সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিন

মাহমুদ আহমদ
মাহমুদ আহমদ মাহমুদ আহমদ , ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
প্রকাশিত: ১০:০৭ এএম, ০২ মে ২০২২

আজ পবিত্র মাহে রমজানের ত্রিশতম দিন। গতকাল দেশের আকাশে কোথাও শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি, তাই এবার ত্রিশ রোজা পূর্ণ হচ্ছে। একমাস সিয়াম সাধনার পর আগামীকাল (৩ মে) ইনশাল্লাহ আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করব। অনাবিল আনন্দ ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় এ ঈদুল ফিতর। এ ঈদ মুসলিমদের জাতীয় উৎসব। বিশ্ববাসীর মাঝে যে আনন্দ বার বার ফিরে আসে তাকেই ঈদ বলা হয়।

মুসলিম জাহান সিয়াম-সাধনা এবং ত্যাগের মধ্য দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে অতীতের ভুল-ভ্রান্তির ক্ষমা চেয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলার অঙ্গীকারে প্রত্যয়ী হওয়ার এক সফল অনুষ্ঠান এ পবিত্র ঈদ। বর্তমান ঈদকে কেবল ধর্মীয় কিংবা সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচনা করা হয় না বরং ঈদ আজ সার্বজনীন আনন্দের নাম। সামাজিক উৎসবগুলোয় আমরা যেমন আনন্দে মাতি, তেমনি প্রত্যেক ধর্মেই রয়েছে বিশেষ কিছু উৎসবমুখর দিন। সেই উৎসবগুলোও আমাদের আনন্দে ভাসায়। ব্যবধান ঘুচিয়ে এক করে। আমাদের বাংলাদেশেও রয়েছে নানা ধর্ম, গোত্রের মানুষের বাস।

ঈদ, পূজা, বড়দিন, বুদ্ধপূর্ণিমা, বৈসাবি, রাস পূর্ণিমা প্রভৃতি বিশেষ দিনে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। এসব ধর্মীয় উৎসব বৃহৎ অর্থে সামাজিক জীবনাচারেরই অনুষঙ্গ। এসব উৎসব উদযাপিত হয় সমাজের মধ্যেই। প্রতিটি উৎসব আমাদেরকে একতা, ঐক্য, বড় ও মহৎ হতে শেখায়। ঈদের আনন্দে দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের সাথে ভাগ করার মাঝেই সর্বাঙ্গীন কল্যাণ।

ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহকে সাম্য, মৈত্রী, ঐক্য এবং ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ শিক্ষা দেয়। এভাবে ঈদুল ফিতরের উৎসব ইসলামী জীবন পদ্ধতির ভিত্তিতে একটি বিশ্বজনীন নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে থাকে। এ আনন্দের দিনে প্রতিটি মুসলিম তার সামাজিক অবস্থান ভুলে যায় এবং ভ্রাতৃত্ববোধের পর তৃপ্তিতে একে অপরকে আলিঙ্গন করে। পার্থক্য থাকে না ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সবল-দুর্বল, বংশ গৌরব, কৌলিন্য ও মান-মর্যাদা। ঈদগাহে সারিবদ্ধভাবে জামাতের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দু’ই রাকাত ওয়াজিব নামায আদায়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষেই সাম্যের অতুলনীয় বাস্তব দৃশ্যের চিত্র ফুটে ওঠে।

মুসলমানের জন্য ঈদ একটি মহা ইবাদতও। ঈদের ইবাদতে শরীয়ত নির্দেশিত কিছু বিধি-বিধান রয়েছে, যা পালনে সামাজিক জীবনে পারস্পরিক আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও বন্ধন সুসংহত হয়। ঈদুল ফিতরের শরীয়ত দিক হলো, ঈদের নামাযের পূর্বে রোযার ফিতরানা ও ফিদিয়া আদায় করা, ঈদ গাহে দু’ রাকাত নামায আদায় করা, খুতবা শুনা এবং উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করা। ঈদে আমাদের দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি ঘটে আর পরস্পরের মাঝে ঈমানী ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয় এবং নিজেদের মাঝে হিংসা বিদ্বেষ দূর হয়ে এক স্বগীর্য় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যদি এমনটা হয় তাহলেই আমাদের এ ঈদ পালন ইবাদতে গণ্য হবে।

