স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই

অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন
অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন , সদস্য (ইউজিসি)। পরিচালক (বিএসসিএল)। সভাপতি (ইআরডিএফবি)
প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ১৮ জুলাই ২০২৩

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ফিরে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে নানা সংকটের মধ্যেও আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

পরে তিনি সব সংকট মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুর দেশকে এগিয়ে নেন। এমনকি জেল-জুলুম, অত্যাচার কোনো কিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু। শত প্রতিকূলতাতেও ভেঙে পড়েননি। বরং বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বার বার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেছেন, আবির্ভূত হয়েছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা রূপে। বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়েছেন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। তিনি হয়ে উঠেছেন অনন্য। তিনি যেকোনো সংকটে নির্ভীক থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সব সংকট মোকাবিলার একমাত্র ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংকট কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করেন, যা এখন দৃশ্যমান। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যখন বিশ্বের শীর্ষ সম্পদশালী দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। অথচ তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এ সংকট কাটিয়ে এগিয়ে যায়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে তিনি বিশ্বব্যাপী পেয়েছেন ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ উপাধি। উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ ঘোষণা করেছেন। তার হাত ধরে পাহাড়ে শান্তিচুক্তি, ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানিচুক্তি, সিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে।

সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত হতদরিদ্র, অসহায়, বয়স্ক নারী-পুরুষ, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধীরা মাসিক ভাতা পাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে চলেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় তিনি কাজ করছেন। নতুন প্রজন্মকে তথ্যপ্রযু্ক্তির আলোয় আলোকিত করছেন। আমাদের সৌভাগ্য, শেখ হাসিনার মতো একজন যোগ্য নেত্রী পেয়েছি, নেতৃত্ব পেয়েছি। জনগণ আগামীতেও তার নেতৃত্বের বাংলাদেশ চায় দলান্ধতার জন্য নয় বরং যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যার অসাধারণ নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের কারণে। আমরা ভুলে যাইনি ক্ষমতার জন্য আগুন সন্ত্রাসের ভয়াবহ রাজনীতি।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে গঠিত সংসদে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯৬ সালে প্রথম দেশের প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। পরবর্তীসময়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কারচুপি করে বিএনপি ক্ষমতায় বসে।

এরপর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। সে সময় নেতাকর্মীদের রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা নেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু নেতাকর্মীদের হত্যা, দমন-পীড়ন নয়, ২০০৪ সালে শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান গ্রেনেড হামলা থেকে। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তাঁর ওপর গ্রেনেড হামলার পাশাপাশি গুলিও চালানো হয়।

বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন। এদেশের মানুষকে ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। নতুন বিশ্বে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি শুধু ঘোষণা দিয়েই থেমে নেই। ইতোমধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ শুরু করেছেন। শেখ হাসিনা যদি আওয়ামী লীগের হাল না ধরতেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না হতেন, তাহলে আজ এ উন্নতি, এ অগ্রগতি হয়তো কোনো ভাবেই সম্ভব হতো না।

এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরবর্তীসময়ে আরও কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হয় আওয়ামী লীগ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। প্রায় এক বছর তিনি জেলে কাটান। আর ‘সংস্কার’ ইস্যুতে আওয়ামী লীগের প্রায় সব প্রথম সারির নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। এ সময় সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সভাপতি শেখ হাসিনার পাশে এসে দাঁড়ান। তীব্র গণ-আন্দোলনে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে নির্বাসনে রাখার চেষ্টা করে। ওই অবস্থায় দৃঢ়চিত্তে সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর তার নেতৃত্বে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ভোটে জেতে আওয়ামী লীগ। এখন টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে তিনি। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে এদেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে বহুমাত্রিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছেন। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি বিএনপি-জামায়াতের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য অসংখ্য বার সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে। তবুও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এদেশের মানুষকে ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। নতুন বিশ্বে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি শুধু ঘোষণা দিয়েই থেমে নেই। ইতোমধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ শুরু করেছেন। শেখ হাসিনা যদি আওয়ামী লীগের হাল না ধরতেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না হতেন, তাহলে আজ এ উন্নতি, এ অগ্রগতি হয়তো কোনো ভাবেই সম্ভব হতো না।

লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি); পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল); সভাপতি, এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি), সহ-সভাপতি, আমরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।

এইচআর/ফারুক/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।