পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাশুল গুণবে কোমলমতি শিশুরা?


প্রকাশিত: ০৫:৩৮ এএম, ২৮ জুন ২০১৬

শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে এখন যে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে এর মাশুল গুণতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। তাদের অভিভাবকদের তো বটেই। এটা খুবই দুঃখজনক যে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। অথচ অনেকবার অনেক কমিশন হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিও প্রণীত হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি দোদুল্যমানতা রয়েই গেছে। একেকবার একেক ধরনের শিক্ষা পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে। যা শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে বাধ্য।  

প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার সিদ্ধান্তের কথা বলা হলো। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়লো শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কপালে। যদিও দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার সুপারিশ ছিল ২০১০ সালে প্রণীত শিক্ষানীতিতে। যেখানে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার কথা বলা হয়েছিল।কিন্তু এ নিয়ে গত কয়েক বছর আর কোনো আলোচনা হয়নি। হঠাৎ করে বলা হলো এ বছরে থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করা হচ্ছে এ বছর থেকেই। অথচ এর সঙ্গে শিক্ষক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু হরে অবকাঠামোগত অনেক বিষয়ই জড়িত। আশার কথা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।

শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যের কোটি কোটি পাঠ্যপুস্তক। সংযুক্ত হচ্ছে নতুন সিলেবাস। পাঠ্যসূচিতেও আসছে পরিবর্তন। সৃজনশীল পদ্ধতিও চালু হয়েছে। বেড়েছে পাসের হার।  দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে এটা করতে গিয়ে ক্রমাগত পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের গিনিপিগ বানানো যাবে না। একবার বলা হচ্ছে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা উঠে যাবে। আবার বলা হচ্ছে থাকবে। সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। শিক্ষকদের সম্যক ধারণা বা প্রশিক্ষণ না দিয়ে কোনো পদ্ধতি চালু করলে আখেরে তার ফল পাওয়া যাবে না। তাই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। শিক্ষা পদ্ধতির লক্ষ্য যেন না হয় শুধু পাসের হার বাড়ানো। আগামী প্রজন্ম যাতে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেদিক বিবেচনায় গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।