সুনানে ইব্ন মাজাহ গ্রন্থে ঈদের ফজিলত সম্পর্কে এসেছে, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে ইবাদত করবে তার অন্তরকে আল্লাহতায়ালা রহমত ও বরকতের বারিধারা দিয়ে পরিপূর্ণ করে দেবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ)

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ঈদের দিন আল্লাহ তা’লা ফেরেশতাদের বলেন, তারা আমার ফরজ আদায় করে প্রার্থনার জন্য বের হয়েছে। আমার মর্যাদা বড়ত্ব ও সম্মানের কসম! আমি অবশ্যই তাদের প্রার্থনা কবুল করবো। তারপর আল্লাহ বান্দাদের উদ্দেশ করে বলেন, ফিরে যাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। তোমাদের পাপগুলোকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছি। এরপর সবাই ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। (বায়হাকির সূত্রে মেশকাত, অধ্যায়: হায়াতুল মুসলিমিন, পৃ: ২৪৯)।

ঈদের উৎসবে একটু আনন্দের মধ্যে থাকা, খেলাধুলা করা বা উপভোগ করার শিক্ষা আমরা নবীজির জীবন থেকে পাই। আয়েশা (রা.) বলেন, এক ঈদের দিন হজরত আবু বকর (রা.) আমার ঘরে এলেন। সেখানে তখন দু’জন মেয়ে বুআস যুদ্ধের গান গাইছিল। তারা গায়িকা ছিল না। হজরত আবু বকর (রা.) ওই মেয়ে দুটোকে শক্ত ধমক দিয়ে বললেন, শয়তানি বাদ্য! তাও রাসুলের ঘরে! রাসুল (সা.) বললেন, আবু বকর! ওদের ছেড়ে দাও। প্রতিটি জাতিরই ঈদ ও খুশির দিন থাকে। আজ আমাদের ঈদের দিন। (সহিহ বুখারি)।

আল্লাহ্ তা’লার আদেশে এক মাস রোজা রাখার পর তার আদেশেই আমরা ঈদের আনন্দ উদযাপন করি। এক মাস রোজা আমরা আমাদের তাকওয়াকে ও ঈমানকে বাড়ানোর জন্য রেখেছি। আমরা রমজানের রোজা এজন্যই রেখেছি, যেন আল্লাহপাকের নৈকট্য অর্জনকারী হতে পারি। এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আল্লাহ্ তা’লা আমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন ঈদ উদযাপন করার। প্রত্যেক বৈধ কাজ যা থেকে তিনি আমাদেরকে এক নির্ধারিত সময় বিরত রেখেছিলেন আজ ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে তা করার অনুমতি দিয়েছেন।

ঈদ উদযাপন মূলত আল্লাহ্ তা’লার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন আর কৃতজ্ঞতার সর্বোত্তম পন্থা হলো, ধনী-গরীব সবাই একত্রিত হয়ে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা। একমাস রোজা রাখার যে তৌফিক আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন এরই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এ দুই রাকাত নামাজ। তাই বলা যায়, ঈদ কেবল ভাল খাওয়ার বা ভাল পরার আর বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ ভ্রমণ করার নাম নয় বরং কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য একটা বিশেষ সুযোগ হিসেবে আল্লাহ্ তা’লা আমাদেরকে ঈদ দান করেছেন।

আমরা যে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমাদেরকে সর্বদা এটিও স্মরণ রাখতে হবে যে, শুধু আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে না থেকে আল্লাহপাকের ইবাদতের প্রতিও যেন দৃষ্টি থাকে। আমাদের চিন্তা চেতনায় যে বিষয়টি জাগ্রত রাখা উচিত, তাহল নেকি ও তাকওয়াকে প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলন করা, আর এটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। এ শিক্ষাই আমাদেরকে রমজানের রোজা আর ঈদ দেয়। দু’টিই আমাদেরকে আনুগত্যের শিক্ষা দেয়। আমরা যখন পুরোপুরি স্থায়ীভাবে আমাদের গরীব ভাইদের অভাব দূরীকরণের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবো তখনই এটা আমাদের প্রকৃত ঈদ উদযাপন হবে।

আমাদের এতে খুশি হওয়াও উচিত নয় যে, ঈদের দিনে গরীবদের সাময়িক খুশির উপকরণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি বরং যাদের সামর্থ্য আছে তারা যেন তাদেরকে স্থায়ী খুশির উপকরণের ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতি মনোযোগ নিবদ্ধ করে। দুই বছর ধরে মহামারি করোনার কারণে আয় রোজগার বন্ধ হয়ে অনেক সমস্যায় দিনাতিপাত করছেন। আমরা কি পারি না তাদের এই দুঃসময়ে সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করতে?

