এইযে নদী যায় সাগরে

এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন
এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন , লেখক ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

“কাককে মুখে তুলে খাওয়াতে গেলে, সে তোমার চোখ উপড়ে খাবে”- টার্কিশ একটি বিখ্যাত উক্তি। সতর্ক থাকতে হবে তাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় শেখ হাসিনার পথচলায় লক্ষ্য রাখতে হবে, অতি উদার হতে যেয়ে নিজের যেন ক্ষতি না হয়। দেশে একটি পক্ষ তো রয়েছেই, যারা তাঁকে ছোবল মারতে চায়। যারা পদ্মা সেতু নির্মাণ করাটাকে উপেক্ষা করবে, আবার রাত বিরাতে পদ্মা সেতু ব্যবহার করেই নিজেদের গতিপথ নির্ধারণ করে। এই শ্রেণিটির উদ্দেশ্যে তিনি বললেনও, "যত উজান ঠেলে হোক, নৌকা এগিয়ে যাবে।"

রাজনীতির জলরাশিতে নৌকা তাই শক্ত যান বলে প্রমাণিত সত্যও। যার কান্ডারি শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণে দিনে দিনে অদম্য মানসের সত্তায় ফিরে যেয়ে বলতে পারেন, তোমাদের জন্যই তো বেঁচে আছি। নৌকা আজ যে নদীতে, এগিয়ে যেয়ে সাগরের প্রান্তেই পৌঁছাবে। প্রতীকী উদাহরণে থেকে বলা যায় যে, নাও বাইয়া উজানে যেয়েও নৌকার মাঝির কন্ঠে জয় বাংলা ধ্বনিত হবে এবং কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছুতে তিনি অপশক্তি মোকাবিলায় সিক্ত হয়ে বাংলাদেশের হাল ধরে থাকবেন।

সমস্যা হয়ে যাচ্ছে দুই ঘরানার রাজনৈতিক স্বজনের। একটি, সুশীল পক্ষ। যারা খুবই লোভী। অন্যটি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মে রীতিমত হিংসায় বাস করে। যে অংশটি জাতীয়তাবাদীর নামে দেশিয় অপশক্তি হিসাবে বিবেচিত রাজনৈতিক পক্ষ বিএনপি। তলে তলে সুশীল ও বিএনপির মধ্যকার গোপন সম্পর্ক একটা আছে। হ্যাঁ, তাই আরেকটি মতবাদ মনে পড়ছে। তা হল, “লোভ আর হিংসা পরস্পরের নিকট আত্মীয়”।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে তামাশাও দেখতে পারা যাচ্ছে। যে যা খুশী বলছে। প্রাইমারি স্কুলের কোন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর যোগ্যতা না থাকলেও কেহ কেহ জাতীয় সংসদে বসে যেতে চাইছে। আবার কোন ধরণের অর্থবহ আন্দোলন না করতে পারলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সরকার বেকায়দায় পড়ে গেছে! এমন উক্তি শুনে আরেকটি উক্তি রেখে মির্জা ফখরুলদের জবাব দিতে ইচ্ছে করে। যেমন, “অন্যদের তামাশা সহ্য করে ভদ্রতা দেখালে, তা এক সময়ে চরম রাগে পরিণত হয়”।

বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা নেই, তা বলব না। ড্যানিশ মতবাদের ওপর ভর করে সারাদেশের নেতাকর্মীদের তাই বলতে চাই, “পানির গভীরতা নাকের কাছে উঠে আসার আগেই সাঁতার শিখে নাও”।

বিএনপির উদ্দেশ্যে আমার সরল বার্তা। তা হল, জার্মান প্রবাদের মত করেই বলতে চাই যে, “অকর্মার কাছেও মাঝে মাঝে সৌভাগ্য আসে, কিন্তু কখনওই বেশিক্ষণ থাকে না”। বেগম জিয়া বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রে আড়াইবারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এতিমের টাকা আত্মসাত থেকে শুরু করে দুর্নীতি, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন- এসব তাঁকে গরীবের দেশের ধনী রাণী বানিয়েছিল। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন তিনি করতে পারেন নি। দণ্ডিত এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছেই এখনো বিএনপির নেতৃত্ব। তিনি যা বলবেন, ফলত দলটি সেভাবেই এগোবে।

পর্তুগিজ প্রবাদ মাথায় রেখে তাই মির্জা ফখরুলদেরকে বলতে চাই, এই তো সেদিন রাত করে আপনি ও আপনারা দেখা করলেন। বেগম জিয়ার সাথে। কাজেই চুপ থাকেন। মিথ্যে সান্ত্বনা কেন দিচ্ছেন নিজ দলের নেতাকর্মীদেরকে। ওদেরকে জাতীয় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে বলেন। সারাক্ষণ কথার ফুলঝুরি! বন্ধ করুন এসব। প্রবাদটি হল, “শুধু কথা দিয়ে চুলায় রুটি ওঠানো যায় না।"

মনে প্রাণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শক্ত প্রতিপক্ষ প্রত্যাশা করে। যারা দেশের মানুষের জন্য চিন্তা করবে আর নীতি প্রণয়ন করবে। কিন্তু আমরা তো গেল পনের বছরে বিএনপির পক্ষ থেকে জনস্বার্থে কোন সত্যিকারের লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দেখি নাই।

লেখিকা এডিথ ওয়ারটনের ভাষায় বলতে চাই, “আলো ছড়ানোর দু’টি উপায় আছে। এক – নিজে মোমবাতি হয়ে জ্বলো, দুই – আয়নার মত আলোকে প্রতিফলিত করো”। অর্থাৎ আলোর সংকটে এই বিএনপি। তাঁদের দলের মধ্যকার আমূল সংস্কার না করতে পারলে এই দলের রাজনৈতিক কোন ভবিষ্যৎ দেখি না। তাই বলছি, “যারা নতুন কিছু খোঁজে না, একদিন তাদেরও কেউ খুঁজবে না”।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এইচআর/জিকেএস

এই তো সেদিন রাত করে আপনি ও আপনারা দেখা করলেন। বেগম জিয়ার সাথে। কাজেই চুপ থাকেন। মিথ্যে সান্ত্বনা কেন দিচ্ছেন নিজ দলের নেতাকর্মীদেরকে। ওদেরকে জাতীয় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে বলেন। সারাক্ষণ কথার ফুলঝুরি! বন্ধ করুন এসব। প্রবাদটি হল, “শুধু কথা দিয়ে চুলায় রুটি ওঠানো যায় না।"

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।