক : অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।