স্বপ্ন দেখতে হয়

এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন
এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন , লেখক ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ২৪ জুন ২০২৩

সুখের বাস আত্মার গহীনে। যা সম্পত্তি কিংবা অর্থের ওপর নির্ভর করে না। সুখ কার্যত আত্মকেন্দ্রিক পর্যায়ে মানসিক সূচকের ফলাফলে নিষ্পত্তি হয়। প্রকৃত সুখ হল, নিজেকে প্রকৃতির জীব বলে ঘোষণা করে গড়ে ওঠা সমাজের ভাগ্য নিশ্চিত করার জন্য কর্মী হতে পারা। বড় পরিসরে রাষ্ট্র, আরো বড় পরিসরে এই পৃথিবীর জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারার মধ্যেই সুখ। এদিকে ভূমিকা রাখতে গেলেই মানুষকে স্বপ্ন দেখতে হবে।

একটি মতবাদ প্রচলিত আছে। তা হল, “স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরনের প্রত্যাশা, মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।” এই প্রসঙ্গেই ভারতের সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, তোমার স্বপ্নগুলি সত্য হওয়ার আগে আগে স্বপ্ন দেখতে হবে।

স্বপ্ন, বাংলাদেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। তাঁর প্রতিভাধর কন্যা শেখ হাসিনাও দেখেছেন। দেখতে পেরেছেন বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাওয়ার মধ্যেই রাজনীতিকেরা ফলত সুখ কে আলিঙ্গন করতে পারে। কাজেই কর্মের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকা যায়। সুখী হওয়া যায়। স্বামী বিবেকানন্দ বললেন তাই, “এমন কাজ করে চলো যে তুমি হাসতে হাসতে মরবে… আর জগৎ তোমার জন্য কাঁদবে।”

বঙ্গবন্ধুর জন্য দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জ্যেষ্ঠ মানুষগুলো আজ অব্দি কান্না করে। বিশ্বাস করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য মানুষ এখনই কাঁদে। তাঁর সাহসী পথচলা ও বাংলাদেশের জন্য লড়াই করার সংগ্রামী জীবন চিন্তাশীল জনশ্রেণিকে ভাবায়। আপনি যখন কৃত্রিম সংকটকে পুঁজি করে বলবেন, এই দ্যাখো আওয়ামী লীগ পেরে উঠছে না ! ঠিক তখনই ধুমকেতুর মত করে শেখ হাসিনা উদয় হয়ে বলবে, কী সমস্যা তোমাদের? আপনি বলবেন, বিদ্যুৎ নেই, লোডশেডিং আর লোডশেডিং ! তিনি বলবেন, দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করুন, ঠিক হয়ে যাবে। হয়েও যায়।

শেখ হাসিনা হলেন বাংলাদেশের জন্য আজন্ম মায়ের মত। যার ছায়ায় জনগোষ্ঠী নির্ভার থাকতে পারে। নির্ভার রাখতে পারার মধ্যে থেকে শর্ত পূরণে যেয়ে তিনি যেন অদম্য এক সত্তা। পরাক্রমশালী রাষ্ট্র যখন ভিসানীতি প্রণয়ন করে বলতে থাকবে, এবার সামলাও--- তখন শেখ হাসিনা বলছেন, তোমার দেশে না গেলে কী এসে যায় !

গভীর বিশ্লেষণ, গবেষণা প্রাসঙ্গিকভাবেই সাক্ষ্য দেয় যে, খোদ ভারতের মত দেশের রাষ্ট্রনায়কেরা এমন করে বলার সু সাহস রাখতে পারেন কিনা! একজন শেখ হাসিনার দেশপ্রেম ও নেতৃত্ব অতিকথনে সিদ্ধহস্ত রাজনীতিকদের মন কে গুড়িয়ে দেয়। যারা বলে, তৈরি পোশাক শিল্পের কী হবে, ব্যবসার কি হবে, জাতিসংঘের সাথে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক মিশনের কি হবে--- এমন প্রশ্নগুলোর উত্তরও ওই শেখ হাসিনার কাছে আছে। তোমরা যখন বিদেশি লবিস্ট নিয়োগ করে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কৃষ্টির কু উদ্যোক্তা হও, শেখ হাসিনা তেমন খরার মধ্যে পশলার পর পশলা বৃষ্টি এনে বলে থাকেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে।