কার ধর্ম কী, এটা দেখার বিষয় নয়, মানব সেবাই হল পরম ধর্ম। এছাড়া একই উৎস থেকে আমাদের সবার সৃষ্টি। ঈদের এই আনন্দ তখনই সার্বজনীন রূপ লাভ করতে পারে যখন সমাজ ও দেশের সবাই একত্রে আনন্দের ভাগী হব। আমাদের সন্তানদেরকেও ঈদের এ মাহেন্দ্র্যক্ষণে গরীবদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের শিক্ষা দিতে হবে। ঈদের যে উপহার তাদেরকে দেয়া হয়, তা থেকে যেন তারা একটা অংশ গরীবদের জন্য পৃথক করে নেয়। তারা যেন শুধু নিজেদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতিই খেয়াল না রাখে, নিজেরাই যেন ভাল খাবার ইত্যাদি না খায় বরং গরীব, অসহায় যারা রয়েছে তাদের প্রতিও যেন খেয়াল রাখে। এ শিক্ষা আমাদের প্রত্যেক অভিভাবককে দিতে হবে।

ঈদ যেহেতু কৃতজ্ঞতারই অপর নাম, তাই আমরা যদি ইসলামের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাই, আল্লাহর কৃতজ্ঞতার ক্ষেত্রে সাহাবিরা কতই না উন্নত মানে ছিলেন। হজরত আব্দুর রহমান বিন অউফ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি ব্যবসা বাণিজ্য আরম্ভ করেন, আর তার ব্যবসা এত লাভজনক প্রমাণিত হয় যে, তিনি নিজেই বলতেন, আমি যে বস্তুতেই হাত দিতাম আল্লাহ্ তা’লা তাতে এত বরকত রেখে দিতেন যা ছিল কল্পনাতীত। আমার স্পর্শে মাটি সোনা হয়ে যেত। তাকে আল্লাহ্ তা’লা অশেষ ধন ভাণ্ডার দিয়েছেন, কিন্তু সেই সম্পদ পাওয়ার পরও তার আচরণ কেমন ছিল? তা কি বস্তুবাদি মানুষের ন্যায় ছিল?

একদিন তিনি রোজা রেখেছিলেন। ইফতারির সময় যখন তার জন্য খাবারের বিছানা বিছানো হয় তখন সেখানে বিভিন্ন প্রকার খাবার দেখে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, আর ইসলামের প্রথম যুগের কথা স্মরণ করেন যখন দিনের পর দিন মানুষকে অনাহারে কাটাতে হতো, তখন তার নিজের অবস্থাও তেমনই ছিল। সেই সমস্ত সাহাবিদের কোরবানির কথা তার স্মরণ হয়, যখন যুদ্ধের ময়দানে তারা শহিদ হতেন তখন তাদের জন্য পর্যাপ্ত কাফনও ছিল না। আর যে চাদর ছিল তা এত ছোট যে, মাথা ঢাকলে পায়ে কোন সতর থাকতো না আর পা ঢাকলে মাথা খোলা পড়ে থাকতো।

সাহাবিদের দৃষ্টান্ত ছিল এমনই। এখন আমাদের মাঝে কয়জন এমন আছি যারা সাচ্ছন্দ আসার পর নিজেদের পূর্বের সময়কে এভাবে সচেতনতার সাথে স্মরণ করি? কয়জন আছি যারা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার চেতনা নিয়ে সাচ্ছন্দ্য লাভের পর সত্যিকার অর্থে তার ইবাদতের প্রতি মনোযোগ দেই এবং পূর্বের চেয়ে বেশি মনোযোগ নিবদ্ধ করি? যদি আমাদের জীবনের মান উন্নত হওয়া, আর্থিক সচ্ছলতা আসা আমাদেরকে খোদার কৃতজ্ঞ বান্দা এবং তার প্রকৃত ইবাদতকারী বান্দায় পরিণত না করে তাহলে আমাদের এই ঈদ উদযাপন করার কোন মূল্য নেই।

