রেলযোগাযোগে এই বৈপরীত্য কেন?

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৫:৩০ এএম, ২৬ জুন ২০১৬

দ্রুতগামী, নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক বাহন হিসেবে বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও রেলওয়ে সমাদৃত। রেলযাত্রায় এবার যুক্ত হলো ‘সোনার বাংলা’। গতকাল রোববার কমলাপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী সর্বশেষ এবং সর্বাধুনিক ট্রেন হিসেবে যুক্ত হওয়া ‘সোনার বাংলা’ এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি সারাদেশকে রেলওয়ের আওতায় নিয়ে আসার কথা বলেন। আজ সোমবার মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রেলওয়ে আরো বিস্তৃত হবে।

বৃটিশ আমল থেকেই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রয়েছে আমাদের দেশে। সে হিসেবে আমাদের রেলওয়ের বয়স দেড়শ’ বছর ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে রেল পরিবহনের সেবার মানের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে তবে তা সময়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। সর্বসাকুল্যে ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু সেবার মান কতোটা বেড়েছে সে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। এছাড়া রেললাইন বৃদ্ধি পেলেও  সংস্কারের অভাবে স্থানে স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রেলওয়ের সেতু গুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। সারাদেশে প্রায় চারশত সেতু বয়সের ভার এবং সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ২ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ব্রিজ রয়েছে ৩ হাজার ৩৮০টি। এর মধ্যে ৪৭৭টির দৈর্ঘ কমপক্ষে ৬০ ফুট। এর চেয়ে কম দৈর্ঘের ব্রিজ রয়েছে প্রায় তিন হাজার। সময়ানুযায়ী এসব সেতু  সংস্কার করার নিয়ম থাকলেও  তা করা হয়নি। এ ব্যাপারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের জবাব হচ্ছে- তাদের চেষ্টা থাকলেও অর্থ সংকটের কারণে সেতু সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে নতুন নতুন রেলসার্ভিস চালু হবে অন্যদিকে রেল চলাচল থাকবে ঝুঁকিপূর্ণ-এই বৈপরীত্য কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

সাম্প্রতিক সময়ে রেলের বেশ উন্নতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার পর দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ডুয়েলগেজ লাইন হওয়ায় যমুনার এপাড়-ওপাড়ের মধ্যকার ট্রেন যোগাযোগ সহজ ও সময়-সাশ্রয়ী হয়েছে। নির্মিতব্য পদ্মা সেতুতেও রয়েছে রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা। এই সেতু উদ্বোধন হলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বহুল কাঙ্খিত রেল যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। এসবই আশার কথা। এখন জরাজীর্ণ রেলসেতু ও ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইনের সংস্কার কাজ অব্যাহত রেখে রেল ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখাই হবে চ্যালেঞ্জ।

এইচআর/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।