বিশ্বায়নের এই পৃথিবীতে প্রতিটি দেশেরই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু কৃত্রিম পন্থায় সুযোগ সড়কের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে বসে থাকে না কালজয়ী রাজনীতিকেরা। শেখ হাসিনা তেমনই এক চরিত্র। একটি বিখ্যাত মতবাদ মনে পড়ে যায়। তা হল, " সুযোগ যদি তোমার দরজায় কড়া না নাড়ে, তবে নতুন একটি দরজা বানাও।"

শেখ হাসিনা মানুষের জন্য যেকোনো উদ্যোগে যাওয়ার সামর্থ্য রাখেন। কারণ, তিনি বাংলাদেশের মানুষগুলোকে ভালোবাসেন। ঝুঁকি নিতে জানেন তিনি। সে কারণেই তাঁর ভালবাসা তালাবদ্ধ হৃদয়ের দরজা মুহূর্তে খুলে দেয় ও দেবে। হৃদয়ের সেই দরজা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে। কিন্তু একজন শেখ হাসিনার লড়াই করার মানসিকতাকে ভালোবাসতে হবে। সব কিছু তাঁর ওপর ছাড়লে হয় না। চার্লি চ্যাপলিনের একটা বিখ্যাত উক্তির কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, আমি বৃষ্টিতে হাঁটি যাতে কেউ আমার অশ্রু দেখতে না পারে।

বাংলাদেশের মানুষের জন্য যে ধরনের কষ্ট শেখ হাসিনা করছেন, তা বাংলার প্রতিটি মানুষের ধারণ করতে হবে। গেল প্রায় সাড়ে ১৪ বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে অর্জন, তাও তো কর্মীরা লিখে, বলে জানানোর জন্যও মানসিকভাবে প্রস্তুত নেই। কেন? রাজশাহীর বদলে যাওয়ার গল্প ইস্যু নিয়ে যদি এই অঞ্চলের মানুষেরা প্রতিটি দিন ধারাভাষ্যে থাকতে পারে, তাহলে পুরো বাংলাদেশে যা যা করা হল, তা তুলে ধরা হচ্ছে না কেন? শেখ হাসিনা যা করতে পেরেছেন তা তুলে ধরতে গেলে প্রায় এক বছর লাগবে নতুন করে তা শুধু জানাতেই।

বাংলাদেশে এখন দৃশ্যমান কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। আওয়ামী লীগের বাইরে। যাদেরকে দেখা যায়, এরা রাজনৈতিক অপশক্তিই। ওই ঘুরেফিরে জামায়াতে ইসলামীর সাহায্য নিয়ে দেশময় অরাজকতা করার পরিকল্পনায় তারা নিজেদেরকে প্রস্তুত করছে। এদেরকে মোকাবিলা করাই যাবে। কৃত্রিম পর্যায়ের বিপ্লব করতে চাইবে তারা, যার সাথে গণমানুষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু মানুষকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে তারা। ওই তারাই কথিত আন্দোলন করবে। খুব সম্ভবত ঈদুল আজহার পর পরই। সুশীল উপদ্রব বাড়বে। আমরা সতর্ক আছি।

কর্মই হল জীবনের ফলাফল নির্ধারণের অস্ত্র। বাংলাদেশের মানুষের জন্য একাগ্রতা নিয়ে শেখ হাসিনার লড়াই চলছে ও চলবে। একমাত্র তাঁর কাছেই নিরাপদ লাল সবুজের দেশ--- সঙ্গত যুক্তিতে পথ হারাবে না বাংলাদেশ।

লেখক: সভাপতিমন্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এইচআর/এএসএম

বাংলাদেশের মানুষের জন্য যে ধরনের কষ্ট শেখ হাসিনা করছেন, তা বাংলার প্রতিটি মানুষের ধারণ করতে হবে। গেল প্রায় সাড়ে ১৪ বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে অর্জন, তাও তো কর্মীরা লিখে, বলে জানানোর জন্যও মানসিকভাবে প্রস্তুত নেই। কেন? রাজশাহীর বদলে যাওয়ার গল্প ইস্যু নিয়ে যদি এই অঞ্চলের মানুষেরা প্রতিটি দিন ধারাভাষ্যে থাকতে পারে, তাহলে পুরো বাংলাদেশে যা যা করা হল, তা তুলে ধরা হচ্ছে না কেন? শেখ হাসিনা যা করতে পেরেছেন তা তুলে ধরতে গেলে প্রায় এক বছর লাগবে নতুন করে তা শুধু জানাতেই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।