অরলান্ডোর চিঠি

‘ম্যাটস’ নিয়ে আন্দোলন: আমাদের অভিজ্ঞতা

ডা. বিএম আতিকুজ্জামান
ডা. বিএম আতিকুজ্জামান ডা. বিএম আতিকুজ্জামান
প্রকাশিত: ১১:১১ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২৪

বাংলাদেশে ডাক্তাররা এ মুহূর্তে আন্দোলনে নেমেছেন ‘ম্যাটস’ নিয়ে। ‘ম্যাটস’ (MATS) অর্থ ‘Medical Assistant training School’।

আমেরিকার প্রেক্ষাপটে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের (এম এ) ভূমিকাটা বলতে চাই।

এম এ ডাক্তারদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন এখানে। রোগী ডাক্তারের চেম্বারে আসার পর তাদের ইতিহাস সংগ্রহ, ভাইটালস (রক্তচাপ বা পালস) দেখা, তাদের সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করা, তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা রেফারেলের ব্যাপারে সাহায্য করা, রক্ত সংগ্রহ করা, ইন্স্যুরেন্স নিয়ে কাজ করা, ফার্মিসিতে ওষুধের জন্য কল করা নানাবিধ কাজ তারা করে। এম এর সাহায্য ডাক্তারদের অফিসে আবশ্যিক।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে হলে হাইস্কুল বা সমপর্যায়ের পডাশোনা করতে হয়। ছয় থেকে বারো মাসের কোর্স করতে হয়। তারপর সার্টিফিকেট কোর্স পাস করতে হয়। ওয়াশিংটন ছাড়া অন্য কোনো স্টেটে তাদের লাইসেন্স লাগে না। তবে আমেরিকান অ্যাসোশিয়েশন অব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের সার্টিফিকেট তাদের থাকতে হবে।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট (এম এ) কোনো ডাক্তারের সরাসরি তত্ত্বাবধান ছাড়া কাজ করতে পারেন না। তারা রোগীর চিকিৎসা সেবার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেন না। তারা নিজ থেকে একাকী কোনো রোগী দেখতে পারেন না বা প্রেসক্রিপশন দেন না।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাক্তারদের মতো সাদা কোট পরেন না। তাদের বেতন ডাক্তারদের বেতনের প্রায় চার-পাঁচগুণ কম হয়।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা সাধারণত দীর্ঘদিন এ কাজ করেন না। এটি তাদের ভবিষ্যতের ফুটস্টেপ বা পথ। তারা ভবিষ্যতে নার্স বা নার্স প্রাকটিশনার হন বা স্বাস্থ্য প্রশাসনের নানা কাজ করেন।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের ভূমিকা অপরিসীম তবে সীমাবদ্ধ। এটি কঠোর ভাবে পালিত হয়।

ছবিতে আমাদের মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের সাথে বাংলাদেশ থেকে আসা তরুন চিকিৎসকদের ছবি
ছবিতে আমাদের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের সাথে বাংলাদেশ থেকে আসা তরুণ চিকিৎসকদের ছবি

চিকিৎসা সেবার পিডামিডের শীর্ষে থাকেন ডাক্তার। সবাই সেখানে পৌঁছাতে চান। আর তাই কঠোর নিয়ম এবং আইন রয়েছে তা শক্তভাবে রক্ষার জন্য।

আমি যখন বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজে পড়েছি, তখন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে কিছু শুনিনি।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ডাক্তাররাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এটি তাদের আবশ্যিক কি না। যদি আবশ্যিক হয়, তবে এটার একটা আদর্শ নীতিমালা করতে হবে। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা কঠিনভাবে পালন করতে হবে। তাদের কোর্স কারিকুলাম তারা ঠিক করবেন। নতুবা ডাক্তাররা নিজেদের বিপদ ডেকে নিয়ে আসবেন। রোগীরা নিরাপদ থাকবেন না।

আবার একই সাথে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের আবশ্যিকতা চিন্তা করে তাদের যথাযথ কাজে লাগালে চিকিৎসা সেবার উন্নতি হবে, রোগীদের সন্তুষ্টি বাড়বে সেটাও ভাবতে হবে।

লেখক: আমেরিকার অরলান্ডো প্রবাসী চিকিৎসক।

এইচআর/জেআইএম/ফারুক

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।