নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করুন


প্রকাশিত: ০২:৩৯ এএম, ০৪ জুলাই ২০১৬

প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করার জন্য ঘরমুখো মানুষ শহর ছাড়ছেন। এবার নয় দিনের ছুটি পাওয়া গেছে। এ যেন ঘরমুখো মানুষের বাড়তি এক পাওয়া। সে জন্য শুক্রবার থেকেই ঘরমুখো মানুষ কর্মস্থল ছাড়া শুরু করেছে। ওইদিন সকাল থেকেই রাজধানীর লঞ্চ, বাসসহ রেল স্টেশনে ছিল ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে- সেটি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ফোর লেন উদ্বোধন করেছেন। এটাকে তিনি ঈদের উপহার বলেছেন। দুটি মহাসড়কের ফোর লেন চালু হওয়ায় যানজট নিরসনে তা ভূমিকা রাখবে এটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।

এছাড়া এবার মহাসড়কে যানজট নিরসনে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ১১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান নিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট  জেলা পুলিশ কাজ করছে। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে পুলিশের এ তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।

মহাসড়কে যানজট নিরসনে বেশকিছু করণীয় রয়েছে। ফিডার রুট থেকে মহাসড়কে অল্প গতির যানবাহন না ওঠা, মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল বন্ধ করা, সড়কের পাশ থেকে বাজার দূরে সরিয়ে নেয়া, যেসব স্পটে যানজট হয় সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রেনের ব্যবস্থা রাখা, সকল বাস টার্মিনালসহ মহাসড়কে পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা রাখা, বিকল হওয়া গাড়ি দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে জোর নজর দিতে হবে। এছাড়াও যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে ঢাকায় কর্মরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের একদিনে ছুটি না দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ছুটি দেয়া যেতে পারে। তাহলে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে ৩০ লাখ পোশাক শ্রমিক। পাশাপাশি মহাসড়কে কোনোভাবেই যেন লক্কর ঝক্কর বাস না নামতে পারে এ ব্যাপারেও পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে লঞ্চ-স্টিমারে এবারো অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। দুঃখজনক হচ্ছে আশঙ্কায়ই সত্যি হলো। আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও স্টিমারের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এসময় অন্তত আরো ১০ জন আহত হয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীপথের যাত্রা কীভাবে ঝুঁকিমুক্ত রাখা যায় সে ব্যাপারেও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। রেলপথেও যাত্রী বিড়ম্বনা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। রেলের শিডিউল বিপর্যয় রোধ করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

ঈদে প্রতি বছরই লাখ লাখ মানুষ তাদের কর্মস্থল ছেড়ে যায় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উৎসব করতে। সেই যাত্রাকে যতোটা সম্ভব বিড়ম্বনামুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকাই কাম্য। যাত্রাপথের বিড়ম্বনায় ঈদের আনন্দের সামান্য ঘাটতিও যেন না হয় সেটা নিশ্চিত করাই এই মুহূর্তের কর্তব্য।  

এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।