সাহাবিরা এই পৃথিবীতেই থাকতেন, এই সমাজেই ব্যবসা বাণিজ্য করতেন, কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে আল্লাহ ছিলেন সবার আগে, তাদের আচার আচরণে খোদা তা’লাই অগ্রাধিকার পেতেন। তাদের নামাজে, তাদের ইবাদতে বিশেষ পরিস্থিতি বিরাজ করতো। পরের উপকারের বিষয়টা তারা প্রথমে মাথায় রাখতেন।

আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একদিকে যেমন ইসলামি ঐতিহ্যের জয়গান গেয়েছেন, অপর দিকে মুসলমানদের ভ্রাতৃত্ববোধ বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। আবার ঈদের আনন্দকে সার্বজনীন হিসেবে তুলে ধরার জন্য লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। ‘ঈদ মোবারক’ কবিতায় তিনি তার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন এভাবে- শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো/কত বালুচরে কত আঁখি ধারা ঝরায়ে গো/বরষের পর আসিলে ঈদ!/ভুখারির দ্বারে সওগাত বয়ে রিজওয়ানের/কন্টক-বনে আশ্বাস এনে গুলবাগের.../আজি ইসলামের ডঙ্কা গরজে ভরি জাহান/নাই বড় ছোট-সকল মানুষ এক সমান/রাজা প্রজা নয় কারো কেহ-

তিনি ইসলামী সাম্যবাদী চেতনাকে সার্বজনীন রূপ দেবার চেষ্টা করেছেন তার বিভিন্ন কবিতায়। তার ‘নতুন চাঁদ’ কবিতায়ও বিষয়টি এভাবে ব্যক্ত করেছেন- সাম্যের রাহে আল্লাহর/মুয়াজ্জিনেরা ডাকিবে ফের.../রবে না ধর্ম জাতির ভেদ/রবে না আত্ম-কলহ ক্লেদ। এরপর ‘কৃষকের ঈদ’ পঙক্তিতে তিনি লিখেছেন- জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসে না নিদ/ মুমূর্ষু সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ?

ঈদকে নিয়ে কবি কায়কোবাদ ‘ঈদ আবাহন’ নামে একটি কবিতায় তার ঈদ অভিব্যক্তি এভাবে তুলে ধরেছেন- ‘এই ঈদ বিধাতার কি যে শুভ উদ্দেশ্য মহান, হয় সিদ্ধ, বুঝে না তা স্বার্থপর মানব সন্তান। এ ত নহে শুধু ভবে আনন্দ উৎসব ধূলা খেলা। এ শুধু জাতীয় পুণ্যমিলনের এক মহামেলা।’

ঈদের দিন যেভাবে ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে যায়, এক কাতারে সবাই নামাজ আদায় করি, সবার সাথে হাসি মুখে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি, ঠিক তেমনিভাবে সারাবছর একই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে আর বিভেদের সকল দেয়ালকে ভেঙ্গে ফেলতে হবে। কবি গোলাম মোস্তফা কতই চমৎকারভাবে তার এক কবিতায় বিষয়টি এভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন- ‘আজি সকল ধরা মাঝে বিরাট মানবতা মূর্তি লভিয়াছে হর্ষে, আজিকে প্রাণে প্রাণে যে ভাব জাগিয়েছে রাখিতে হবে সারা বর্ষে, এই ঈদ হোক আজি সফল ধন্য নিখিল-মানবের মিলন জন্য, শুভ যা জেগে থাক, অশুভ দূরে যাক খোদার শুভাশীষ স্পর্শে।’

হ্যা, আমরা এমনই কামনা করি, ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে আমাদের মাঝ থেকে সকল প্রকার অশুভ দূর হয়ে যাক। সবার মাঝে ভ্রাতৃত্বের মেল বন্ধন রচিত হোক। আসলে এ ঈদ ধর্মীয় বিধিবিধানের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস।

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে গরীব অসহায় সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে ঈদ উদযাপন করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

এইচআর/জেআইএম

ঈদের দিন যেভাবে ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে যায়, এক কাতারে সবাই নামাজ আদায় করি, সবার সাথে হাসি মুখে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি, ঠিক তেমনিভাবে সারাবছর একই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে আর বিভেদের সকল দেয়ালকে ভেঙ্গে ফেলতে হবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।